হাত ধোয়ায় যত ভুল

এমনিতে মনে হয় হাত ধোয়া এমন কী ব্যাপার? কিন্তু রোগপ্রতিরোধে এর গুরুত্ব অনেক। আমরা যখন হাত দিয়ে নানান কাজ করি, তখন অসংখ্য জীবাণু হাতে লেগে যায়। এরপর সেই হাত না ধুয়ে খাবার খাওয়া বা পরিবেশন করা অথবা মুখ, চোখ, নাক স্পর্শ করা বা অন্যকে স্পর্শ করা—এসবের মাধ্যমে জীবাণুর সংক্রমণ ছড়ায়। বাইরে বা শুকনো খাবার খাওয়ার সময় মনের অজান্তে অনেক সময় হাত না ধুয়েই আমরা খেয়ে ফেলি।
হাতের স্পর্শের মাধ্যমে ছড়াতে পারে আমাশয়, টাইফয়েড, জন্ডিস, ডায়রিয়া, কৃমিরোগ, ইনফ্লুয়েঞ্জা, নিউমোনিয়া, চোখ ওঠা ইত্যাদি অনেক রোগ। সাবান-পানি দিয়ে নিয়মমতো এবং নিয়মিত হাত ধুয়ে নিলে এসব সংক্রমণ অনেকাংশেই প্রতিরোধ করা যায়।

কখন হাত ধোয়া দরকার
খাওয়ার আগে ও শৌচাগার ব্যবহারের পর অবশ্যই হাত ধোয়া দরকার। এ ছাড়া খাবার তৈরি করা ও পরিবেশনের আগে, শিশুদের ডায়াপার পরিবর্তন করা বা শিশুদের মলত্যাগের পর তাদের পরিষ্কার করার পর, কাঁচা মাছ, মাংস, ডিম, সবজি ও ময়লা-আবর্জনা স্পর্শ করার পর, হাত দিয়ে নাক ঝাড়ার পর এবং হাত দিয়ে মুখ ঢেকে হাঁচি-কাশি দেওয়ার পরও হাত ধোয়া প্রয়োজন। মনে রাখবেন, দরজার নব, টেলিফোন, বেসিনের কল ইত্যাদি হলো জীবাণুর আড্ডাখানা। কেননা, এগুলোতে শত মানুষের স্পর্শ লাগে।

কীভাবে হাত ধোয়া দরকার
প্রথমে পানি দিয়ে পুরো হাত ভেজাতে হবে। তারপর সাবান নিয়ে দুই হাতে মেখে ফেনা করতে হবে। দুই হাতের উভয় দিকে, আঙুলের ফাঁকে, নখের নিচেসহ কবজি পর্যন্ত খুব ভালোভাবে ঘষে নিতে হবে ১০ থেকে ২০ সেকেন্ড সময় ধরে। তারপর পানি দিয়ে হাত ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। হাত ধোয়ার জন্য সাধারণ সাবানের চেয়ে তরল সাবান ভালো। ধোয়া হাত দিয়ে আবার কল বন্ধ করতে যাবেন না। কনুই বা বাঁ হাত দিয়ে কল বন্ধ করুন।

হাত ধোয়ার সময় আমরা সচরাচর কিছু ভুল করে থাকি। যেমন অনেক সময় এক হাতে সাবান নিয়ে হালকা করে কয়েক সেকেন্ড শুধু হাতের তেলো বা আঙুলগুলো কচলে নিই। হাতের দুই দিক এবং আঙুলের ফাঁকগুলো ঠিকমতো পরিষ্কার করি না। নখের নিচ বা কিনারও পরিষ্কার করি না। সব শেষে হাত মোছার জন্য সবার ব্যবহৃত তোয়ালে বা গামছা ব্যবহার করি। এসব ভুল করলে হাত ধোয়ার উদ্দেশ্য সফল হবে না। শৈশব থেকেই সঠিকভাবে হাত ধোয়া শেখা ও অভ্যাস করা উচিত।

অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ
বিভাগীয় প্রধান, কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগ, কমিউনিটি বেজড্ মেডিকেল কলেজ, ময়মনসিংহ।

>

আগামীকাল পড়ুন: অনিদ্রা দূর করতে খাবার

প্রশ্ন-উত্তর

প্রশ্ন: বয়স ২৩। ঠান্ডাজাতীয় কিছুই খেতে পারি না, খেলে কফ জমে, খুসখুসে কাশি হয়। খুব অল্পতেই কান, গলার সমস্যায় আক্রান্ত হই। প্রায়ই গরম পানি দিয়ে কুলকুচা করি, পান করি। ইদানীং কাশি ছাড়াও দুই সপ্তাহ ধরে কানে শুনতে পাচ্ছি না, কান বন্ধ হয়ে আছে—এমন অনুভব করছি।

উত্তর: এসবই অ্যালার্জিজনিত সমস্যা। দীর্ঘদিন অ্যান্টিহিস্টামিন-জাতীয় ওষুধ খেতে হতে পারে। অ্যালার্জি হয়, এমন বস্তু ও ঠান্ডা এড়িয়ে চলবেন। আপনি একজন নাক কান গলা বিশেষজ্ঞর তত্ত্বাবধানে থাকুন। ডা. আ ফ ম হেলাল উদ্দিন, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