ফ্রিজ ছাড়া চলেই না

আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী বাজার থেকে ফ্রিজ কিনুন। মডেল: অনন্যা, ছবি: খালেদ সরকার
আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী বাজার থেকে ফ্রিজ কিনুন। মডেল: অনন্যা, ছবি: খালেদ সরকার

বর্তমান সময়ে সংসারের জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় উপকরণ ফ্রিজ। বাসায় ফ্রিজ থাকলে প্রতিদিনের বাজার করার ঝামেলা থেকে মুক্তিসহ বিভিন্ন রকম সুবিধা পাওয়া যায়। এটাকে শুধু ঠান্ডা করার একটি যন্ত্র হিসেবেই ঘরে রাখা হয় না, সময় বাঁচাতে ও জীবনযাপনকে সহজ করতে এর তুলনা নেই। এখন খাবার সতেজ বা ভালো রাখার পাশাপাশি ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতেও ফ্রিজের ভূমিকা রয়েছে। 

ভিন্নতা

বাজারে সিঙ্গারের পাঁচটি ভিন্ন ভাগের রেফ্রিজারেটর পাওয়া যাচ্ছে। এগুলো হলো ডিপ ফ্রিজার, ডিরেক্ট কুল, নো ফ্রস্ট, সাইড বাই সাইড, সেমি কমার্শিয়াল সিরিজ। 

দেশের বাজারে স্যামসাং বাংলাদেশের টপ মাউন্ট, সাইড বাই সাইড, বটম মাউন্ট এবং আপরাইট ক্যাটাগরির মোট ৩০টি মডেলের রেফ্রিজারেটর রয়েছে। স্যামসাং ইলেকট্রনিকস বাংলাদেশের হেড অব বিজনেস (সিই ডিভিশন) শাহরিয়ার বিন লুৎফর বলেন, ‘আমাদের দৈনন্দিন জীবনে রেফ্রিজারেটর হচ্ছে মৌলিক একটি পণ্য। স্যামসাংয়ের টুইন কুলিং প্লাস ও অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়া ফিল্টারের মতো উদ্ভাবনী ফিচারের মাধ্যমে সাত দিন পর্যন্ত খাবার সতেজ রাখে। সম্প্রতি আমরা নতুন স্পেসম্যাক্স সিরিজের সাইড বাই সাইড রেফ্রিজারেটরগুলো দেশের বাজারে নিয়ে এসেছি। ভিন্নভাবে ডিজাইন করা রেফ্রিজারেটরগুলো ক্রেতাদের খাবার সংরক্ষণের ধারণা বদলে দেবে।’

আধুনিক প্রযুক্তি

বর্তমানে প্রায় সব ফ্রিজে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। ফ্রিজের মূল চালক হচ্ছে কম্প্রেসর। আধুনিক ফ্রিজ কম্প্রেসরে ইনভার্টার প্রযুক্তি থাকছে। ইনভার্টার থাকার কারণে ফ্রিজে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী হয়। ফলে বিদ্যুৎ বিল অনেক কম আসবে। আধুনিক ফ্রিজগুলোতে আরও রয়েছে স্মার্ট কন্ট্রোলিং ব্যবস্থা। রয়েছে আইওটি (ইন্টারনেট অব থিংস) প্রযুক্তি। প্রযুক্তির সহায়তায় ফ্রিজের খাবার লেভেল নিয়ন্ত্রণ করা হয়। স্যামসাং রেফ্রিজারেটরগুলোর বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে। টুইন কুলিং প্লাস প্রযুক্তি—দুটি কুলিং ফ্যান ও দুটি ইভাপোরেটর, দুর্গন্ধ ছড়ায় না, ৭০ শতাংশ আর্দ্রতা বজায় রাখে। স্মার্ট কনভারশন রয়েছে এতে। ডিজিটাল ইনভার্টার প্রযুক্তি, ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বিদ্যুৎ–সাশ্রয়ী। ব্যাকটেরিয়া প্রটেক্টরও আছে এসবে। কুল প্যাক দেয় সর্বোচ্চ ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত ব্যাকআপ। কুল সিলেক্ট/ফ্লেক্স জোন, বিল্ট-ইন স্ট্যাবিলাইজার, ডোর অ্যালার্ম ও ডিওডোরাইজিং ফিল্টার রয়েছে এই ফ্রিজগুলোতে। 

