ফ্যাশনের চমকে

ট্রেসেমের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে তিন দিনই মঞ্চে হাঁটেন জান্নাতুল পিয়া,শাহরুখ আমিনের নকশা, মারিয়া সুলতানার ডিজাইন
ট্রেসেমের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে তিন দিনই মঞ্চে হাঁটেন জান্নাতুল পিয়া,শাহরুখ আমিনের নকশা, মারিয়া সুলতানার ডিজাইন

১০ দেশ, ৩০ জন ডিজাইনার, ৭১ জন মডেল আর ৩ জন রূপসজ্জাকর। এই নিয়েই শেষ হলো উজ্জ্বল জমকালো ফ্যাশন আয়োজন। এ আয়োজনের নাম ট্রেসেমে বাংলাদেশ ফ্যাশন উইক ২০১৯। প্রথমবারের মতো দেশি ফ্যাশনের সবচেয়ে বড় এই আয়োজন করে ফ্যাশন ডিজাইন কাউন্সিল অব বাংলাদেশ (এফডিসিবি) ও ইউনিলিভারের হেয়ার কেয়ার ব্র্যান্ড ট্রেসেমে।

রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার ১ নম্বর হলে ২৩ থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রতিদিন সন্ধ্যায় বসে ফ্যাশন ডিজাইনারদের এই মিলনমেলা। ফ্যাশন শোতে তুলে ধরা পোশাকের সবই ছিল পরিবেশবান্ধব। যেখানে জোর দেওয়া হয় আবহাওয়া ও পরিবেশ উপযোগী কাপড়ের দিকে।

তিন দিনে মোট ৩৬টি ফ্যাশন কিউয়ের মধ্যে তিনটি কিউতে দেখানো হয় চুলের সাজ। ট্রসেমের সৌজন্যে চুলের এই বিশেষ স্টাইল করে দেখান কানিজ আলমাস খান, ফারজানা শাকিল ও আফরোজা পারভীন।

শেষ দিন দেখা যায় ডিজাইনার এমদাদ হকের নকশা করা পোশাক। ছবি: সাইফুল ইসলাম
শেষ দিন দেখা যায় ডিজাইনার এমদাদ হকের নকশা করা পোশাক। ছবি: সাইফুল ইসলাম

বাকি ৩৩টি কিউতে ফ্যাশন রানওয়ে মাতায় দেশ-বিদেশের ডিজাইনারদের পোশাক। যেখানে শাড়ি, কামিজ, টপ, গাউন, জ্যাকেট, পাঞ্জাবি, টি-শার্ট, নানা রকম প্যান্ট, শার্ট, স্কার্ট, সারারা, জাম্পস্যুট ইত্যাদি পোশাক তুলে ধরেন মডেলরা। সুতি, লিনেন, খাদি, জামদানি, মসলিনের মতো কাপড়ে তৈরি এসব পোশাকের ওপর দেখা যায় নানা রকম নকশা ও বার্তা। থিম হিসেবে কেউ বেছে নেন মোগল আমলের স্থাপনা, কেউ ছেলেবেলার স্মৃতি, কারও নকশা চিত্রকর্ম ধরে, কারও আবার রংধনু। যেমন বিচিত্র থিম, তেমন বিচিত্র নকশা। সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ছড়িয়ে পড়ার মতো ফ্যাশন।

বাংলাদেশের ডিজাইনার হিসেবে ফ্যাশন শোতে অংশ নেন মাহিন খান, কুহু প্লামন্দোন, এমদাদ হক, চন্দনা দেওয়ান, মারিয়া সুলতানা, রিফাত রহমান, শৈবাল সাহা, তাসফিয়া আহমেদ, রুপো শামস, ফাইজা আহমেদ, আফসানা ফেরদৌসি, শাহরুখ আমিন, ফারাহ আনজুম বারি, লিপি খন্দকার, মুসাররাত রহমান, ইজমাত নাজ, সাদিয়া মিশু, সারাহ করিম, রিফাত রেজা ও হুমায়রা খান।

মিলিটারি ফ্যাশন তুলে ধরেন ইজমাত নাজ,মোগল ঐতিহ্যে মাহিন খানের পোশাক,আফসানা ফেরদৌসির নকশায়,ছেলেদের পোশাকও ছিল নজরকাড়া, কুহুর ফুলেল নকশা
মিলিটারি ফ্যাশন তুলে ধরেন ইজমাত নাজ,মোগল ঐতিহ্যে মাহিন খানের পোশাক,আফসানা ফেরদৌসির নকশায়,ছেলেদের পোশাকও ছিল নজরকাড়া, কুহুর ফুলেল নকশা

এ ছাড়া বিদেশি ডিজাইনার হিসেবে ফ্যাশন শোতে অংশ নেন শ্রীলঙ্কার কাঞ্চনা থালপাওইলা, ভুটানের কেঞ্চ ওয়াংমা, নেপালের আনু শ্রেষ্ঠা, থাইল্যান্ডের সুকাজিত দায়েংচাই, পাকিস্তানের ফাইজা সামি, ভারতের কল্লোল দত্ত, স্বাতি কালশি ও পারমিতা ব্যানার্জি এবং ইন্দোনেশিয়ার মেরডি সিহোমবিং, মালদ্বীপের আয়েশাত সামলা।

ময়ূর থিমে সারাহ করিমের সংগ্রহ
ময়ূর থিমে সারাহ করিমের সংগ্রহ

ফ্যাশন শোতে দেখানো পোশাকগুলো নিয়ে ১ ও ২ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় ফ্যাশন ফেয়ার। গুলশান ২–এর গার্ডেনিয়া রেস্তোরাঁয় অনুষ্ঠিত এই মেলায় ক্রেতারা পছন্দমতো পোশাক কিনে নেন।

পুরো আয়োজন নিয়ে এফডিসিবির সভাপতি মাহিন খান বলেন, ‘খুব ভালো লেগেছে। আমার তো মনে হয় আমরা যতটা আশা করেছিলাম, তার চেয়েও ভালো হয়েছে পুরো আয়োজন। প্রত্যেক ডিজাইনার নিজের সেরা কাজটা করেছেন। দেশি ডিজাইনাররা নিজেদের কাপড় আর ঐতিহ্যকে যেভাবে তুলে ধরেছেন এই সময়ের পোশাকে, সেটা অসাধারণ। ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে এই আয়োজন করতে চাই।’