নান্দনিক আপ্যায়ন

বাড়ির সামনে খোলা লন থাকলে সেখানে সারতে পারেন ঈদের দিন সকালের নাশতা। কৃতজ্ঞতা: দ্য প্যালেস লাক্সারি রিসোর্ট, বাহুবল, হবিগঞ্জ, ছবি: কবির হোসেন
বাড়ির সামনে খোলা লন থাকলে সেখানে সারতে পারেন ঈদের দিন সকালের নাশতা। কৃতজ্ঞতা: দ্য প্যালেস লাক্সারি রিসোর্ট, বাহুবল, হবিগঞ্জ, ছবি: কবির হোসেন

স্নিগ্ধ পরিবেশ, আয়েশি সময়—ছুটির দিনগুলোর ভাবনা তো এমনই। ঈদের সময়ে বাড়তি পাওনা মজার মজার খাবার। যারা রাঁধতে ও খাওয়াতে ভালোবাসেন, তাঁদের কাছে এটি আপ্যায়নের উপলক্ষও বটে। পরিবেশনের সময় অদরকারি জিনিসগুলো বাদ দিলেই ভালো। খাবার পরিবেশনে রুচির প্রকাশ পেলেই চলে আসবে ঈদের আমেজ।

বাড়ির সামনে যদি খোলা জায়গা থাকে তাহলে আগেই পরিস্কার করে রাখুন। ঈদের দিন সকালে বা পড়ন্ত বিকেলে এখানে টেবিল পেতে নাশতা করতে পারেন। ঘাসের ওপর বেঞ্চির মতো টেবিল পাতলে ভালো দেখাবে। লন ছাড়াও বড় বারান্দা বা গাছপালা ঘেরা ছাদে এভাবে টেবিল সাজাতে পারেন।

রেডিয়েন্ট ইনস্টিটিউট অব ডিজাইনের প্রধান ও ইন্টেরিয়র ডিজাইনার গুলসান নাসরীন চৌধুরী জানালেন, গরমের সময় খাবার ঘরের জন্য হালকা রং বেছে নেওয়াই ভালো। সাদা টেবিলম্যাটের ওপর হালকা গোলাপি, হালকা নীল বা লেবু রঙের ন্যাপকিন ও রানার রাখলে পরিবেশটা স্নিগ্ধ হয়ে উঠবে। এগুলোর সঙ্গে মিলিয়ে চেয়ারের কভার বেছে নিন। রাতে চাইলে একটু গাঢ় রং বেছে নিতে পারেন এসব অনুষঙ্গের জন্য, তবে টেবিলম্যাট সাদা হলেই ভালো। রান্নাবিদ সিতারা ফেরদৌসের পরামর্শ টেবিলে রানার, টেবিলম্যাট ও ন্যাপকিনের মতো অনুষঙ্গ সুন্দরভাবে গুছিয়ে রাখার। তিনি বলেন, রানারের ব্যবহার টেবিলটাকে আকর্ষণীয় করে তোলে। কাঁথা স্টিচ, গ্রামীণ চেক, প্রিন্ট, একরঙা বা ডিজাইন করা ন্যাপকিন বেছে নেওয়া যায়, যা একটু ভিন্ন ধাঁচের দেখায়।

ঘরের জানালার পাশে টেবিল বসিয়ে দুপুরের খাবারের আয়োজন করতে পারেন
ঘরের জানালার পাশে টেবিল বসিয়ে দুপুরের খাবারের আয়োজন করতে পারেন

টেবিল সাজানোয় টুকটাক

লন, বাগান বা ব্যালকনিতে আলো-বাতাস, গাছপালা, ফুলবাগান, পাখির ডাকের সমন্বয়ে অন্য রকম পরিবেশ পেতে পারেন নাশতার সময়। গরমে বাইরে বসা না গেলে ঘরেই রাখুন গাছ। ছোট বাটি ও পিরিচজাতীয় সামগ্রী রাখুন। বিকেলের চায়ের আয়োজনে আলাদা বাক্সে থরে থরে বিভিন্ন স্বাদের টি-ব্যাগ রাখুন। চায়ের পট, কাপ, চামচ—সবকিছুই রাখুন টেবিলের ওপর। কেউ কেউ হাত দিয়ে খেতে স্বচ্ছন্দ নন। টেবিলে চামচ, কাঁটাচামচ, ছুরির ব্যবস্থা রাখা ভালো। দুপুরের খাবার টেবিল বসাতে পারেন জানালার এক পাশে। যেখান থেকে বাইরের প্রকৃতি দেখা যাবে। প্রতি বেলায় টেবিলের পরিবেশ বুঝে তাজা ফুল রাখতে পারেন ফুলদানিতে। নানাভাবে ন্যাপকিন ভাঁজ করে প্লেটের পাশে রেখে এর ওপর রাখতে পারেন চামচ; মুড়িয়েও রাখা যায় ন্যাপকিন। রেস্তোরাঁর মতো গ্লাসেও রাখতে পারেন। ন্যাপকিন না থাকলে টিস্যু রাখুন। অবশ্যই বোন প্লেট রাখুন। তাহলে বোন প্লেট চাইতে অতিথি অস্বস্তিতে পড়বেন না।

শ্বেতশুভ্র রাতের টেবিল
শ্বেতশুভ্র রাতের টেবিল

রাতের খাবার টেবিল ল্যাম্পশেডে আলো-আঁধারি করতে পারেন। টেবিলে রাখতে পারেন মোমবাতি। দুই আলো মিলিয়ে পরিবেশটা শান্ত দেখায়। বোরহানি বা লাচ্ছি রাখুন রাতের জন্য। পোরসেলিন বা চায়না ক্লে হতে পারে হাতে আঁকা নকশায় তৈরি। পাথর বা নকশাদার সিলভারও হতে পারে। রাতের জন্য ক্রিস্টালের ক্রোকারিজ ও জমকালো ক্রোকারিজ মানানসই। খেয়াল রাখবেন, অনুষঙ্গগুলো যেন খাপছাড়া না হয়। রাতে রাখতে পারেন গাঢ় রঙের (যেমন কালো, মেরুন, কফি রং) ও জমকালো নকশার অনুষঙ্গ। তবে কালো টেবিলে কালো রানার বা ন্যাপকিন মানাবে না, সে ক্ষেত্রে গাঢ় কমলা বা সোনালি রং বেছে নিন। ফলমূল, দই প্রভৃতি দিয়ে তৈরি কয়েক রকম পানীয় ও সালাদ রাখুন। পিচ রঙের বাটিতে হয়তো বাঙ্গি পরিবেশন করলেন। টেবিলের এক পাশে গোটা ফল বা ডেকোরেশনের জন্য কাটা ফল সাজানো যায়। ফুল রাখুন টেবিলে বা ঘরের এক কোণে। সুগন্ধি মোম জ্বালাতে পারেন দিনেও। খাবার রাখুন পাশ টেবিল, শেলফ বা ট্রলিতে, ছিমছাম দেখাবে। বুফে পদ্ধতিতে খাবার নষ্টও হয় না।