মধ্যবয়সী নারীদের অতিরিক্ত ঘাম

মধ্যবয়সী নারীদের অনেকে প্রায়ই অতিরিক্ত গরম ও ঘামের কারণে অস্থির হয়ে পড়েন। রান্নাঘরে গেলে অসহ্য লাগে, চুলার ধারে তো যেতেই পারেন না। দিনে দুবার-তিনবার গোসল করতে হয়। অতিরিক্ত ঘামের কারণগুলোর একটা বড় অংশ নারীদেরই বেশি হয়। যেমন: হাইপারথাইরয়েডিজম বা থাইরয়েড হরমোনের আধিক্য। তবে এর সঙ্গে বুক ধড়ফড়, ওজন কমা, ডায়রিয়া, মাসিকের অনিয়ম ইত্যাদিও থাকতে পারে। আবার হট ফ্ল্যাশ যে সব সময় মেনোপজ হওয়ার আগেই হবে, এমন কোনো কথা নেই। মেনোপজের আগের দু-এক বছরের মধ্যে ইস্ট্রোজেন হরমোনের মাত্রা কমতে শুরু করে, তখন থেকে শুরু হতে পারে হট ফ্ল্যাশের উপসর্গ। হঠাৎ গরম লাগা, কান-মুখ গরম হয়ে ওঠা, ঘামতে থাকা আবার নিজে নিজে ঠিক হয়ে যাওয়া, মেজাজ খিটখিটে হওয়া—এসব হট ফ্ল্যাশের লক্ষণ। স্ট্রেস বা উদ্বেগও অতিরিক্ত ঘামের জন্য দায়ী। কিছু ওষুধ অতিরিক্ত ঘাম তৈরি করতে পারে। ডায়াবেটিসের রোগীদের হঠাৎ শর্করা কমে গেলে ঘাম হতে পারে।

জীবনযাপনে কিছু সাধারণ পরিবর্তন আপনাকে কিছুটা আরাম দিতে পারে।

• কফি, ক্যাফেইনযুক্ত পানীয়, মসলা ও ঝালযুক্ত খাবার গরম লাগা ও ঘাম আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। এগুলো এড়িয়ে চলুন।

• প্রতিদিন শাওয়ার করুন। হালকা ক্ষারযুক্ত সাবান ব্যবহার করবেন। অতিরিক্ত ঘেমে গেলে আবার গোসল করতে ইচ্ছে করলে করুন। ভালো হয় যদি সব কাজকর্ম সেরে গোসল করে শুকনো হয়ে তারপর ঘুমান।

• প্রচুর পানি পান করুন। এটি ডিহাইড্রেশন দূর করবে এবং বেশি ঘামের কারণে খারাপ লাগাও কমবে।

• পাতলা আরামদায়ক ঢিলে পোশাক পরুন গরমের দিনে। হালকা রঙের পোশাকে গরম কম লাগে। ভারী ও গাঢ় রঙের কাপড় পরিহার করুন। এমন জামা পরুন, যাতে বাতাস চলাচল করে।

• যোগব্যায়াম, মেডিটেশন, ব্রিদিং এক্সারসাইজ ইত্যাদি স্ট্রেস কমায়। এতে ঘামের সমস্যাও কমে।

• যারা বাইরে কাজে গিয়ে অতিরিক্ত ঘামের কারণে বিব্রত হন, তাঁরা ভালো মানের অ্যান্টিপারসপিরেন্ট ব্যবহার করুন ও সঙ্গেই রাখুন।

• অনেকের পা খুব ঘামে। খোলা স্যান্ডেল পরুন। মোজা পরলে হালকা সুতির মোজা পরুন। পায়েও অ্যান্টিপারসপিরেন্ট ব্যবহার করা যায়।

• জানালা খুলে বাতাস চলাচলের সুযোগ রাখুন। রান্নাঘরে এগজোস্ট ফ্যান ব্যবহার করুন, যাতে গরম বাতাস বেরিয়ে যেতে পারে।

• ওজন নিয়ন্ত্রণ করুন। যাঁরা স্থূল, তাঁদের ঘাম বেশি হয়।

• হট ফ্ল্যাশের চিকিৎসা আছে। হরমোনবিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করে হরমোনথেরাপি নিতে পারেন।

মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, ইব্রাহিম জেনারেল হাসপাতাল, মিরপুর, ঢাকা

 আগামীকাল পড়ুন: রক্তের রোগ হিমোফিলিয়া

প্রশ্ন-ত্তর

প্রশ্ন: বয়স ২৭ বছর। প্রস্রাবের রং হলুদ। পানি বেশি খেলে সাদা হয়। আবার খুব বেশি পানি খেলে ঘন ঘন প্রস্রাব হয়। দিনে-রাতে প্রায় ৮-১০ বার প্রস্রাব হয়। করণীয় কী?

উত্তর: বেশি প্রস্রাব হওয়ার একটি বড় কারণ ডায়াবেটিস। এ ছাড়া প্রস্রাবে সংক্রমণ, উদ্বেগ, টেনশনের কারণেও এটা হতে পারে। আপনি প্রস্রাবের রুটিন কিছু পরীক্ষা ও রক্তে শর্করা পরীক্ষা করে নিন।

ডা. আফম হেলালউদ্দিন, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