মায়ের বুকের দুধ বাড়ানোর উপায়

অলংকরণ: আরাফাত করিম
অলংকরণ: আরাফাত করিম

অনেক মায়ের স্তনে বাচ্চার জন্য দুধের পরিমাণ কম থাকে অর্থাৎ বাচ্চা যত চেষ্টাই করুক না কেন বুকের দুধ তার মুখে কম যায়। দুধ না পেলে বাচ্চার ক্ষুধা মেটে না, চিৎকার ও কান্নাকাটি করে। বাচ্চা অপুষ্টিতে ভোগে। বুকে দুধ কম থাকলে হাত দিয়ে দুধ পাম্প করার চেষ্টা করতে হবে। এটাই সবচেয়ে ভালো উপায় বুকে দুধ আনতে চাইলে।

এ ছাড়া বাজারে বর্তমানে কিছু পাম্প করার মেশিনও পাওয়া যায় সেগুলোও কার্যকারী। প্রোটিন বা ক্যালরির পরিমাণ বাড়িয়ে দিলেই বুকে দুধ আসবে—এটা ভুল ধারণা। তবে অবশ্যই বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর সময় শরীরের চাহিদার প্রতি খেয়াল রেখে মাকে সুষম খাবার খেতে হবে। প্রচুর পরিমাণে পানি, শাকসবজি, ফলমূল, মাছ (সামুদ্রিক মাছ নয়) এবং উপকারী চর্বিযুক্ত খাবার খেতে হবে। এতে মায়ের স্তনে দুধের পরিমাণ বাড়বে।

প্রতিটি শিশুর চাহিদা আলাদা। কেউ কেউ অল্প করে বারবার খেতে চায় আবার কেউ কেউ অনেকক্ষণ ধরে খায়। শিশুকে প্রথমে একটি স্তনের দুধ খাইয়ে শেষ করে, তারপর আরেকটি স্তন তার মুখে দিতে হবে। শিশুকে সময় বেঁধে নয় বরং বারবার এবং যতবার শিশু চায়, ততবারই দুধ দিতে হবে। ধৈর্য ধরে খাওয়াতে হবে, খাওয়া শেষের আগেই সরিয়ে নেওয়া উচিত নয়। কারণ, বাচ্চা দুধ টানলে মায়ের মস্তিষ্কের ভেতরের পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে প্রোলাক্টিন হরমোন নিঃসৃত হয় যা বেশি বেশি দুধ তৈরির উদ্দীপনা জাগায়।

বাচ্চা যত বেশি দুধ টানবে তত বেশি হরমোন নির্গত হবে এবং তত বেশি দুধ উৎপাদিত হবে। তাই বুকের দুধ তৈরির একমাত্র উদ্দীপনা হলো শিশুর বুকের দুধ টানা। শিশু বুকের দুধ পাচ্ছে না বলে তাকে ফর্মুলা খাবার দেওয়া যাবে না। এতে মায়ের দুধ আরও কমে যাবে এবং শিশুর বুকের দুধ টানার অভ্যাস ও চলে যাবে। কোনো অবস্থায় শিশুর মুখে বোতল বা চুষনী দেওয়া উচিত নয়। এর ফলে শিশু তার মায়ের স্তনের বোঁটা মুখে নিতে চাইবে না। শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি খাওয়া উচিত নয়। এতে বুকের দুধ কমে যেতে পারে। তাই এ সময় অন্য কোনো ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

লেখক: আবাসিক চিকিৎসক, প্যাথলজি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।