কনট্যুরিং আরও সুন্দর মুখ

নিজেকে আরেকটু সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে মেকআপ করেই যাচ্ছেন, মন তবু ভরছে না। ভাবছেন, কপালটা বেশি বড়। কিংবা, নাকটা আরেকটু খাড়া হলে কী হতো? ইশ্, চোয়াল তো বোঝাই যাচ্ছে না। এমন সব অস্বস্তি মেটাতেই কনট্যুরিংয়ের জন্ম। এটি মেকআপের বিশেষ একটি কৌশল, যা চেহারাকে একটি আদর্শ কাঠামোতে নিয়ে আসে। 

কনট্যুর ব্যবহারের সময় শুধু বাদামি আর হাইলাইটারের সাদা শেড চেহারার কোমলতা কমিয়ে আনে। তাই ত্বকে সতেজ ভাব আনতে এই দুই শেডের মধ্যে ব্যবহার করুন ব্লাশন। এরপর ভালোভাবে ব্লেন্ড করুন।
কনট্যুর ব্যবহারের সময় শুধু বাদামি আর হাইলাইটারের সাদা শেড চেহারার কোমলতা কমিয়ে আনে। তাই ত্বকে সতেজ ভাব আনতে এই দুই শেডের মধ্যে ব্যবহার করুন ব্লাশন। এরপর ভালোভাবে ব্লেন্ড করুন।

কনট্যুরিং কী

সৌন্দর্যচর্চাকেন্দ্র পারসোনার পরিচালক নুজহাত খানের সঙ্গে কথা বলছিলাম এ নিয়ে। কথায় কথায় জানালেন, চিরাচরিতভাবেই ওভাল বা ডিম্বাকৃতির মুখকেই সবচেয়ে সুন্দর আকৃতি হিসেবে মানা হয়। এ ধরনের চেহারায় সাধারণত কপালটা গোল, চোখ বড় আর নাক খাড়া হয়। কোনো মেকআপ ছাড়াই দেখতে ভালো লাগে। কিন্তু সবার চেহারা তো এক রকম নয়। কারও চেহারা চৌকো, কারও তিন কোনা, মানে কপাল চওড়া কিন্তু চিবুক খুব সরু। কারও চেহারা পানপাতার মতো, কারও গোল। মেকআপের শেড ব্যবহার করে যেকোনো আকৃতির চেহারাকে ওভাল বা মানানসই আকৃতিতে রূপান্তর করার জাদুই হলো কনট্যুরিং। 

কনট্যুরিং মানেই কাটাকুটি নয়

অনেকের ধারণা, কনট্যুরিং মানেই গাল কেটে চিকন করা, নাক কেটে সরু করা, থুতনি কেটে চোয়াল বের করা। মোটেই তা নয়। কনট্যুরিংয়ের কাজ মূলত চেহারায় আলো–ছায়া ফেলার মতো। বেমানান প্রকট অংশকে গাঢ় শেডে ঢেকে সুন্দর অংশকে আলোয় বের করে আনার মতো। এ জন্যই কনট্যুরিংয়ের সঙ্গে অবধারিতভাবে হাইলাইটের কথা চলে আসে।

কনট্যুর করে মুখকে পছন্দের অবয়বে আনবেন, সুন্দর অংশটুকু উজ্জ্বল করবেন আর খেয়াল রাখবেন খুব ভালোভাবে যেন সবকিছু মিশে যায়। মুখের এদিকে–ওদিকে বেমানান শেড প্রকট হয়ে থাকা কিন্তু কনট্যুরিং নয়। 

মডেল: শিখা, ছবি: নকশা
মডেল: শিখা, ছবি: নকশা

কীভাবে কনট্যুর করবেন 

ধরা হয়, কপাল, গালের মধ্যবিন্দু আর চোয়াল ছুঁয়ে চিবুক পর্যন্ত ইংরেজি 3 আঁকতে পারাটাই কনট্যুরিংয়ের প্রধান শর্ত। কথাটা ঠিক, আবার ঠিক নয়। কারণ, চেহরার ভাঁজ অনুযায়ী কীভাবে থ্রি আঁকতে হবে, এটা বোঝা খুব জরুরি। নুজহাত খানের পরামর্শ হলো, প্রথমে নিজের চেহারার আকৃতি বুঝুন। যেমন আপনার চেহারা চৌকো হলে কপালের ওপরের অংশ, গালের দুপাশ আর মাঝ বরাবর কনট্যুর করাই যথেষ্ট। চেহারা পানপাতার মতো হলে কপালের দুই পাশ, গালের প্রায় অর্ধেক আর চিবুকটা দুই পাশে কনট্যুর করতে হবে। গোল চেহারার জন্য গালের দুপাশে কোনাকেও কনট্যুর করতে হবে। চিবুক, কপাল ও চোখের নিচে হাইলাইটার ব্যবহার করুন। 

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো নাক। নাকের দুপাশে কনট্যুর করলে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে, সেটি যেন ভ্রু পর্যন্ত পৌঁছায়। কারণ, কপাল, ভ্রু আর নাক—এই তিনের সামঞ্জস্য আনতে না পারলে যতই মেকআপ করুন, ভালো দেখাবে না। 

ক্রিম নাকি পাউডার

সাধারণ মেকআপের জন্য পাউডার কনট্যুর যথেষ্ট। কিন্তু ভারী মেকআপের জন্য প্রাইমারের পরে প্রথমে ক্রিম কনট্যুর করবেন, তারপর তা ফাউন্ডেশনের সঙ্গে খুব ভালোভাবে মিশিয়ে (ব্লেন্ড) নেবেন। সবশেষে আবার পাউডার দিয়ে কনট্যুর করে নিন। বোঝা যায় এমন ধাপে নিয়ে আসতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, কনট্যুর চেহারার চেয়ে বড়জোর দুই শেড গাঢ় হবে। কনট্যুর প্যালেটের পাশাপাশি আজকাল ব্রোঞ্জারও পাওয়া যায়, তা ব্যবহার করতে পারেন। ব্রোঞ্জারে গাঢ় ও উজ্জ্বল—দুটি শেডই আনা সম্ভব।