কোরবানির মাংস সংরক্ষণ

মাংস সংরক্ষণ করুন সময় থাকতেই। মডেল: েলাপা, ছবি: নকশা
মাংস সংরক্ষণ করুন সময় থাকতেই। মডেল: েলাপা, ছবি: নকশা

ঈদুল আজহায় পশু কোরবানির বিষয় থাকে। তাই মাংস কাটা, প্যাকেট করা, মাংস বিলি করা ও বেঁচে যাওয়া মাংস সংরক্ষণ করাই মূল কাজ। বাড়ির ভেতর বেশ ব্যস্ত একটা সময় যায়। মাংস সংরক্ষণের আগে-পরে বেশ কিছু নিয়ম আছে। রান্নাবিদ সিতারা ফিরদৌসের কাছ থেকে জানা গেল সেই নিয়মকানুনগুলোই।

আগের প্রস্তুতি 

মাংস কাটার উপকরণ, যেমন দা, বঁটি, চাপাতি, ছুরি প্রভৃতি আগে থেকেই পরিষ্কার করে স্যাভলন দিয়ে ধুয়ে শুকিয়ে নিতে হবে। নইলে এগুলোর মাধ্যমে মাংসে জীবাণুর আক্রমণ হতে পারে এবং মাংস নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

যেসব জায়গায় মাংস কাটাকাটির কাজ করা হবে, আগে থেকেই সাবান ও স্যাভলন দিয়ে পরিষ্কার করে রাখুন। নইলে এসব জায়গাও জীবাণুর উৎস হয়ে দাঁড়াতে পারে। এ ছাড়া ধুলাবালির কারণে মাংস খেতেও খারাপ লাগবে।

যেখানে মাংস রাখা হবে (বড় গামলা ও ফ্রিজ), সে জায়গাও আগে থেকেই পরিষ্কার করুন ধুয়ে-মুছে। 

যে প্যাকেটে মাংস রাখা হবে, খেয়াল করুন সেটাও যেন থাকে পরিষ্কার ও শুকনা। 

সংরক্ষণ

মাংস ভাগ করা ও ফ্রিজে ওঠানোর কাজে খুব বেশি দেরি করা উচিত নয়। তবে বেশি তাড়াহুড়া করে গরম মাংস (কাটার পর যেমন থাকে) উঠিয়ে রাখাটাও ঠিক নয়।

মাংস ফ্রিজে ওঠানোর আগে বাড়তি রক্ত লেগে আছে কি না খেয়াল করুন। রক্ত লেগে থাকলে তা কিচেন টাওয়েল কিংবা পাতলা ও পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুছে নিন। তবে যে মাংস ফ্রিজে উঠিয়ে রাখা হবে, তা পানিতে ভেজানো যাবে না।

মাংসের প্যাকেটে লেবেল করে বা ট্যাগ লাগিয়ে রাখতে পারেন। যেমন কিমা, কলিজা, মগজ ইত্যাদি। এতে পরবর্তীকালে খুঁজে বের করতে সুবিধা হয়।

এমনভাবে মাংস প্যাক করা উচিত, যাতে বের করার পর সেই প্যাকেটের মাংস একদিনেই রান্না করা হয়। পরিবারের সদস্য সংখ্যা অনুযায়ী বুঝেশুনে প্রতিটি প্যাকেটের জন্য পরিমাণ নির্ধারণ করুন। কারণ একবার প্যাকেট ফ্রিজ থেকে বের করে পানিতে ভিজিয়ে মাংস ছুটিয়ে কিছুটা রান্না করার পর বাকি মাংস উঠিয়ে রাখতে হয়। এতে করে মাংসের স্বাদ ও গুণগত মান নষ্ট হয়। জীবাণু সংক্রমণের ঝুঁকিও বাড়ে। 

মাংসের প্যাকেট এমনভাবে করতে হবে, যেন প্যাকেটের মোটামুটি অর্ধেকটা অংশ খালি থাকে। প্যাকেটগুলো খামের মতো সমান ও সুন্দর করে ভাঁজ করতে চেষ্টা করুন, এবড়োখেবড়োভাবে নয়। 

ফ্রিজে একটা প্যাকেট রেখে তার ওপর খবরের কাগজ বিছিয়ে দিন। এর ওপর আরেকটি প্যাকেট রাখুন। এভাবে প্রতিটি প্যাকেট স্তরে স্তরে সাজিয়ে রাখলে একটা আরেকটার সঙ্গে লেগে যায় না। 

ফ্রিজের ওপরের দিকের তাকে মগজ, কিমা, কলিজা, ছোট মাংস ইত্যাদি রাখুন। বড় হাড়ওয়ালা মাংসের নিচে চাপে পিষ্ট হতে পারে, এমন কিছু নিচে না রাখাই ভালো। বড় মাংস ও হাড়ের প্যাকেটগুলো রাখুন নিচের দিকে। কোন প্যাকেটটা আগে বের করা লাগবে আর কোনটি পরের দিকে, তা-ও মাথায় রাখুন প্যাকেট গোছানোর সময়। 

খুব আঁটসাঁট করে মাংসের প্যাকেট ফ্রিজে রাখা যাবে না। পরে বের করতে সমস্যা হতে পারে। ফ্রিজ টইটম্বুর করে ফেলাও ঠিক নয়।

 ডিপফ্রিজের সবচেয়ে নিম্ন তাপমাত্রায় মাংস সংরক্ষণ করা উচিত। সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা হলে প্রায় ১ বছর পর্যন্ত মাংস ভালো থাকে। ডিপফ্রিজের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় মাংস ৫-৭ মাস ভালো থাকে।