হজযাত্রীর খাবার

যেকোনো বিদেশভ্রমণ ও পবিত্র হজযাত্রার মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে। কেননা, হজের সময় কিছু নির্দিষ্ট বিধিবিধান মেনে চলতে হয়, সময়ের সঠিক ব্যবহার করতে হয় এবং প্রচুর পরিশ্রমও হয়। হজের পুরোটা সময় নিজের সুস্থতার দিকে নজর দেওয়া বিশেষভাবে জরুরি। পরামর্শ দিয়েছেন পুষ্টিবিদ আখতারুন নাহার


অতিরিক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন
প্রচুর হাঁটাহাঁটিসহ পরিশ্রমের কারণে এ সময় ক্যালরি ক্ষয় হয় অনেক। এ কারণে অনেকে বাড়তি খেয়ে পুষিয়ে নিতে চান। কিন্তু অতিভোজন ভালো নয়। এ কারণে বদহজম, পেটে গ্যাস, ডায়রিয়া হতে পারে। সাধারণ দৈনন্দিন চাহিদার চেয়ে একটু বেশি খাওয়া ভালো, তাই বলে অতিরিক্ত নয়। এমন খাবার খেতে হবে, যা দীর্ঘক্ষণ পুষ্টি জোগায়।


কম খাওয়াও ভালো নয়
অনেকে আবার পেট খারাপের ভয়ে খাওয়াদাওয়াই ছেড়ে দেন। মনে রাখবেন, টানা প্রায় ৪০ দিন ছোটাছুটির মধ্যেই থাকতে হবে। সে জন্য প্রয়োজনীয় ক্যালরি দরকার। ভাত, রুটি কম খেতে চাইলে মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, ডাল বেশি করে খান। অপর্যাপ্ত আহারের কারণে ক্লান্তি, দুর্বলতা, অবসাদ হতে পারে। সকালের নাশতা খুবই জরুরি। অনেকে নাশতা না করেই মসজিদে চলে যান। পরে আর খাবার সময় পান না। এটা ঠিক নয়। ফজরের নামাজ সেরে নাশতা করে নিন। তারপর একটু বিশ্রাম নিয়ে দিন শুরু করুন। চেষ্টা করুন প্রতি বেলার খাবার ঠিকঠাক মতো খেতে।


চাই যথেষ্ট পানি
পানি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, সৌদি আরবের আবহাওয়া খুব শুষ্ক। সব সময় পানির বোতল সঙ্গে রাখবেন। সময়-সুযোগ পেলে জমজমের পানি ইচ্ছেমতো পান করুন। পানির সঙ্গে দুধ, ফলের জুস বা অন্যান্য তরলও নিতে পারেন। তবে শরীরের পানিশূন্যতা দূর করতে সাধারণ পানিই সেরা। কোমল পানীয় ও চিনিযুক্ত জুস বেশি পান না করাই ভালো।

বাসি খাবার নয়
পুরোনো ও বাসি খাবার একেবারেই খাবেন না। এতে পেটব্যথা, পেট খারাপ, বমি হতে পারে। যেসব খাবার আপনার জন্য নিষেধ, তা-ও পরিহার করুন।


অসুস্থতাকে আমলে নিন
প্রত্যেকে নিজের শারীরিক সমস্যা বিষয়ে সচেতন থাকবেন। শুকনা খাবার, যেমন বিস্কুট, মুড়ি, খেজুর, বাদাম, আপেল, নাশপাতি, কিশমিশ, শুকনা মিষ্টি ইত্যাদি সঙ্গে রাখুন। ডায়াবেটিসের রোগীরা তিন ঘণ্টা পরপর কিছু খাবেন। অযথা চিনিযুক্ত খাবার খেয়ে শর্করা বাড়াবেন না। বরং গোটা শস্যের খাবার, যেমন রুটি, খই, সিরিয়াল খেতে পারেন বেশি করে। হৃদ্রোগীরা বেশি তেল-চর্বিযুক্ত খাবার, কেনা পরোটা, গরুর মাংসের পদ, ফাস্ট ফুড পরিহার করুন। উটের মাংসে চর্বির পরিমাণ গরু, খাসি ও দুম্বার চেয়ে কম। মাছ ও মুরগির মাংস খেতে পারেন যথেষ্ট।