ডেঙ্গুতে শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা

ডেঙ্গুর ভাইরাসবাহী মশা কামড়ানোর দুই থেকে সাত দিন পর ডেঙ্গু জ্বর শুরু হয়। জ্বর, মাথাব্যথা, চোখব্যথা, অরুচি, বমি বমি ভাব, হাড়, পেশিতে ব্যথা, দুর্বলতা ইত্যাদি হলো ডেঙ্গুর প্রাথমিক লক্ষণ। এত দিনে সবাই জেনেছেন যে এই জ্বর পাঁচ থেকে সাত দিন পর্যন্ত স্থায়ী হওয়ার পর শুরু হয় জটিলতা (ক্রিটিক্যাল ফেজ)। এই সময় বা তারপর যেকোনো রোগীর শ্বাসকষ্ট শুরু হতে পারে, ফুসফুসের পর্দার নিচে পানি জমতে পারে। দেখা দিতে পারে নানা ধরনের শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত জটিলতা। এমনিতেও টিপিক্যাল ডেঙ্গু/ক্ল্যাসিক্যাল ডেঙ্গুতে জ্বরের সঙ্গে সর্দি-কাশি থাকতে পারে।

ডেঙ্গু জ্বরের একটি জটিলতা হলো প্লাজমা লিকেজ বা রক্তনালি থেকে প্লাজমা বাইরে বেরিয়ে আসা। শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে, যেমন ফুসফুস ও পর্দার মাঝে (প্লুরাল ইফিউশন) কিংবা পেটে সামান্য পরিমাণ পানি জমতে পারে। কিন্তু বেশি প্লাজমা লিকেজ হলে রক্তচাপ কমে যায় ও রোগী শকে চলে যায়। বিভিন্ন অঙ্গে রক্ত সরবরাহ কমে যেতে পারে ও মাল্টি অর্গান ফেউলিউর হতে পারে। ফুসফুস, কিডনি, হার্ট ইত্যাদি এর ব্যতিক্রম নয়। হার্ট ফেইলিউর বা কিডনি ফেইলিউর হলে বুকে পানি জমা, শ্বাসকষ্ট, অক্সিজেন সরবরাহ কমে যাওয়া ইত্যাদি জটিলতায় পড়তে পারে রোগী। ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে তাই শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা, শ্বাসের গতি বেড়ে যাওয়া অসম্ভব নয়।

লক্ষণগুলো কী?

● দ্রুত শ্বাসপ্রশ্বাস ● শিশুদের পাঁজরের খাঁচা ● ভেতর দিকে ঢুকে যাওয়া ● শ্বাসের শব্দ শোনা ● পেট বা মুখ ফুলে যাওয়া ● গলার কাছে জুগুলার ভেইন ফুলে ওঠা ● কাশি

সতর্কতা
বুকে পানি জমা বা শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে দ্রুত বুকের এক্স–রে, ইসিজি ইত্যাদি পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে হবে। হিসাব করে সঠিক স্যালাইন সঠিক মাত্রায় দিতে হবে, ২৪ ঘণ্টায় তরল গ্রহণ ও প্রস্রাবের পরিমাণের পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব রাখতে হবে। এগুলো নিবিড় পর্যবেক্ষণ ছাড়া সম্ভব হয় না বলে রোগীকে আইসিইউ বা এইচডিইউতে রেখে চিকিৎসা করা উচিত। এ ছাড়া ডেঙ্গু জ্বরে প্লাটিলেট কমে গেলে বা অন্য কোনো কারণে–অকারণে অতিরিক্ত স্যালাইন, রক্ত, প্লাটিলেট, ফ্রেশ ফ্রোজেন প্লাজমা ইত্যাদি ব্যবহারের জন্য অস্থির হবেন না। কখন কী করতে হবে তার জন্য আপনার চিকিৎসকের ওপর ভরসা রাখুন। 

ডা. মো. আজিজুর রহমান, বক্ষব্যাধি ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ

প্রশ্ন-উত্তর
প্রশ্ন:
আমার বাবার বয়স ৪৯। ওজন ৬৩ কেজি। তিনি গরমে প্রচুর ঘামেন, যা স্বাভাবিক নয়। প্রয়োজনীয় পরামর্শ পেলে উপকৃত হব।

উত্তর: হাইপারথাইরয়েড রোগীরা বেশি ঘামেন। দীর্ঘদিনের ডায়াবেটিসের রোগীর স্নায়বিক সমস্যার কারণে অতিরিক্ত ঘাম হতে পারে কখনো কখনো। উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা ইত্যাদিও বেশি ঘামের কারণ। স্থূলতাও একটি কারণ। চিকিৎসকের পরামর্শে সঠিক কারণটি নির্ণয় করতে হবে। 

আ ফ ম হেলালউদ্দিন, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ 

আগামীকাল পড়ুন: নারীর থাইরয়েড সমস্যা