এমন দিনে যেমন পোশাক

গরমে আরামদায়ক বলে ছেলেদের কাছে পোলো টি–শার্টের চাহিদা বেশি। মডেল: রাজ ম্যানিয়া, পোশাক: মেনজ ক্লাব, ছবি: কবির হোসেন, স্থান: পদ্মা নদী, রাজশাহী
গরমে আরামদায়ক বলে ছেলেদের কাছে পোলো টি–শার্টের চাহিদা বেশি। মডেল: রাজ ম্যানিয়া, পোশাক: মেনজ ক্লাব, ছবি: কবির হোসেন, স্থান: পদ্মা নদী, রাজশাহী
রোদ–ঝলমলে দিন। তবে কড়া রোদ। এমন দিনে কেমন হবে তরুণদের পোশাক, সেটা ঠিক করে নিতে হবে। নইলে বাইরে গিয়ে গরমে টেকা মুশকিল। বৈশাখের এই সময়ে ফ্যাশন হাউসেও তাই বাড়তি পোশাকের আনাগোনা।


গরমের দিনে হয়তো পাঞ্জাবি কম পরা হয়। তবে অন্য পোশাক অর্থাৎ শার্ট, টি-শার্ট বা পোলো শার্ট তো প্রতিদিনই পরতে হয়। অফিসে গেলে এক রকম, আবার ক্লাসে গেলে আরেক। আড্ডা ও বিনোদনের সময়েও পাল্টে যায় পোশাক। তবে সবখানেই গরম থেকে স্বস্তি মিলবে এমন কিছু বেছে নেওয়া জরুরি বলে মনে করেন ফ্যাশন পরামর্শকেরা। ডিজাইনার শাহরুখ আমিন যেমন জানালেন, ‘এবার যেহেতু গরম বেশি, তাই সুতির বিকল্প নাই। সুতির শার্ট বা টি-শার্ট ছেলেদের আরাম দেবে। আর চলতি ধারার সঙ্গে থাকতে এসব শার্টে প্রিন্টের নকশা বেছে নিতে পারেন রাতের অনুষ্ঠানে। দিনের বেলা থাকতে পারে একরঙা পোশাক।’

 কোনটা পরবেন

বিপণিবিতানের হ্যাঙারে যেসব ঝুলছে, তা দেখেও দিব্যি বলে দেওয়া যায় এখন সুতি পোশাকের সময়। তবে সুতির মধ্যেও আছে নানা রকম। কোনোটা পাতলা ফিনফিনে, কোনোটা আবার নরম। এর মধ্যে আছে অ্যান্ডি কটন, রিমি কটন, আদ্দি, পিকে বা ল্যাকোস্ট ফেব্রিকে তৈরি শার্ট, টি-শার্ট ইত্যাদি।

ফ্যাশন হাউস ইনফিনিটির পরিচালক ও প্রধান ডিজাইনার নাইমুল হক খান বলেন, ‘সুতি তো বটেই, তবে পাতলা হওয়াটা জরুরি। এখন দিনের বেলা একরঙা সাদা, লেমন, হালকা নীল, সামুদ্রিক নীল, বোতল গ্রিন, হালকা মেরুন, অফ হোয়াইট শার্ট পরলে ভালো দেখাবে। এতে অল্পবিস্তর নকশা থাকলেও ভালো।’

গরমে সাদার প্রাধান্য এবারও। শার্ট: মেনজ ক্লাব
গরমে সাদার প্রাধান্য এবারও। শার্ট: মেনজ ক্লাব

ফুল হাতা ও হাফ হাতা দুই ধরনের শার্টই পরা যাবে এখন। তবে ফুলহাতা শার্ট পরলে হাতা গুটিয়ে রাখলে ভালো দেখাবে। আর হাফ হাতার শার্ট পরার এখনই সবচেয়ে ভালো সময়। মাঝবয়সীদের এই সময়ে হাফ হাতার হাওয়াই শার্ট মিলবে। প্রিন্ট করা শার্ট এখন ফ্যাশনে ঢুকে গেছে দারুণভাবে। তবে দিনের চেয়ে রাতের বেলা বেশি ভালো দেখাবে প্রিন্টের শার্ট। টি-শার্ট এখন সব বেলাতেই মানানসই। তবে বেশির ভাগ টি-শার্টে প্রিন্ট চোখে পড়বে। খুব ছোট না আবার খুব বেশি বড় না, বরং মাঝারি প্রিন্ট দিয়েই নকশা করা হচ্ছে টি-শার্টে। পিকে বা ল্যাকোস্ট ফেব্রিকে তৈরি পোলো শার্টে ইলাস্টিসিটি ভাব আনতে ব্যবহার করা হচ্ছে ভিসকস কাপড়। যাতে পোলো শার্টেও মোলায়েম আর আরামদায়ক একটা ভাব দেখা যায়।

 যেসব নকশা

একরঙা তো পরবেনই, পোলো শার্টে চেকের ব্যবহারও কম না। মোটা চেক, চিকন চেক, পাতলা বা ঘন চেক সব রকমের চেক আছে পোলোতে। প্রিন্ট আর নানা রকম ওয়াশের কারণেও বদলে গেছে পোলো শার্টের ধারা। এর মধ্যে হালকা রং এখন বেশি চলবে। মেনজ ক্লাবের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদুল হেলাল তেমনই আভাস দিলেন, ‘সাদা রংকে প্রধান করে অনেক শার্ট, টি-শার্ট বা পোলো শার্ট তৈরি হচ্ছে গরমের জন্য। আরামদায়ক করতে কিছুটা ঢিলেঢালা পোশাক বেছে নেওয়াই ভালো। নকশা হিসেবে ফুল বা গাছ-পাতার প্রিন্ট তো কয়েক বছর ধরেই ফ্যাশনে ইন, তাতে এ বছর যোগ হচ্ছে ফল বা পশু-পাখির নকশা।’

ফলমূলের মধ্যে যেমন আনারস, তরমুজের ফালি বা চিরে রাখা কমলা ছাপা দেখা যাচ্ছে। এ ছাড়া জ্যামিতিক নকশা, খেলনার মোটিফ, গাড়ি, রোদচশমা, বক, সারস পাখি, মাছরাঙা, বাঘ, হরিণের নকশা আছে শার্টে ও টি-শার্টে।

হাফ হাতা সুতি শার্ট  ।   ফুলেল নকশা এখন চলতি ধারা। টি–শার্ট: ইনফিনিটি
হাফ হাতা সুতি শার্ট । ফুলেল নকশা এখন চলতি ধারা। টি–শার্ট: ইনফিনিটি

যেহেতু গরমকাল চলছে, তাই আবহাওয়া উত্তপ্ত থাকবে সেটাই স্বাভাবিক। বাইরে যাওয়ার আগে নিজের প্রস্তুতি নিজেকেই নিতে হবে। শার্ট হোক বা টি-শার্ট, স্বস্তি মেলে এমন পোশাক বেছে নেওয়াই নিরাপদ। এতে ফ্যাশন আর আরাম দুটোই পাওয়া যাবে।