কীভাবে ধরে রাখবেন হাসিমুখ

হাসিমুখ কঠিন সময় পার করতে সহায়তা করে। ছবি: অধুনা
হাসিমুখ কঠিন সময় পার করতে সহায়তা করে। ছবি: অধুনা

হাসিমুখ আমাদের সবার প্রিয়। সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রাণখোলা হাসি দেখলে মন ভালো হয়ে যায়। হাসার জন্য আপনার অনেক কারণ থাকার প্রয়োজন নেই। একটি ছোট্ট অনুষঙ্গও হতে পারে হাসির জন্য যথেষ্ট। ক্লান্তিকর নাগরিক জীবনেও কীভাবে হাসিমুখে থাকা যায়, তেমন কিছু উপায় জেনে নিন। এ ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ফারজানা রহমান।

ইতিবাচক উপায়ে চিন্তা করুন
একটি অর্ধেক খালি গ্লাস, নাকি একটি অর্ধেক পূর্ণ গ্লাস? দুটি দৃষ্টিভঙ্গির দ্বিতীয়টি আশাবাদী মানুষের অভ্যাস। যে সমস্যার সমাধান আপনার হাতে নেই, সেটা নিয়ে অযথা মাথা না ঘামানোই উচিত। সঠিক বিষয়টি কী হতে পারে, সেটি নিয়ে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করুন। সহজ করে একটু হাসুন। দেখবেন চারপাশ পাল্টে যাচ্ছে আপনার চোখের সামনে।

সবকিছুর জন্য আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ হোন
সারা দিনে আপনি কতবার অন্যদের আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ দিয়েছেন? কতবার শব্দটি নিজে শুনেছেন? কৃতজ্ঞ হতে শিখুন। প্রতিদিন অন্যদের কাছ থেকে আমরা নানান ধরনের সহযোগিতা পাই। নির্দ্বিধায় তাঁদের কৃতজ্ঞতা জানান।

সময় করে শৈশবের গল্প মনে করুন
শৈশবের আপনি কেমন ছিলেন, মনে পড়ে? স্কুলের বন্ধুদের সঙ্গে টিফিন সময়ের আনন্দ, মায়ের বকুনি শেষে জাপটে ধরা, বাবার উষ্ণ আলিঙ্গন—এসবের স্মৃতি মনে আছে? কঠিন সময়েও শৈশবের ছোট্ট ছোট্ট অনুষঙ্গ আপনাকে মনের গভীর থেকে একধরনের ভালো লাগার অনুভূতি দিতে পারে। হাসিমুখ ধরে রাখার চমৎকার একটি পদ্ধতি এটি। এখনই একবার চেষ্টা করে দেখুন!

বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটান

আপনার চারপাশে ছড়িয়ে থাকা প্রিয় বন্ধুদের সান্নিধ্য আপনাকে অপার আনন্দ দিতে পারে। সুযোগ করে সপ্তাহে অন্তত এক দিন বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটান। অকারণে আড্ডায় মেতে উঠুন। প্রাণ খুলে হাসুন। এই হাসি আপনাকে উদ্দীপ্ত করবে।

এই মুহূর্তে বাঁচুন, ভবিষ্যৎ নিয়ে খুব বেশি ভাববেন না

আমরা ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করে হতাশ হই, শঙ্কায় থাকি। এখনই সেটা বন্ধ করুন। যে দুঃসময় আসেনি এখনো, সেটা নিয়ে চিন্তা করে নিজের মনকে ভারাক্রান্ত করে লাভ কী! এই মুহূর্তে বেঁচে থাকুন। প্রতিটি সময় উপভোগ করুন। আজকের সকালে আগামীকাল নিয়ে ভাবার প্রয়োজন নেই।

এগিয়ে চলতে হবে সম্মুখপানে

নানান ঘটনা আমাদের চলার পথকে কঠিন করে তোলে। কখনো থেমে পড়া যাবে না। আপনার হাসিমুখকে কখনো ম্লান হতে দেবেন না। ইতিবাচক চিন্তা আপনার পথ তৈরি করে দিতে বাধ্য। পথ চলার আনন্দ আপনার হাসিমুখকে উদ্ভাসিত রাখবে। এই নিশ্চয়তা আপনি নিজেই নিজেকে দিতে পারেন।

মুখ গোমড়া করে থাকা যাবে না

কখনো কখনো আমাদের হাসি চোখ–মুখ ছুঁয়ে গেলেও হৃদয়ে পৌঁছায় না। আমি বলছি না যে সবসময় আপনাকে মেকি হাসি ধরে রাখতে হবে। গবেষণায় দেখা গেছে, হাসার চেষ্টা আমাদের মনকে আনন্দিত করে। হাসির অভিনয়ও আমাদের সত্যিকারের হাসিখুশি থাকার সম্ভাবনা অবিশ্বাস্যভাবে বাড়িয়ে দেয়।

উন্মুক্ত রাখুন মনের সব দরজা-জানালা

নিজেকে সব আনন্দময় অনুভূতি গ্রহণের জন্য মেলে রাখুন। প্রাণ খুলে সব আনন্দ গ্রহণ করুন। জমিয়ে রাখুন নিজের হ্যাপিনেস স্টোরে। ক্ষমা করতে শিখুন নিজেকে ও অন্যদের। ঘৃণা জমিয়ে রাখবেন না কখনো। নিজেকে ভাসিয়ে দিন পৃথিবীর খোলা হাওয়ায়। দেখবেন, হাসিমুখ আপনার কাছ থেকে কখনোই দূরে যাবে না।