উজ্জ্বল উচ্ছল

লাল–সাদায় বৈশাখী পোশাক
লাল–সাদায় বৈশাখী পোশাক

মা–বাবার হাত ধরে গুটিগুটি পায়ে যখন পাকা বুড়িটা বৈশাখী মেলায় যায়, তখন কি নতুন জামা না হলে চলে? কিন্তু চারদিকে শুধু লাল আর সাদা রং। ওর যে আরও রং ভালো লাগে। থাকুক লাল-সাদা। সেই সঙ্গে আরও রং চাই পোশাকে। শিশুর এমন পোশাক কিনতে হলে বাজারে ঢুঁ মারতে হবে বৈশাখ আসার আগেই।

বৈশাখ এলে কানে বাজে ঢাক ঢাক গুড়গুড়। এখন তা শিশুর পোশাকেও দেখা যায়। ডিজাইনাররা এমন সব মোটিফ তুলে ধরেছেন শিশুর পোশাকে। শুধু কি তা-ই? রুই-কাতলা ছড়ার পঙ্‌ক্তি থেকে ছুটে পোশাকে ভেসে উঠেছে। শিশুর পোশাকে ফুটেছে ফুল। দুষ্টু মেয়ের খেলা দেখা যায়। অচিন পাখিও উড়ে বেড়ায়। নদীতে ভেসে যায় মাটির কলসি। এমন আরও দেশীয় ঐতিহ্যের মোটিফ শিশুর পোশাকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এবারের বৈশাখ সংগ্রহে। লাল ও সাদা রং তো বৈশাখের পরিচয় বহন করে। তবে শিশুদের জন্য এসব রঙের পাশাপাশি অন্যান্য রঙের মিশেলেও পোশাক প্রস্তুত করা হয়েছে। ভিন্নতা দেখা গেছে পোশাকের কাটেও। কিছু মজার মজার নকশা ও কাটের পোশাক পাওয়া যাবে ছেলেমেয়ে সবার জন্য। রাজধানীর বিভিন্ন ফ্যাশন হাউস ও পোশাক বাজার ঘুরে সে রকম ধারণাই পাওয়া গেল।

িশশুদের কাপড় হতে হবে আরামদায়ক
িশশুদের কাপড় হতে হবে আরামদায়ক

ফ্যাশন হাউস দেশালের ডিজাইনার ও স্বত্বাধিকারী ইশরাত জাহান বললেন, ‘শিশুরা যেন পরে আরাম পায় এমন পোশাকই তৈরি করা হয়। তারপর নকশার ভাবনা। এবার শিশুর পোশাকে আঁকা হয়েছে মাছ, পাখি, ফুল ইত্যাদি।’ খুব হালকা নকশা করা হয়েছে একদম সুতি কাপড়ে। শিশুদের জন্য সুতিই সেরা বলে মনে করেন ইশরাত জাহান। আর এমন সব মোটিফের নকশা করা হয়েছে, যেগুলো গল্প বলে। শিশুদের জন্য তো এটা বেশ মজার ব্যাপার, তাই না? এই যেমন একটা দুষ্ট মেয়ে একটা বিশাল হাতিকে খোঁচাচ্ছে!

পোশাকে থাকবে নানা ধরনের কাট। মডেল: আয়াজ, ফারিজা, জারা, তোড়া ও আয়ান, পোশাক: শৈশব ও দেশাল, ছবি: সুমন ইউসুফ
পোশাকে থাকবে নানা ধরনের কাট। মডেল: আয়াজ, ফারিজা, জারা, তোড়া ও আয়ান, পোশাক: শৈশব ও দেশাল, ছবি: সুমন ইউসুফ

পোশাকে লাল-সাদার সঙ্গে ব্যবহার করা হয়েছে অন্যান্য রং। গরমে শিশুদের জন্য হালকা বা উজ্জ্বল রং ভালো। মাঝেমধ্যে একটু গাঢ়তে গেলেও মন্দ না। ইশরাত জাহান বললেন, ‘লাল, হলুদ, সাদা বৈশাখ তথা গ্রীষ্মের রং। সেই সঙ্গে নীল পোশাকও আছে।’ কেমন নীল? যেটা পটচিত্রে দেখা যায়। আগে যেমন গ্রামের শিশুরা মাটি দিয়ে মাছ-পাখি বানিয়ে পানিতে নীল গুলিয়ে রং করত, সেই নীল রং। এটাও তো বাংলার ঐতিহ্য।

কাটছাঁটে ভিন্নতা দেখা গেছে শিশুর পোশাকে। ছেলেদের ফতুয়ায় যেমন ভিন্ন কাট, মেয়েদের টপসেও ভিন্নভাবে দেওয়া হয়েছে ফ্রিল বা ফ্লেয়ার। টি–শার্ট, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, স্কার্ট, সালোয়ার-কামিজ, ফ্রকের পাশাপাশি বাচ্চাদের লেহেঙ্গা ও শাড়িও আছে! স্কার্টের মতো তৈরি করা শাড়ি খুব সহজেই পরানো যায়। বাচ্চারাও সুন্দর করে সামলাতে পারবে ওই শাড়ি। স্কার্টের সঙ্গে টপসের পিঠ খানিকটা খোলামেলা। বাচ্চারা যেন গরমে হাঁপিয়ে না যায়, সেদিকটা ডিজাইনাররা খেয়াল রেখেছেন। যেহেতু সুতি কাপড়ে শিশুদের পোশাক তৈরি করা হয়েছে, তাই দামটাও আকাশতুল্য নয়। বাজেট করতে পারেন পাঁচ শ থেকে শুরু করে বড়জোর দু–তিন হাজার টাকা পর্যন্ত।