ভ্যাপসা গরমে পানিশূন্যতা রোধে

গরমে পানিশূন্যতা রোধে মা ও শিশুকে পান করতে হবে পর্যাপ্ত পানীয়। মডেল: আয়াজ ও মীম। ছবি: অধুনা
গরমে পানিশূন্যতা রোধে মা ও শিশুকে পান করতে হবে পর্যাপ্ত পানীয়। মডেল: আয়াজ ও মীম। ছবি: অধুনা

এই সময়ে এই বৃষ্টি তো পরক্ষণে ভ্যাপসা গরম। এই ঘেমে ভিজে যাওয়া তো পরক্ষণেই বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়ার আশঙ্কা। এভাবে ঘেমে কারও হতে পারে পানিশূন্যতা, আবার কেউ আক্রান্ত হতে পারে সর্দি-কাশি, জ্বরে। তাই এ সময়ে মা ও শিশুকে সুস্থ রাখতে সবার বিশেষ যত্নবান হতে হবে। 

এ বিষয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের অধ্যাপক ডা. আল-আমিন মৃধা বলেন, বৃষ্টি বা ঘেমে ভিজে ঠান্ডা, জ্বর-সর্দি, পানিশূন্যতা কিংবা গরমে খাবার ঠিকমতো সংরক্ষণ না করলে অল্প সময়েই নষ্ট হয়ে যায় এবং সেসব খাবার গ্রহণে বদহজম, ডায়রিয়া হওয়ার আশঙ্কা থাকে। দুগ্ধদানকারী মায়েরা যেন পানিশূন্যতায় না ভোগেন, সেদিকে বেশি খেয়াল রাখতে হবে। নয়তো মা ও সন্তান দুজনেই পানিশূন্যতায় ভুগবে। 

বিশেষ করে মা ও শিশু ঘেমে গেলে সঙ্গে সঙ্গেই ঘাম মুছে ফেলতে হবে। বেশি বেশি ঘেমে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। আর পানিশূন্যতা দূর করতে মুখে খাওয়ার স্যালাইন, ডাবের পানি, গ্লুকোজের শরবত হতে পারে ভালো উপাদান। 

হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে গেলে চুল ও শরীর মুছে দিতে হবে এবং ভেজা কাপড় তাড়াতাড়ি পাল্টে বা প্রয়োজনে গোসলও করিয়ে দিতে পারেন। স্কুলগামী শিশুর ইউনিফর্ম প্রতিদিন না পারলেও অন্তত এক দিন পরপর ধুয়ে দিন। কর্মজীবী নারীরা, এমনকি যেসব মা সারা দিন ধরে ঘরের কাজ করেন, কায়িক পরিশ্রম হয় তাঁদের। ফলে পানিশূন্যতা তৈরি হতে পারে। সে কারণে পর্যাপ্ত পানীয় পান করতে হবে। ঘরে গ্লুকোজ কিনে রাখতে পারেন। তাৎক্ষণিকভাবে আপনাকে শক্তি দেবে, দুর্বলভাব কেটে যাবে। পানিশূন্যতা দূর হবে। একধরনের সতেজ ও ঝরঝরে ভাব আসবে। পানিশূন্যতা হলে মা ও সন্তান দুজনের শরীরে খারাপ প্রভাব পড়ে। এমনকি অভ্যন্তরীণ তো বটেই, বাহ্যিক ত্বকেও সেই ক্ষতিকর প্রভাবের ছাপ পড়ে। এ সময়ে আবহাওয়ার কারণে নিয়ম মেনে পর্যাপ্ত পানীয় পানের কোনো বিকল্প নেই। 

যেসব মা সন্তানকে দুগ্ধ পান করান

যেসব মা শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ান, তাঁদের দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। বেশি বেশি ঘাম হলে সন্তান বুকের দুধ কম পাবে। সঙ্গে দুগ্ধপানকারী সন্তানও ঘামলে তার পানিশূন্যতা তীব্র হতে পারে। তাই মাকে বেশি বেশি তরল–জাতীয় খাবার খেতে হবে। বেশি বেশি মুখে খাওয়ার স্যালাইন, ডাবের পানি, গ্লুকোজের শরবত দেওয়া যেতে পারে। তাহলে দুধপানকারী সন্তান পর্যাপ্ত দুধ পাবে। খাবারে শাকসবজি বেশি রাখতে হবে। ভাজা-পোড়া, বাসি খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। 

স্কুলগামী শিশুদের দিকে বিশেষ নজর

স্কুলগামী শিশুরা লাফালাফি, খেলাধুলা করতে পছন্দ করে। তাই এই সময়ে তাদের তীব্র পানিশূন্যতা হতে পারে। তাই তাদের স্কুলব্যাগে পানির বোতল নিশ্চিত করুন। সম্ভব হলে বেশি বেশি মুখে খাওয়ার স্যালাইন, গ্লুকোজ শরবত দিতে পারেন। এই সময়ে ভেজা ও স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ার কারণে ফাঙ্গাস, চুলকানিসহ ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। তাই ভালোভাবে শুকানো পোশাক পরাতে হবে। শিশুরা যেন নোংরা পানিতে হাঁটাহাঁটি না করে, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। 

লেখক: চিকিৎসক