চরণযুগলে

জুতা হওয়া চাই আরামদায়ক। মডেল: িলসা ও সুহাস, জুতা: বাটা, ছবি: নকশা
জুতা হওয়া চাই আরামদায়ক। মডেল: িলসা ও সুহাস, জুতা: বাটা, ছবি: নকশা


‘একদা ছিল না জুতা চরণযুগলে’—শিক্ষামূলক কবিতাটির বিষয়বস্তু আদতে ফ্যাশনধারার হালচালের আলোচ্য নয়। তবু ঈদ ফ্যাশনে জুতা নিয়ে লিখতে গিয়ে এই লাইনটাই মাথায় আসার কারণ বোধ হয় আজকের দিনে জুতার সহজলভ্যতা। বাজার থেকে বাহারি দোকানের সামনে স্যান্ডেলের পসরা আপনারও নিশ্চয়ই চোখে পড়েছে! ঈদের সময় পোশাক বাছা শেষ হলেই মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ে জুতার দোকানে। পোশাকের সঙ্গে মানানসই জুতা বেছে পাওয়াটাও কম ঝক্কির না। তবে আগে থেকে জুতার চলতি ধারা জানা থাকলে নিশ্চয়ই মন্দ হবে না?

গরম যখন ‘হট টপিক’

বাজারের হালচাল জেনেই লেখা হয় ফ্যাশনধারার কথা। ক্রেতার চাহিদার কথাও জানান বিক্রিবাট্টার দিককার মানুষেরা। গরমে আরাম চাই—এ তো নকশার প্রায় প্রতিটা পাতায় স্পন্দিত হচ্ছে কয়েক সংখ্যা ধরে। জুতা প্রসঙ্গেও সেই কথাটাই শোনা গেল। খোলামেলা, আরামদায়ক জুতাই বেশি আনছে জুতা প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলো।

ওরিয়ন ফুটওয়্যার লিমিটেডের ব্যবসায় উন্নয়ন ব্যবস্থাপক মো. মিনহাজ উদ্দিন জানালেন, জুতার ক্ষেত্রে আরামের দিকটাও বিবেচ্য, আবার ফ্যাশনের দিকটাও। রঙের বৈচিত্র্যও থাকছে।

বাটার কালেকশন ব্যবস্থাপক (মেনজ অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ব্র্যান্ড) রেজাউল হায়দার জানালেন, মেরি ক্লেয়ারসহ মেয়েদের জন্য তৈরি করা বিভিন্ন ব্র্যান্ডের জুতা বেশ আরামদায়ক। বাংলাদেশের আবহাওয়ায় ব্যবহারোপযোগী এসব জুতার নকশাও নজরকাড়া।

ছেলেদের জন্যও রয়েছে ফ্যাশনেবল জুতা। বাটা থেকে ইতালীয় লেস আপ জুতা বেছে নিতে পারেন, যাতে আসল চামড়ার ব্যবহার হয়েছে। ওপরের অংশে আছে ২ টোন ফিনিশিং। এই জুতাগুলো ফরমাল ও ক্যাজুয়াল দুভাবেই ব্যবহার করা যায়। জুতার বাইরের সোলে থাকছে রাবার, টিপিআর বা টিউনিক, ফলে জুতা টেসকই হয়। লেদার, ডুরাটেক্স ও কৃত্রিম উপকরণও ব্যবহৃত হয় ছেলেদের জুতায়। আরবান ক্যাজুয়াল জুতায় থাকছে হাই কাট, মিড কাট এবং লো কাট লেদার। ফিশারম্যান, মিউন, স্কেটবোর্ড, স্নিকার বা থং জুতাও বেছে নিতে পারেন। নানা রকম স্পোর্টস ব্র্যান্ড থেকেও ছেলেরা ক্যাজুয়াল জুতা বেছে নিতে পারেন। যা সহজেই ক্যাজুয়াল পোশাকের সঙ্গে মানিয়ে যাবে।

ছেলেদের ফরমাল জুতায় আছে দুই রঙের শেডের ব্যবহার। কিছুটা চকচকে দেখতে জুতাও চলছে এবার। আবার মলিন (ফেড) জুতাও দেখা যাবে। প্রথম দেখাতে যা মনে হবে পুরানো। কোনো কোনো জুতার সামনে থাকছে ঝোলানো বাড়তি অংশ। স্যান্ডেল শুর ফিতার কাটে আছে বৈচিত্র্য, কোনোটিতে আছে দুই রঙের ফিতার ব্যবহার।

ফ্যাশনধারা যেমন

ফুলেল ধারার নকশা করা মেয়েদের জুতা বাজারের একটা বড় অংশে দেখা যাচ্ছে। পাথর, পুঁথি, বিডস, চুমকি, বো-এমন নানান অনুষঙ্গ থাকছে মেয়েদের জুতায়। ধাতব চেন বা অন্যান্য ধাতব নকশাও লক্ষণীয়। ভেলভেট কাপড় ও এমব্রয়ডারি নকশার ব্যবহারও রয়েছে জুতায়। নকশা থাকছে জুতার বড় হিলেও। স্বচ্ছ হিলের জুতাও নজর কাড়বে। নানান আকারের হিল ও বাহারি নকশার নানান ধাঁচের জুতা থেকে বেছে নিন পছন্দসই জুতাজোড়া। আজকের কিশোরী-তরুণীর জন্য স্যান্ডেল শুর কেবল ফিতাতেই যে কত কারুকাজ।

পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে জুতা পরতে দেখা যাবে
পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে জুতা পরতে দেখা যাবে

দেখেশুনে নিন কিনে

মূলত লেদার ও পিইউ লেদারের (কৃত্রিম চামড়া) জুতাই মিলবে বাজারে। জুতায় ডেনিমের ব্যবহার এনেছে বৈচিত্র্য। বাটা, এপেক্স, ওরিয়ন ফুটওয়্যার, বে এম্পোরিয়াম, জেনিস, হাশ পাপিস, আড়ং বা অন্য কোনো দোকান থেকে ঈদের পোশাকের ধরনের সঙ্গে মিলিয়ে কিনুন জুতা।