বৃষ্টিতে উচ্ছল জুড়ীর ঝরনা

জুড়ীর  বিষকরণকুণ্ড ঝরনা। ছবি: কল্যাণ প্রসূন
জুড়ীর বিষকরণকুণ্ড ঝরনা। ছবি: কল্যাণ প্রসূন

দুর্গম পাহাড়ি এলাকার বন। নানা প্রজাতির গাছগাছালিতে ভরা। হঠাৎ ছলছল শব্দ শোনা যায়। কাছে এগোতেই চোখে পড়ে পর পর দুটি ঝরনা। উঁচু পাথুরে পাহাড়ের গা বেয়ে প্রবল বেগে পানি নিচে আছড়ে পড়ছে। ঝরনা দুটির নাম বিষকরণকুণ্ড ও মামুরকুণ্ড।

শুকনো মৌসুম চলছে। এর মধ্যেই কদিন আগে হয়েছে বৃষ্টি। তাতেই প্রাণ পেয়েছে ঝরনাগুলো, জানালেন স্থানীয় ফরেস্ট ভিলেজাররা (বন জায়গিরদার)। মনোমুগ্ধকর এ দৃশ্য মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নে লাঠিটিলা সংরক্ষিত বনের। এটি বন বিভাগের জুড়ী রেঞ্জে পড়েছে।

গতকাল সোমবার সকালে দেখা গেছে, দুটি কুণ্ডেই ২০ থেকে ২৫ ফুট উঁচু থেকে পানি পড়ছে। পানির স্রোতোধারা কাটানালা নামের একটি পাহাড়ি ছড়ায় গিয়ে মিশেছে। সেখানে মানুষের আনাগোনা নেই।

মামুরকুণ্ড ঝরনায় পানির স্রোতোধারা। ছবি: কল্যাণ প্রসূন
মামুরকুণ্ড ঝরনায় পানির স্রোতোধারা। ছবি: কল্যাণ প্রসূন

স্থানীয় ডোমাবাড়ী এলাকার বাসিন্দা পরিবেশকর্মী খোরশেদ আলম বললেন, ‘কয়েকবার দুটি ঝরনায় গেছি। শীত মৌসুমে সেখানে পানি থাকে না। দুই-তিন দিন বৃষ্টি হওয়ায় পানির দেখা মিলেছে।’

খোরশেদ আলমের ভাষ্য, ভরা বর্ষায় দুটি ঝরনা দেখতে আরও সুন্দর লাগে। লাঠিটিলা বনে মায়া হরিণ, মেছোবাঘ, অজগর, বনমোরগসহ বিভিন্ন প্রজাতির বন্য প্রাণী রয়েছে। কখনো সেগুলোর দেখাও মিলে।

ঝরনার পানিতে এক পর্যটক। ছবি:  কল্যাণ প্রসূন
ঝরনার পানিতে এক পর্যটক। ছবি: কল্যাণ প্রসূন

ঝরনা দুটি দেখতে হলে: দেশের যেকোনো স্থান থেকে ট্রেনে করে কুলাউড়া জংশন স্টেশনে নামতে হবে। এরপর সেখান থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাড়া করে জুড়ীর লাঠিটিলা এলাকার ডোমাবাড়ী যেতে হবে। ভাড়া ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা নেবে। ডোমাবাড়ী থেকে চার থেকে পাঁচ কিলোমিটার হাঁটলেই দুটি ঝরনার দর্শন মিলবে। এ ছাড়া দেশের যেকোনো স্থান থেকে এনা, শ্যামলী ও রূপসী বাংলা পরিবহনের বাসে জুড়ী উপজেলা সদরের জাঙ্গিরাই চত্বরে নেমে সেখান থেকে অটোরিকশা ভাড়া করেও ডোমাবাড়ী পৌঁছানো যায়। ভাড়া ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা চাইতে পারে।