বিশ্বকাপের অবকাশে

>বিশ্বকাপ ক্রিকেটে আফগানিস্তানের সঙ্গে খেলার পর প্রায় এক সপ্তাহ অবসর পেয়েছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা। এই সময়ে তাঁরা ঘুরে বেড়িয়েছেন নানা জায়গায়। পরিবার নিয়েও ঘুরেছেন কেউ কেউ। পরের ম্যাচের আগে ক্রিকেটারদের এই অবসর সময়ের কিছু ছবি ও গল্প নিয়ে এবারের প্রচ্ছদ প্রতিবেদন।
হাস্যোজ্জ্বল মাহমুদউল্লাহ পরিবার। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
হাস্যোজ্জ্বল মাহমুদউল্লাহ পরিবার। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

 দুই ম্যাচের মধ্যে আট দিনের বিরতি। ছুটির মূল উদ্দেশ্যই ছিল বিরতিতে ক্লান্তি দূর করে চনমনে হয়ে ওঠা। আর টুকটাক চোটাঘাত থেকে সেরে ওঠা। ভারতের বিপক্ষে চনমনে–সতেজ বাংলাদেশকে দেখা গেল কি না, সেটি সোমবার লেখাটা লেখার সময় বলা কঠিন ছিল।

অবকাশে স্ত্রীর সঙ্গে একান্তে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
অবকাশে স্ত্রীর সঙ্গে একান্তে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

ম্যাচ–পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে ছুটির উপকারিতা নিয়ে বলতে পারেননি স্বয়ং অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাও, ‘সত্যি বলতে জানি না। টুর্নামেন্টের সূচিটা এমন ছিল, আট দিনের বিরতি। আর এই মাঠও (এজবাস্টন) ব্যস্ত ছিল, আমাদের আসার পর দুটো ম্যাচ হয়েছে। এখানে অনুশীলন করাও কঠিন ছিল। তবে ছুটিটা কাজে দিতে পারে। তবে ছুটি না, যদি পয়েন্ট আরও বেশি পেতাম, সেটি আমাদের বেশি নির্ভার থাকতে সহায়তা করত। ৭ পয়েন্ট (ভারত ম্যাচের আগে) নিয়ে আপনি নির্ভার থাকতে পারবেন না, সে যতই ছুটি থাক।’

কেনাকাটা করে স্ত্রী–সন্তানসহ বের হচ্ছেন মুশফিকুর রহিম। ছবি: শামসুল হক
কেনাকাটা করে স্ত্রী–সন্তানসহ বের হচ্ছেন মুশফিকুর রহিম। ছবি: শামসুল হক

ঠিক, ছুটির মধ্যে যদি কঠিন পরীক্ষার চিন্তা থাকে, সে ছুটি কি আর উপভোগ্য হয়! তবু বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা চেষ্টা করেছেন যতটা পারা যায় বিরতি ভালোভাবে কাটাতে। বার্মিংহামে আসার পর মাশরাফিকে একদিন জিজ্ঞেস করা হলো, ‘এই যে এত দিন ইংল্যান্ডে আছেন, এতগুলো শহর ঘুরলেন, কোন শহরটা বেশি ভালো লাগল?’ বিশ্বকাপ-যাযাবর হয়ে যাঁরা ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলসের এ শহর থেকে ও শহর চষে বেড়াচ্ছেন, তাঁদের সবাইকেই কখনো না কখনো প্রশ্নটা শুনতে হচ্ছে। যাঁর ব্যস্ততা ভালো লাগে, নীরবতা পছন্দ নয়, তিনি হয়তো বলছেন লন্ডনের কথা। যাঁর কোলাহল পছন্দ নয়, ভিড়ভাট্টা ভালো লাগে না, তিনি বলবেন টন্টন বা কার্ডিফ। মাশরাফির পছন্দ দ্বিতীয়টি, অধিনায়কের পছন্দ গ্রাম। ছবির মতো সাজানো–গোছানো ইংলিশ গ্রাম দেখে তাঁর মনই যেন ভরে না। টন্টনে প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো গ্রামে গিয়েছেন।

ছুটি যেন মধুচন্দ্রিমা মিরাজ দম্পতির জন্য
ছুটি যেন মধুচন্দ্রিমা মিরাজ দম্পতির জন্য

