'বেঁচে থাকলে সাইফের বাবাই বেশি খুশি হতেন'

সাইফের সাফল্য দেখে যেতে পারেননি তাঁর বাবা।
সাইফের সাফল্য দেখে যেতে পারেননি তাঁর বাবা।
>আজ বাবা দিবস। প্রথম আলোর ইউটিউব চ্যানেলে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের ১০ ক্রিকেটারের বাবাদের ১০টি ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে। এবারের বিশ্বকাপ দলে থাকা চার ক্রিকেটারের বাবা নেই। তাঁদের মা ও ভাইয়েরা বললেন বাবাদের সঙ্গে ক্রিকেটারদের নানান স্মৃতিকথা।

বিশ্বকাপে বাংলাদেশের অন্যতম বড় ভরসা পেস বোলিং অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিন। কোচের বিশেষ আস্থার পাত্র হয়ে ওঠা সাইফ এরই মধ্যে ৬ উইকেট পেয়ে গেছেন বিশ্বকাপে। তবে সাইফের দুর্ভাগ্য, ছেলের এমন সাফল্য দেখে যেতে পারেননি বাবা। বাবার সঙ্গে সাইফের সম্পর্ক নিয়ে কথা বললেন মা জোহরা বেগম।

সাইফের বাবা আবদুল খালেক মারা গেছেন ২০০৮ সালের ১৯ জুন। পেশায় পুলিশ ছিলেন তিনি। ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মাত্র ৫৫ বছর বয়সে যখন মারা যান, সাইফ তখন বেশ ছোট। জোহরা বেগমের তাই আফসোস, ছেলের সুনামের কথা বাবা শুনে যেতে পারলেন না।

সাইফের জন্ম ফেনী সদর উপজেলার ফাজিলপুর ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামে। সাইফের মা জোহরা বেগমই জানালেন, বাবা মারা যাওয়ার সময় সাইফ অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। সাইফরা পাঁচ ভাই-বোন। তিন ভাইয়ের মধ্যে সাইফ দ্বিতীয়। বড় ভাই কফিল উদ্দিন স্নাতকোত্তর শেষ করে স্থানীয় এক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেছেন। ছোট ভাই আজাহার উদ্দিন ফেনীতে স্থানীয় এক স্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়ছে।

জোহরা বেগম বললেন, ‘সাইফ এখন জাতীয় দলের ক্রিকেটার। ফেনীর মানুষ, পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজন—সবাই এখন তাঁকে নিয়ে গর্ব করে। দেশবাসী তাঁর খেলা দেখে প্রশংসা করে। ওর বাবা তো বেঁচে নেই। বেঁচে থাকলে তিনিই সবচেয়ে বেশি খুশি হতেন, সবচেয়ে বেশি গর্ববোধ করতেন।’

জোহরা বেগম আরও বলছিলেন, ‘ছেলেরা এখন বিশ্বকাপে খেলছে, ওদের জন্য দোয়া করি। আর ওর বাবার কথা খুব মনে পড়ছে। তিনি বেঁচে থাকলে কত না খুশি হতেন!’

ছোটবেলা থেকেই সাইফ ক্রিকেট বলতে পাগল। লেখাপড়ার ক্ষতি হবে ভেবে পরিবারের সবাই তাঁকে বাধা দিতেন। কিন্তু সাইফ একটু সুযোগ পেলেই চলে যেতেন ক্রিকেট মাঠে। এজন্য বাসায় বকাও কম খেতে হয়নি। পাড়ার বড় ভাইয়েরা তাঁকে ক্রিকেট খেলতে ডেকে নিয়ে যেতেন নানান জায়গায়। প্রথম প্রথম ব্যাট কেনার জন্য টাকার বায়না ধরতেন সাইফ। কিন্তু পরে তাঁর খেলা দেখে পাড়ার বড় ভাইয়েরাই খেলার সরঞ্জাম কিনে দিতেন। সেই সাইফই এখন বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করছেন।