রেফ্রিজারেটর কেনার আগে জেনে নিন 

রেফ্রিজারেটর কেনার সময় ক্রেতাদের বিভিন্ন সুবিধা দেখে কেনা উচিত। বিশেষ করে দেখা উচিত ফ্রিজের ঠান্ডা করার প্রযুক্তি কেমন, সেটা। আর যে ফ্রিজের কম্প্রেসর যত ভালো, সে ফ্রিজ তত বেশি ভালো। তাই ফ্রিজ কেনার সময় কম্প্রেসরের কর্মক্ষমতা দেখে নেওয়া উচিত। দেখা উচিত ফ্রিজের বিল্ড কোয়ালিটি কেমন, সেটা। রেফ্রিজারেটর কেনার আগে দেখা উচিত তার বিক্রয়–পরবর্তী সেবা কেমন। বিক্রয়–পরবর্তী সেবার মান প্রতিটি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের আলাদা। কেউ বিক্রয়–পরবর্তী সেবা পাঁচ বছর দেয়, আবার কেউ ১৫ বছর। ওয়ারেন্টি ও গ্যারান্টির বিষয়টি ভালোভাবে বুঝে তার পণ্যটি কেনা উচিত। বর্তমানে বেশির ভাগ কোম্পানির রেফ্রিজারেটর কিস্তিতে কেনা যায়। কয় মাসের কিস্তি বা প্রতি মাসে কী পরিমাণ টাকা পরিশোধ করতে হবে, সেটা কেনার আগে ভালোভাবে জেনে নেওয়া উচিত। ফ্রি ডেলিভারি ও ইনস্টলেশন বিষয়ও ভালোভাবে জানা উচিত। সার্ভিস সেন্টারের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। আপনার শহরে আপনি যে ফ্রিজটি কিনছেন, তার সার্ভিস সেন্টার রয়েছে কি না, সেটা আগে দেখে নিন। এসব বিষয় ক্রেতারা ভালোভাবে জানলে কেনার পরে ঝামেলা এড়ানো সম্ভব। 

আসছে নানা সুবিধা

সামনে ঈদুল আজহা। এই ঈদে অনেকেই রেফ্রিজারেটর কেনার পরিকল্পনা করেছন। বাজারে পাওয়া যাচ্ছে নানা ব্র্যান্ডের রেফ্রিজারেটর। এসব ব্র্যান্ডের মধ্যে বহু যুগ ধরে গ্রাহকদের সেবা দিয়ে আসছে সিঙ্গারের রেফ্রিজারেটর। ক্রেতাসাধারণের কথা মাথায় রেখে সিঙ্গার ইতিমধ্যেই চালু করেছে ‘সিঙ্গার ঈদ ফ্রিজ ফিভার’ ক্যাম্পেইন। এই ক্যাম্পেইনে দেশজুড়ে ক্রেতাসাধারণ স্ক্র্যাচ কার্ডের মাধ্যমে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত ডিসকাউন্ট পাবেন। রেফ্রিজারেটর ক্রয়ে পাবেন নিশ্চিত ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত ডিসকাউন্ট। এ ছাড়া আগ্রহী ক্রেতারা মাত্র ৪ হাজার ৫০০ টাকা ডাউনপেমেন্ট দিয়ে রেফ্রিজারেটর ক্রয় করতে পারবেন।

