ঈদের ছুটিতে স্বাস্থ্য সুরক্ষা

ঈদের ছুটিতে নানাজন নানা জায়গায় যাবেন। অনেকেই পরিবারসহ গ্রামের বাড়িতে বা দেশের বাইরে বেড়াতে যাবেন। এ সময় স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখা জরুরি। এ বিষয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিনের সহযোগী অধ্যাপক ডা. গোবিন্দ চন্দ্র রায় বলেন, পুরো ছুটির সময়টাতে ডায়রিয়া, আমাশয়, হাইপার অ্যাসিডিটি এবং অন্যান্য সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সুতরাং বাড়ির উদ্দেশে যাত্রা করা থেকে শুরু করে সেখানে থাকা এবং সেখান থেকে ফিরে আসা পর্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে।

কী কী সঙ্গে রাখতে পারেন

চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ওষুধ চলতে থাকলে সেসব অবশ্যই নিতে হবে। এ ছাড়া খাওয়ার স্যালাইন, অ্যান্টাসিড সিরাপ, গ্যাস্ট্রিক প্রতিরোধজাতীয় ওষুধ, প্যারাসিটামল, বমির ওষুধ, অ্যান্টিহিস্টামিন, অ্যান্টিসেপটিক, অ্যান্টিবায়োটিক মলম, ব্যান্ডেজ ইত্যাদি সঙ্গে নিতে হবে।

যাত্রাপথে ‘মোশন সিকনেস’

বাস, ট্রেন, নৌকা, লঞ্চ, স্টিমার—যেকোনো বাহনে চড়ার পর অনেকেরই বমি হতে পারে। এ সমস্যার নাম ‘মোশন সিকনেস’। এটি পুরোপুরি প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। কিছু নিয়ম মেনে চললে উপকার পাওয়া যাবে। যেমন গাড়ির বাইরে তাকিয়ে থাকলে বমি বমি ভাব কম হবে। জানালার পাশে সিট নিয়ে জানালা একটু খুলে রাখলে ভালো ফল পাওয়া যায়। হালকাভাবে দুই চোখ বন্ধ করে একটু তন্দ্রাচ্ছন্ন ভাব আনলেও কাজে দেবে। কিছু ওষুধ আছে যেগুলো বমি প্রতিরোধ করতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শে গাড়িতে ওঠার আগে তা সেবন করা যায়।

হতে পারে সর্দি-জ্বর

এই সময়ে স্থান পরিবর্তনের কারণে সর্দি-জ্বর হতে পারে। এই গরমে অতিরিক্ত ঘাম শুকিয়ে ঠান্ডা লেগে সর্দি-জ্বর হতে পারে। তবে এসব এমনিতেই ভালো হয়ে যায়। প্রচুর পানি পান করতে হবে। সর্দির জন্য অ্যান্টিহিস্টামিন–জাতীয় ওষুধ এবং জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল–জাতীয় ওষুধ খাওয়া যেতে পারে।

হতে পারে পেট খারাপ

যাত্রার সময় রাস্তার পাশের দোকানের খাবার বা অপরিচিত লোকের কাছ থেকে কোনো খাবার না খাওয়াই ভালো। বাসা থেকে পানি নিয়ে বের হওয়া উচিত। এ রকম খাবার বা পানীয় থেকে ডায়রিয়া হতে পারে।

হতে পারে বুক জ্বালা

খাবারে তারতম্যের কারণেই অনেক সময় পেট জ্বালা করে। আর যাদের আগে থেকেই এই সমস্যা আছে, তাদের তো যেকোনো সময় একটু তারতম্যেই হতে পারে পেট জ্বালা। তৈলাক্ত খাবার, ভাজা–পোড়া, চা-কফি, ধূমপান বাদ দিতে হবে।

হতে পারে মাথাব্যথা

মাথাব্যথার কারণ অনেক। দুশ্চিন্তা ও মাইগ্রেন ৯০ শতাংশ মাথাব্যথার জন্য দায়ী। ৫ শতাংশ মাথাব্যথা চক্ষুজনিত। তাই দুশ্চিন্তামুক্ত থাকতে হবে। পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে। অল্প ব্যথায় প্যারাসিটামল–জাতীয় ওষুধ খাওয়া যেতে পারে।

লেখক: চিকিৎসক