হাঁটুর পেশির ব্যায়াম

হাঁটু শুধু আমাদের শরীরের ওজন বহন করে না, স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে ও সোজা হয়ে দাঁড়াতে, দৌড়াতে ও বসতেও সাহায্য করে। খেলাধুলা বা দৌড়াদৌড়ির সময় হাঁটু অনেক ধকল সহ্য করে।

নানা কারণে হাঁটুর ব্যথা হতে পারে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আঘাত একটি বড় কারণ। তবে বয়স বাড়ার সঙ্গে (৪০ বছর বয়সের বেশি) হাঁটুর ব্যথার সবচেয়ে বড় কারণ অস্টিওআর্থ্রাইটিস বা হাঁটুর ক্ষয়।

হাঁটুর অস্টিওআর্থ্রাইটিস বয়সজনিত ক্ষয়রোগ হিসেবে পরিচিত। তবে বয়স ছাড়াও বিভিন্ন কারণে হাঁটুর অস্টিওআর্থ্রাইটিস হতে পারে। যেমন ওজন বৃদ্ধি, হাঁটুর সন্ধিতে আঘাত, ভারী জিনিস তোলা, হাঁটু ভাঁজ করা, সিঁড়ি দিয়ে ক্রমাগত ওঠানামা করার কারণে হাঁটুর ওপর অনেক চাপ পড়ে। এ ছাড়া কার্টিলেজের ক্ষয়ের বংশগত কারণও থাকতে পারে।

শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন। অতিরিক্ত ওজনে হাঁটুর ওপর চাপ পড়ে। এ ক্ষেত্রে অ্যারোবিক ব্যায়াম ওজন কমাতে ও শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এর সঙ্গে খাবার-দাবারও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

খাদ্যাভ্যাস

ভাজাপোড়া খাবার, কেক, বিস্কুট প্রভৃতি শর্করাজাতীয় খাবার কম খাওয়া উচিত। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড (আখরোট বা তিসি বীজ), ভিটামিন সি (পেয়ারা, আনারস, পেঁপে, টমেটো), ভিটামিন-ই (সূর্যমুখীর তেল, পালংশাক, ব্রোকলি), ভিটামিন ডি (সালমন, চিংড়ি প্রভৃতি মাছ ও ডিম), বিটা-ক্যারোটেনযুক্ত (গাজর, টমেটো, ক্যাপাসিকাম, পালংশাক, পুদিনাপাতা, রাঙা আলু) খাবার বেশি খাওয়া ভালো।

নিয়মিত ব্যায়াম করুন:

হাঁটুর অস্টিওআর্থ্রাইটিস সাধারণত ঊরুর পেশিকে দুর্বল করে দেয়। তাই ঊরুর পেশি মজবুত করা প্রয়োজন। কারণ, এই পেশি হাঁটুর সন্ধিতে কিছুটা চাপ নেয় এবং হাঁটুকে ক্ষতির হাত থেকে বাঁচায়। পেশি মজবুত করার জন্য কিছু ব্যায়াম করতে হবে। মনে রাখবেন বেশির ভাগ বেল্ট বা হাঁটুর সাপোর্ট মাংশপেশিকে আরও দুর্বল এবং হাঁটুর ক্ষতি করে। এগুলো ব্যবহার না করাই উচিত।

  • সোজা হয়ে পা সোজা করে বসুন। তারপর একটি তোয়ালে রোল করে হাঁটুর নিচে রেখে হাঁটু দিয়ে তোয়ালেতে চাপ দিন। এভাবে ১০ সেকেন্ড থাকুন। শরীরের অন্যান্য অংশ স্বাভাবিক রাখুন এবং স্বাভাবিকভাবেই শ্বাস-প্রশ্বাস নিন। এভাবে অপর পায়ে করুন। এ রকম ১০ বার করুন।
  • প্রথমে সোজা হয়ে বসুন। পা দুটো অর্ধেক ভাঁজ করুন। এবার একটি পায়ের গোড়ালি দিয়ে মেঝেতে চাপ দিন। এভাবে ১০ সেকেন্ড থাকুন। এরপর অপর পায়ে করুন। এটি ১০ বার করুন।
  • প্রথমে একটি চেয়ারে বসুন। এরপর ধীরে ধীরে একটি পা সোজা করে ওপরে তুলতে থাকুন। পা-টি সোজা অবস্থায় এলে ১০ সেকেন্ড ধরে থাকুন। এরপর পা নিচে নামিয়ে দিন ও অপর পায়ে করুন। এভাবে ১০ বার করুন।
  • হাঁটু ভাঁজ করে অর্ধেক বসুন, আবার সোজা হয়ে দাঁড়ান। অর্ধ বসা অবস্থায় ১০ সেকেন্ড ধরে রাখুন। এভাবে ১০ বার করুন।

উম্মে শায়লা রুমকি, ফিজিওথেরাপি পরামর্শক, পিটিআরসি