নারীদের বিব্রতকর সমস্যা

প্রস্রাব আটকে রাখতে না পারা, প্রস্রাব লাগলেই জরুরি ভিত্তিতে বাথরুমে যাওয়া, কখনো দেরি হলে সামান্য প্রস্রাব বের হয়ে যাওয়া, হাঁচি–কাশি হলে প্রস্রাব হয়ে যাওয়া—মধ্যবয়সী ও একটু বয়স্ক নারীদের অনেকে এমন বিব্রতকর সমস্যায় ভোগেন। কিন্তু তাঁরা লজ্জায় ও সংকোচে মুখ ফুটে কিছু বলেন না। অনেকেই এ নিয়ে এত বিব্রত থাকেন যে কোথাও গেলে উদ্বিগ্ন থাকেন, দীর্ঘ ভ্রমণ করতে চান না।

কেন হয়?

অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় বড় হয়ে ওঠা জরায়ু মূত্রথলির ওপর চাপ দেয়, পেলভিক পেশিগুলোকে শিথিল করে দেয় বলে প্রস্রাব আটকে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। সন্তান প্রসবের সময় ইনজুরি হলে, ফিস্টুলা হলে বা পেলভিক পেশি দুর্বল হয়ে পড়লে সমস্যা প্রকট হয়ে উঠতে পারে। জরায়ু অস্ত্রোপচারের পরও এমন হওয়া অস্বাভাবিক নয়। মেনোপজের পর ইস্ট্রোজেন হরমোনের অভাবে মূত্রথলির পেশির নমনীয়তা বিনষ্ট হয়। এ ছাড়া স্নায়ুগত সমস্যা, দীর্ঘদিনের ডায়াবেটিস, দীর্ঘমেয়াদি কোষ্ঠকাঠিন্য, স্থূলতাও এ জন্য দায়ী।

কী করবেন?

প্রেগনেন্সিতে এটা স্বাভাবিক, সন্তান প্রসবের পর জরায়ু স্বাভাবিক আকারে চলে আসার পর সমস্যা ধীরে ধীরে চলে যাওয়ার কথা। প্রসবের সময় বা অস্ত্রোপচারের সময় কোনো ইনজুরি বা পেলভিক ফ্লোরের ক্ষতি হয়েছে কি না, চিকিৎসক পরীক্ষা করে দেখবেন। ডায়াবেটিস থাকলে নিয়ন্ত্রণ করুন। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করুন, তলপেটের মেদ ঝরিয়ে ফেলুন। অতিরিক্ত চা–কফি পান করবেন না।

ব্লাডার ট্রেনিং ও কেজেল এক্সারসাইজ করতে পারেন। ব্লাডার ট্রেনিং হলো নির্দিষ্ট বিরতিতে বাথরুম না পেলেও প্রস্রাব করা। ধীরে ধীরে এই বিরতির সময় বাড়াতে হয়। এভাবে মূত্রথলির ধারণক্ষমতা বাড়ানো হয়। কেজেল এক্সারসাইজ মানে শুয়ে বা বসে কয়েক সেকেন্ডের জন্য পেলভিক পেশিকে (যোনিপথের আশপাশের পেশি) শক্ত করা। তিন সেকেন্ড ধরে রেখে আবার শিথিল করুন—এভাবে তিনবার। এভাবে দিনে মোট ১০ বার করুন। ডেস্কে, গাড়িতে বসে বা রান্নাঘরে কাজের সময় এই ব্যায়াম করতে পারেন। তবে প্রস্রাব করার সময় বাথরুমে বসে এই ব্যায়াম না করাই ভালো। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থা থেকে এই ব্যায়াম শুরু করা উচিত। সন্তান প্রসবের পরও নিয়মিত করা ভালো। তবে স্নায়ুগত সমস্যা, পেলভিক ফ্লোর ইনজুরি ইত্যাদি ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

 মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, ইব্রাহিম জেনারেল হাসপাতাল, মিরপুর, ঢাকা

আগামীকাল পড়ুন: আইবিএস নিয়ে অস্থিরতা নয়

প্রশ্ন-ত্তর

প্রশ্ন: আমার আট বছরের মেয়ে সকালে খেতে চায় না। বেশি বেশি চিপস, চুইংগাম, ঝালমুড়ি—এ জাতীয় খাদ্য খায়। পেটের নাভির নিচে ব্যথার কথা বলে। পেটের সমস্যা ও রুচি ফেরাতে করণীয় কী?

উত্তর: প্রথমেই বাইরের অস্বাস্থ্যকর খাবারের প্রতি আগ্রহ দূর করতে হবে। এমন খাবারে ক্যালরি ও তেল অনেক থাকে, যা একবার খেলে আবার খিদে লাগার কথা নয়। এগুলো নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর বলে পেটে গ্যাস, সংক্রমণ, বদহজম করতে পারে। বাড়িতে পরিষ্কার হাতে তৈরি পুষ্টিকর স্বাভাবিক খাবার দিন, খাওয়ানোর জন্য জোর করবেন না। খিদে পেলে সে নিজেই খাবে। কৃমির ওষুধ দিতে পারেন।

ডা. আবু সাঈদ, শিশু বিশেষজ্ঞ