বার্মিংহামে এসে কয়েক দিনের ছুটি পেয়ে স্ত্রী-পরিবার নিয়ে স্নোডন নামের এক ছোট্ট শহরে ঘুরতে গেছেন মাশরাফি, দেখে এসেছেন ইংল্যান্ডের গ্রাম, পাহাড়ি ঝরনা। ইংল্যান্ডের গ্রাম কেমন হয়, সেটি দেখার খুব শখ ছিল মাশরাফি ও তাঁর স্ত্রীর। বাড়ির সামনে নরম রোদে বসে কোনো বুড়ো-বুড়ি দম্পতি চায়ের পেয়ালায় চুমুক দিতে দিতে গল্প করছেন—এর চেয়ে সুন্দর দৃশ্য নাকি তাঁদের চোখে আর কিছুই হয় না। মাশরাফির সঙ্গে একই গ্রাম দেখতে গিয়েছিলেন মিরাজ–প্রীতি দম্পতিও।

লন্ডনে বলিউডের নায়ক ববি দেওলের সঙ্গে সাকিব আল হাসান পরিবার। ছবি: ফেসবুক
লন্ডনে বলিউডের নায়ক ববি দেওলের সঙ্গে সাকিব আল হাসান পরিবার। ছবি: ফেসবুক

সাকিব আল হাসান সাউদাম্পটনে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ শেষ হওয়ার পরেই চলে গিয়েছিলেন লন্ডন। সেখান থেকে যাওয়ার কথা ছিল প্যারিসে। কিন্তু ভিসা–সংক্রান্ত জটিলতায় পরিকল্পনা বাতিল করে লন্ডনেই কাটিয়ে আসেন ছুটির পাঁচটা দিন। লন্ডনের আভিজাত্য–জাঁকজমকপূর্ণ জীবন যে ভীষণ উপভোগ করেছে সাকিব–পরিবার, সেটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি–সেলফি দেখেই বোঝা গেল।

তামিম ইকবালের ব্যাগ রেডি, এক হোটেল থেকে আরেক হোটেলে। ছবি: শামসুল হক
তামিম ইকবালের ব্যাগ রেডি, এক হোটেল থেকে আরেক হোটেলে। ছবি: শামসুল হক

সাকিব–পরিবারের মতো লন্ডনে ছুটি কাটিয়েছেন তামিম ইকবাল ও মোস্তাফিজুর রহমান। সাইফউদ্দিনও লন্ডনে ছুটি কাটিয়েছেন। তবে তাঁর বেশি সময় কেটেছে কেনাকাটা করেই! ফেসবুকে কেনাকাটার ছবিও পোস্ট করেছেন তরুণ অলরাউন্ডার।

সৌম্য সরকারের ঘোরাঘুরি । ছবি: শামসুল হক
সৌম্য সরকারের ঘোরাঘুরি । ছবি: শামসুল হক

সাব্বির রহমান, মোসাদ্দেক হোসেন, সৌম্য সরকার, মোহাম্মদ মিঠুনের অবশ্য বার্মিংহামে টিম হোটেলেই সময় কেটেছে। লিটন দাসও ঘুরেছেন তাঁর মতো করে। টিম হোটেলের আশপাশেই ঘুরেছেন, বাজার–সদাই করেছেন মুশফিকুর রহিম আর মাহমুদউল্লাহ। পায়ের মাংসপেশিতে চোট পাওয়া মাহমুদউল্লাহর তাড়া ছিল বিরতি কাজে লাগিয়ে চোট থেকে সেরে ওঠার। তিনি সেটি পেরেছেন কি না, ভারতের বিপক্ষে ম্যাচেই জেনে গেছেন। এ–ও জেনে গেছেন, বাংলাদেশ সেমিফাইনালের আশা টিকিয়ে রাখতে পেরেছে কি না।

ছুটিতে বিলেতের রাস্তায় লিটন দাসের সেলফি
ছুটিতে বিলেতের রাস্তায় লিটন দাসের সেলফি
নিজের মতো সময় কাটাচ্ছেন মো. সাইফউদ্দিন
নিজের মতো সময় কাটাচ্ছেন মো. সাইফউদ্দিন
মোসাদ্দেক হোসেন ও মো. মিথুন। ছবি: শামসুল হক
মোসাদ্দেক হোসেন ও মো. মিথুন। ছবি: শামসুল হক