বুঝেশুনে শিশুর যত্নআত্তি

সন্তান জন্মের পর মায়েদের দিনের অনেকটা সময় শিশুকে কোলে কাঁখে রাখতে হয়, কোলে নিয়ে বসে দুধ খাওয়াতে হয়, উবু হয়ে গোসল করানো বা জামাকাপড় পরানোর কাজও করতে হয়। প্রসবের পর, বিশেষ করে অস্ত্রোপচারে শিশুর জন্মের পর এসব কাজ করতে গিয়ে অধিকাংশ মায়েরই বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা, দুর্বলতা, ব্যথাজনিত উপসর্গ দেখা যায়। একটু বুঝেশুনে বিজ্ঞানসম্মতভাবে শিশুকে কোলে ওঠানো-নামানো আর যত্নআত্তি করতে পারলে প্রতিদিনের জীবনযাপনে মায়েদের স্বস্তি হয়, কাজ করতেও সুবিধা হয়।


দেহভঙ্গির অবস্থান: অবশ্যই মনে রাখবেন, কোমর এবং পিঠের অংশকে সুরক্ষার জন্য দেহভঙ্গির অবস্থান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মেরুদণ্ডের অবস্থানকে সুসংহত রাখতে কোমর ভাঁজ না করে হাঁটুর ওপর ভর করে বসে শিশুকে কোলে নেবেন।


শিশুকে বহন করা: দীর্ঘ সময় শিশুকে বহন করার জন্য কোনো বাহন বা বাহক ব্যবহার করতে পারেন, যেটা আপনার শরীরের সঙ্গে বেল্টের মাধ্যমে সংস্পর্শে থাকবে। আজকাল মায়ের শরীরের সঙ্গে এঁটে থাকার বেল্ট, প্যারামবুলেটর, পুশ চেয়ার ইত্যাদি পাওয়া যাচ্ছে। তাই অনেকক্ষণ ধরে বা বাইরে গেলে দীর্ঘ সময় কোলে নিয়ে থাকার দরকার নেই। এক হাতে কোলে নিয়ে বহন করবেন না বা দুলিয়ে রাখবেন না। শিশুকে কোলে নিয়ে বেশিক্ষণ হাঁটবেন না।


শিশুকে ধরে রাখা: শিশুকে কাঁধ থেকে নিচে নামানোর সময় পেছন দিয়ে কোমর ভাঁজ করবেন না বা উবু হবেন না। বরং হাঁটু দুটো ভাঁজ করে শিশুকে ধরে নামাবেন। শিশুকে অপ্রয়োজনে কোলে নেওয়া থেকে বিরত থাকুন। ডায়াপার বা জামাকাপড় পরিবর্তনের সময় যথেষ্ট উঁচু ও সমান্তরাল জায়গায় (যেমন বিছানায়) রেখে যথাসম্ভব পিঠ না বাঁকিয়ে কাজটি সারুন। নিচু হয়ে কাজ করতে গেলে ব্যথা হবে। গোসল করাতে হলে নিজে একটি টুল বা মোড়ায় বসে বাথটাবে শিশুকে গোসল করান, যাতে পিঠ না বাঁকাতে হয়।


কোমরের যত্ন নিন: শিশুকে কোমরে বা কাঁখে বেশি বহন করবেন না। এতে কোমরের মাংসপেশি দুর্বল হয়ে যেতে পারে। এ জন্য মাঝেমধ্যে কোমরের দুই পাশেই বহনের ক্ষেত্রে ভারসাম্য রাখুন।


শক্তি ফিরিয়ে আনুন: কোমরের মাংসপেশিকে সবল রাখতে নিয়মিত কোমরের কিছু শক্তিবর্ধক ব্যায়াম করুন। কাজের সুবিধার জন্য কোমরে বেল্ট ব্যবহার করতে পারেন।

লেখক: ক্লিনিক্যাল অকুপেশনাল থেরাপিস্ট, সিআরপি, মিরপুর, ঢাকা