দাম কেমন

সাধ্যের মধ্যে পছন্দমতো ফ্রিজ কেনার জন্য প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন অফার ও মূল্যছাড়ের ঘোষণা করে। বিভিন্ন কোম্পানির দোকান ঘুরে ফ্রিজের দরদাম তুলে ধরা হলো। বাজারে সিঙ্গারের ৯টি মডেলের ডিপ ফ্রিজ পাওয়া যাচ্ছে। ১২১ লিটার থেকে ৩৮০ লিটার ধারণক্ষমতাসম্পন্ন ফ্রিজগুলো পাওয়া যাচ্ছে ২২ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৩৫ হাজার টাকার মধ্যে। বাজারে সিঙ্গারের ২৪টি ডিরেক্ট কুল মডেলের রেফ্রিজারেটর পাওয়া যাচ্ছে। এসব রেফ্রিজারেটর ১৯ হাজার ৯৯০ টাকা থেকে ৪৪ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। নন ফ্রস্ট ক্যাটাগরির সাতটি মডেলের রেফ্রিজারেটর বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। এসব ফ্রিজের সর্বনিম্ন দাম ৪৫ হাজার ৯৯০ টাকা এবং সর্বোচ্চ মূল্য ৬৪ হাজার ৯৯০ টাকা। বাজারে আছে সিঙ্গারের তিনটি মডেলের সাইড বাই সাইড রেফ্রিজারেটর। রেফ্রিজারেটরগুলো পাওয়া যাচ্ছে ৭৯ হাজার ৯৯০ থেকে ১ লাখ ১ হাজার ৯৯০ টাকার মধ্যে। বাজারে সেমি কমার্শিয়াল সিরিজের তিনটি মডেলের রেফ্রিজারেটর পাওয়া যাচ্ছে, যেগুলোর দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ হাজার ৯৯০ থেকে ৩৮ হাজার ৯৯০ টাকার মধ্যে। 

স্যামসাংয়ের বেশ কয়েকটি মডেলের ফ্রিজ বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। বিভিন্ন আকারের ফ্রিজ বাজারে রয়েছে। দামেরও ভিন্নতা রয়েছে। ট্রান্সটেকের ১০০ লিটার থেকে বিভিন্ন আয়তনের ফ্রিজ পাওয়া যাচ্ছে। এর দাম ১৯ হাজার থেকে ৫৫ হাজার টাকার মধ্যে। 

ট্রান্সটেক ব্র্যান্ডের ফ্রিজ ২৭টি ব্যাংকে শূন্য শতাংশ ইন্টারেস্টে ১২ মাসের কিস্তিতে পাওয়া যাবে। দেশের বাজারে রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজেরের চাহিদার বড় একটি অংশ পূরণ করছে ওয়ালটন। বর্তমানে ফ্রস্ট (ডিরেক্ট কুল), নন-ফ্রস্ট রেফ্রিজারেটর এবং ডিপ ফ্রিজ উৎপাদন ও বাজারজাত করছে দেশীয় ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠানটি।

ওয়ালটন রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজারের বৈশিষ্ট্য হলো আকর্ষণীয় নকশা, বিদ্যুৎ–সাশ্রয়ী, ন্যানো হেলথ কেয়ার ও অ্যান্টি ফাঙ্গাল ডোর গ্যাসকেট প্রযুক্তির ব্যবহার, যা ফ্রিজের ব্যাকটেরিয়া, ধুলাবালির প্রবেশ রোধ এবং খাবার সতেজ ও দুর্গন্ধমুক্ত রাখে। ওয়ালটনের ন্যানো হেলথ কেয়ার ও ইনভার্টার টেকনোলজির গ্লাস ডোরের ফ্রস্ট রেফ্রিজারেটরে ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি। ওয়ালটন ফ্রিজের দাম ১০ হাজার থেকে শুরু। বর্তমান বাজারে আরএফএলের ভিশন ও ভিগো ব্র্যান্ডের বেশ কিছু মডেলের রেফ্রিজারেটর পাওয়া যাচ্ছে। বর্তমানে ৫০ লিটার থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৫৫৬ লিটারের ফ্রিজ রয়েছে ভিশন ও ভিগো ব্র্যান্ডে, যার দাম পড়বে ১০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৮৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। এ ছাড়া বাজারে ওয়ার্লপুল, হিটাচি, এলজি, তোশিবা, সনি-র‍্যাংগস, শার্প, মিনিস্টার, কনকা, হাইকো, যমুনাসহ বিভিন্ন কোম্পানির ফ্রিজ পাওয়া যাচ্ছে।

কোথায় পাবেন 

রাজধানী ঢাকায় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের দোকানসহ স্টেডিয়াম মার্কেট, মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোড, মিরপুর রোড, পান্থপথসহ জেলা শহরগুলোতে ফ্রিজ পাওয়া যায়।