ডেঙ্গু এনকেফালোপ্যাথি

ডেঙ্গু জ্বর একটি ভাইরাসজনিত রোগ এবং অন্যান্য ভাইরাস জ্বরের মতো এই জ্বরও কিছু উপসর্গভিত্তিক চিকিৎসায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সেরে যায়। তবে অনেক সময় তীব্র সংক্রমণের কারণে হাজারে পাঁচজনের মতো রোগীর কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র আক্রান্ত হতে পারে। এর ফলে পরিস্থিতি জটিল হয়ে পড়তে পারে। ডেঙ্গুজনিত অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর একটি অন্যতম কারণ হলো এনকেফালোপ্যাথি।

এনকেফালোপ্যাথি কেন হয়

• মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ

• মস্তিষ্কের রক্তনালিতে প্রতিবন্ধকতা

• রক্তে সোডিয়াম লবণ শূন্যতা

• যকৃৎ অকার্যকর হয়ে পড়া

লক্ষণ

ডেঙ্গুর অন্যান্য সাধারণ লক্ষণগুলোর সঙ্গে তীব্র মাথাব্যথা, স্থান-কাল-পাত্র চিনতে না পারা, অসংলগ্ন আচরণ, খিঁচুনি অথবা অচেতন হয়ে পড়লে ডেঙ্গু এনকেফালোপ্যাথি হয়েছে বলে ধারণা করতে হবে।

পরীক্ষা-নিরীক্ষা

ডেঙ্গুর অন্যান্য সাধারণ পরীক্ষার পাশাপাশি এনকেফালোপ্যাথি সন্দেহ করলে নিম্নোক্ত পরীক্ষাগুলো দ্রুত করতে হবে

• রক্তের সোডিয়াম দেখার জন্য সিরাম ইলেকট্রোলাইট

• যকৃতের কার্যকারিতা দেখার জন্য লিভার এনজাইম পরীক্ষা

• মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ অথবা প্রতিবন্ধকতা দেখতে মাথার সিটি স্ক্যান বা এমআরআই

চিকিৎসা

• শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা ঠিক রাখা। প্রয়োজনে আইসিইউতে নিয়ে যন্ত্রের সাহায্যে অক্সিজেন দেওয়া

• মস্তিষ্কের চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে

• সঠিক মাত্রায় শিরাপথে স্যালাইন দেওয়া

• শরীরের সঙ্গে মাথা ৩০ ডিগ্রি অবস্থানে রাখা

• শরীরে অতিরিক্ত কার্বন ডাই-অক্সাইড যাতে জমতে না পারে, সে ব্যবস্থা করা। প্রয়োজনে ভেন্টিলেটরের মাধ্যমে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যবস্থা করা

• কিছু ক্ষেত্রে শিরাপথে স্টেরয়েড দেওয়ার দরকার হতে পারে

• শরীরে অতিরিক্ত পানি জমা হলে বের করার ব্যবস্থা করা

• রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ঠিক রাখা

• রক্তে লবণ ও অ্যাসিড-ক্ষারের মাত্রা ঠিক রাখা

• খিঁচুনি হলে প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া

• সুপারইমপোজড বা ডেঙ্গুর ওপর আবার ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হলে উপযুক্ত ও সঠিক অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার

• নিয়মিত কোষ্ঠ পরিষ্কারের জন্য ল্যাকটুলোজ দিতে হবে

ডেঙ্গু এনকেফালোপ্যাথির চিকিৎসা সঠিক সময়ে শুরু করতে না পারলে জীবন সংশয় হতে পারে। তবে এ সময় অন্যান্য নানা কারণে মস্তিষ্ক ও কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র আক্রান্ত হতে পারে। কাজেই সেসব কারণও মাথায় রেখে চিকিৎসা দিতে হবে।

 আগামীকাল পড়ুন: ভেষজ পানীয়