চুল তার কবেকার!

চুল
চুল

নির্জন বন। বনের মধ্যে একটা উঁচু লম্বা স্তম্ভের ওপর ছোট্ট একটা ঘর। সেই ঘরে বন্দী এক রাজকন্যা। মায়াবি চোখ। সোনারঙা চুল। আর সেই চুল ৭০ ফুট লম্বা। ঘরের জানালা দিয়ে চুল ছেড়ে দিয়ে মেলে ধরলে সেটি এসে পড়ে মাটি ছুঁই-ছুঁই উচ্চতায়!কিন্তু এ তো রূপকথার গল্প। বাস্তবে কি কারও চুল এত লম্বা হতে পারে? পারে! ঠিক ৭০ ফুট না হলেও আশা ম্যান্ডেলা নামের এক নারীর চুলের দৈর্ঘ্য ৫৫ ফুট! শুধু চুলেরই ওজন প্রায় ১৮ কেজি! বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা চুলের মালিক হিসেবে গিনেসের বিশ্ব রেকর্ডে নাম আছে তাঁর।যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টার বাসিন্দা ৪৭ বছর বয়সী ম্যান্ডেলা ২০ বছর বয়স থেকে চুল বড় করা শুরু করেন। এরপর তাঁর জীবনে অনেক কিছুই হয়েছে—বেশ কয়েকবার হার্ট অ্যাটাক, ক্যানসার ধরা পড়া ও দুবার স্ট্রোক। কিন্তু কিছুতেই নিজের চুলে কাঁচি চালাননি। নিজের জীবনের খোলনলচে পাল্টে ফেলতে আরাধনার অংশ হিসেবেই চুল আর না কাটার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। ‘আমি আমার চুল বড় করা শুরু করি ২৫ বছর আগে, তখন আমার নির্দিষ্ট কিছু লক্ষ্য আর স্বপ্ন ছিল।’ বলেন ম্যান্ডেলা।ত্রিনিদাদ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানো ম্যান্ডেলার পরিবার শুরুর দিকে মানতে পারেনি তাঁর এই সিদ্ধান্ত। এ ছাড়া তাঁকে পেরোতে হয়েছে অনেক প্রতিকূলতা। চুলের অনেক যত্নও নিতে হয় তাঁকে। সপ্তাহে এক দিন চুল ধুয়ে থাকেন। সেই ধোয়ার কাজটি যে কত ঝক্কির, তা অনুমান করে নেওয়া যায়। দুই দিন সময় লাগে কেবল চুল শুকাতে। চুলের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে ব্যবহার করেন প্রাকৃতিক তেল।নব্বইয়ের দশকে এই চুল হারিয়ে ফেলার শঙ্কায় পড়েছিলেন। ক্যানসার ধরা পড়েছিল তাঁর। নিতে হয়েছিল কেমোথেরাপি। তখন আশঙ্কা করেছিলেন, কেমোর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় চুলগুলো হয়তো টুপটুপ করে ঝরে পড়বে। কিন্তু ভাগ্যটা ভালোই ছিল তাঁর।ম্যান্ডেলার চুল কিন্তু একটা সময় জট বেঁধে গিয়েছিল। এ ধরনের চুলের ধরনটাই এমন। ২০০৯ সালে জটপাকানো চুলের ওপর বিশেষজ্ঞ একজন হেয়ার এক্সপার্ট তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন। ১২ ঘণ্টার অক্লান্ত পরিশ্রমে এই জট খোলা হয়। তখনই বোঝা যায়, কত লম্বা হয়েছে তাঁর চুল! ২০০৮ সালেই গিনেসের রেকর্ডের পাতায় নাম লিখে ফেলেন তিনি। যদিও বিশ্ব রেকর্ডে লেখা আছে তাঁর চুলের দৈর্ঘ্য সাড়ে ১৯ ফুট, কিন্তু গত সপ্তাহে তাঁর সবচেয়ে দীর্ঘ চুলটি মেপে দেখা যায়, সেটির দৈর্ঘ্য ৫৫ ফুট ইঞ্চি, যেটি তাঁর অফিশিয়াল রেকর্ডের প্রায় তিন গুণ!

সূত্র: ডেইলি মেইল