অনলাইন কথোপকথনে যে ১০ নিয়ম মেনে চলা উচিত

>শিষ্টাচার মানুষের কাছে নতুন কিছু নয়। ছোট থেকেই শুনে অভ্যস্ত কার সঙ্গে কীভাবে কথা বলা উচিত, কীভাবে নয়। তবু অনলাইনে এলেই সব গুলিয়ে ফেলেন অনেকে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা মেসেঞ্জারের মতো তাৎক্ষণিক বার্তা আদান-প্রদানের অ্যাপে। এ ধরনের সেবাগুলোতে কথোপকথনের নানা মাধ্যম আছে। লিখে লিখে যোগাযোগ করা যায়, অডিও কল করা যায়, আবার ভিডিও কলের সুবিধাও আছে। মাধ্যম বুঝে তাই শিষ্টাচারের নিয়মগুলো মেনে চলা উচিত।

১. শুরুতে সংক্ষিপ্ত অভ্যর্থনা

যেকোনো আলোচনার শুরুতে হাই-হ্যালো–জাতীয় সংক্ষিপ্ত অভ্যর্থনা জানানো উচিত। এতে অপর পাশের মানুষ ব্যস্ত আছেন কি না, কিংবা কথোপকথনে তিনি আগ্রহী কি না, তা বুঝতে পারবেন।

২. নিজের পরিচয় দিন

ব্যক্তিগত পরিচয় ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কথোপকথন শুরু করা অযৌক্তিক। তবু যোগাযোগ করতেই হলে হুট করে আলোচনায় ঢুকে না গিয়ে শুরুতে নিজের পরিচয় দিন। দলীয় কথোপকথনের (গ্রুপ কনভারসেশন) বেলাতেও তাই।

৩. আলোচনা সংক্ষিপ্ত রাখুন

জবাব দিতে দীর্ঘ সময় ভাবতে হবে, এমন প্রশ্নের জন্য ই-মেইল বেশি উপযুক্ত। উপযুক্ত সময়ে মুঠোফোন বা টেলিফোনে কলও করা যেতে পারে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সারুন। তার মানে এই নয় যে সব সময় শব্দ সংকোচন ব্যবহার করবেন।

৪. মেসেঞ্জারে খারাপ সংবাদ নয়

তাৎক্ষণিক বার্তা আদান-প্রদানের সেবাগুলো ক্যাজুয়াল, মানে হালকা মেজাজের আলোচনার জন্য ব্যবহার করা হয়। মৃত্যু, চাকরিচ্যুতি বা খারাপ সংবাদ এ মাধ্যমে না দেওয়াই উচিত। জরুরি সংবাদের বেলাতেও সরাসরি দেখা করে বা কল করে জানান। সবাই সব সময় অনলাইনে বার্তার অপেক্ষায় না-ও থাকতে পারে।

৫. ইমোজি ব্যবহারে সচেতন হোন

অপর পাশের মানুষটির সঙ্গে আপনার সম্পর্ক কেমন, তা বুঝে আলোচনা চালিয়ে যান। কথোপকথনের ধাঁচও তেমনই হওয়া উচিত। বিশেষ করে, কার সঙ্গে কী ইমোজি ব্যবহার করা উচিত নয়, তা মাথায় রাখুন। আবার অনুপযুক্ত ইমোজি বিরক্তি তৈরি করতে পারে।

৬. ঘ্যান ঘ্যান করা যাবে না

মেসেঞ্জারের মতো অ্যাপগুলোতে হালকা মেজাজেই আলোচনা চলে। তাই বলে সবার সঙ্গে ব্যঙ্গ নয়। অপর পাশের মানুষটির সঙ্গে আপনার সম্পর্ক অনুযায়ী কথোপকথনের স্বর ঠিক করতে হবে। আবার একই মানুষের সঙ্গে প্রতিবার মজা করতে গিয়ে হিতে বিপরীত হতে পারে।

৭. যাকে-তাকে ভিডিও কল করা যাবে না

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুধু কাছের বন্ধুরাই থাকেন না। সহপাঠী, সহকর্মী, অনেক সময় একবার কোথাও দেখা হয়েছে, এমন মানুষও থাকেন। তাই হুটহাট যে কাউকে ভিডিও কল দিয়ে বসার কোনো মানে হয় না। ভিডিও কলের আগে অপর পক্ষকে আগে তা জানিয়ে দিন। আর সব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আইএম বা ভিডিও কলের সুবিধা আছে বলেই তা ব্যবহার করতে হবে, এর কোনো মানে নেই।

৮. মেসেঞ্জারে ব্যক্তিগত আলোচনা

দুনিয়ার সবকিছু মেসেঞ্জারে ২৭ জন বন্ধুর কাছে পাঠানোর কোনো মানে হয় না। শেয়ার করার জন্য ফেসবুকে নিউজফিড আছে। মেসেঞ্জারে ব্যক্তিগত আলোচনা সারুন।

৯. ভাবিয়া করিয়ো কাজ

আগে ভাবুন, তারপর লিখুন। লেখার পর আগে পড়ুন, তারপর পাঠিয়ে দিন। এতে ভুল মানুষকে ভুল করে ভুল বার্তা পাঠানো শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে পারবেন।

১০. ধন্যবাদ দিয়ে শেষ করুন

কথোপকথন শেষে ধন্যবাদজ্ঞাপন সাধারণ শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে। সেটুকু মেনে চলার চেষ্টা করুন।

তথ্যপ্রযুক্তি পেশাজীবী নাসির খান বলেন, অনলাইনে বিভিন্ন মাধ্যমে শিষ্টাচার মেনে যোগাযোগ করলে তা ব্যক্তি সম্পর্কে ভালো ধারণা দেবে। পাশাপাশি অপরপক্ষও বিরক্ত হবেন না।

গ্রন্থনা: মেহেদী হাসান

সূত্র: বিজনেস ইনসাইডার, উইকিহাউ