ফ্রেমে ফ্রেমে স্মৃতি

ফটোফ্রেমে থাকুক রঙিন স্মৃতিগুলো। ছবি: নকশা
ফটোফ্রেমে থাকুক রঙিন স্মৃতিগুলো। ছবি: নকশা

সময়কে ধরে রাখে ছবি। আর ছবিকে ধরে রাখে ফটোফ্রেম। ফ্রেমবন্দী হয়ে ঘরের দেয়ালে, কোনের টেবিলে, শোবার ঘরে বিছানার পাশে, বসার ঘরে, করিডরে, প্রশস্ত দেয়ালজুড়ে অপলক তাকিয়ে থাকে কদিন আগে ঘটে যাওয়া কোনো ঘটনা।
বছরখানেক আগে বিয়ে করেছেন শিক্ষক রেবা হাফিজ। তিনি বলেন, সময়কে বেঁধে রাখা যায় না। কিন্তু সময়ের বিশেষ মুহূর্তের ছবি আজীবনের জন্য আটকে রাখা যায় ফ্রেমের বাঁধনে। ঘরময় তাঁর বিয়ের ছবিগুলো যেন সে কথাই বলছে। ছবিগুলো তাঁকে কখনো হাসাচ্ছে আবার কখনো কাঁদাচ্ছেও।
মানুষ স্বভাবতই বিয়ের সময়টাকে বেশি করে বাঁধতে চায় ফটোফ্রেম বা ফটোস্ট্যান্ডে। বিয়ে যে জীবনের এক মধুরতম সময়। আজীবন স্মরণ করতে সেই সময়ে তোলা ছবিগুলোকে চোখের সামনে রাখা চাই-ই চাই। এ জন্য চাই জুতসই ফটোফ্রেম।
কেমন ফ্রেমে বিয়ের ছবিগুলো রাখা যেতে পারে? কোন ধরনের ফ্রেম ঠিক মানানসই হবে লাজরাঙা বধূ বা বরের ছবি? কোন কোন মুহূর্তের ছবিগুলো কোন কোন ধরনের ফ্রেমে রাখলে ঘর, বারান্দা, করিডরে ঠিক মানিয়ে যাবে? এসব জানাও যেন জরুরি স্মৃতিকাতর বর–বউয়ের জন্য।
এ প্রসঙ্গে অন্দরসজ্জাবিদ গুলশান নাসরিন চৌধুরী জানান, ফটোফ্রেম যেমন ছবিকে বাঁধে, তেমনি মনকে রাঙিয়ে ঘরেও সৌন্দর্য আনে। তাই যত্রতত্র যা তা ফ্রেমে ছবি রেখে ঘর ভরালেই চলবে না। বিয়ের স্মৃতিময় ছবিগুলো রাখতে হবে পছন্দসই কিন্তু চারপাশের সবকিছুর সঙ্গে মানিয়ে যাবে এমন সব ফ্রেমে। বিয়ের দিনের বর-বধূর যৌথ ছবিগুলো সোনালি রঙের মেটাল ফ্রেমে রাখলে ছবিগুলোর যেন যথাযথ হয়। বরের আলাদা ছবি রুপালি রঙের মেটালের ফ্রেমে এবং বধূর সোনালি বা কপার রঙের মেটাল ফ্রেমে রাখলে ভালো লাগবে।
হলুদদিনের, বউভাতের কিংবা বাগদানের ছবি রাখতে বেছে নেওয়া যেতে পারে বাহারি রঙের কাপড়ের কাঁথা স্টিচের, জামদানি কাপড়ের, বাঁশ, বেত, কাঠ, কাগজ, চট বা চামড়ায় তৈরি নান্দনিক ফটোফ্রেমগুলো। এসব দিনগুলোর ছবি রাখার জন্য নির্দিষ্ট কোনো রঙের বা ধরনের প্রয়োজন নেই। পছন্দমতো রঙের পছন্দের উপাদানে তৈরি ছবির প্রেম ফটোফ্রেমে বেঁধে ফেলা যাবে বিয়ের বিশেষ মুহূর্তের যেকোনো ছবি।
ছবি যদি হয় পরিবারের সব সদস্যের, তবে সেই ছবির জন্য পাতলা বোর্ড দিয়ে বানানো যেতে পারে গাছের মতো একটি বড় ফ্রেম। গাছটির নিচের শিকড়ে থাকতে পারে দাদা–দাদি বা নানা নানির ছবি। গাছের বড় দুটি ডালে মা বাবার ছবি আর পাতার মতো ছড়িয়ে–ছিটিয়ে রাখা যেতে পারে ভাইবোনদের ছবি। এ ছাড়া ক্রিস্টাল বা বেতের ফ্রেমেও রাখা যেতে পারে পরিবারের সদস্যদের ঘুরে বেড়ানো সময়ের আনন্দ লেগে থাকা ছবিগুলো।
গুলশান নাসরিন চৌধুরী বলেন, বোর্ড, বেত, কাঠ বা শীতলপাটি দিয়ে বানানো যেতে পারে লুডু খেলার কোর্ট। তার ফাঁকে ফাঁকে সাজানো থাকবে স্মৃতিময় ছবিগুলো। করিডর বা সিঁড়ির পাশে বেশ ভালো লাগবে দেখতে। পরিবারের কনিষ্ঠ সন্তান বা ছোটদের ছবি রাখার বেলায় কার্টুন ফ্রেমগুলো বেছে নিলে ভালো হবে। এ ক্ষেত্রে স্পাইডারম্যান, ব্যাটসম্যান, প্রজাপতি, রংধনু, মেঘ, গাড়ি, বাড়ি ইত্যাদিও আদলের ফ্রেমে ছবি রাখলে শিশুটিও আনন্দ পাবে আবার দেখতেও ভালো লাগবে। আবার ফ্রেমে ভিন্নতা আনতে বানিয়ে নেওয়া যাবে একটা বাসের কাঠামো। বাসের প্রতিটা জানালায় শিশুর বিশেষ বিশেষ ছবি এঁটে দিলে বেশ নান্দনিক দেখাবে।