ভেষজ পানির গুণাগুণ

প্রতিদিন আমাদের অন্তত ৮ গ্লাস পানি পান করা উচিত। কিন্তু এই পানির সঙ্গে কিছু উপাদান মেশালে তা হয়ে ওঠে পুষ্টিকর ও শক্তিবর্ধক। তখন একে বলে ডিটক্স ওয়াটার বা ডিটক্স পানি। তাজা ফল, সবজি ও ভেষজ উপাদান টুকরো করে কেটে স্বাভাবিক তাপমাত্রায়, হালকা গরম বা শীতল পানিতে নির্দিষ্ট সময় ভিজিয়ে রেখে এই মিশ্রণ তৈরি করা হয়।

•  ডিটক্স পানি সারা দিন শরীরকে সতেজ ও শীতল রাখতে সাহায্য করে।

•  শরীর থেকে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ও বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে সহায়ক।

•  শরীরের মেদ কোষগুলোর নিষ্কাশনে সাহায্য করে এটি। খাবার হজমে সাহায্য করে ও বিপাক বাড়ায়।

•  যকৃৎ ও ত্বকের জন্য ডিটক্স পানি উপকারী। প্রদাহ কমাতেও এটি সহায়ক।

•  এই পানিতে যে ফল মেশানো হয়, তা মিষ্টি বা চিনির প্রতি আগ্রহ কমায়, রুচি বাড়ায়।

•  ফল ও সবজির ভিটামিন, খনিজ ও অন্যান্য গুণ থাকলেও এতে ক্যালরি বেশি থাকে না।

•  উদ্বেগ ও বিষণ্নতা কমাতেও উপকারে আসে ডিটক্স পানি।

উপকারী ও জনপ্রিয় কিছু ডিটক্স পানি

•  আদা ও লেবু: এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে এক ইঞ্চি পরিমাণ আদাকুচি ও আধখানা লেবুর রস মিশিয়ে খালি পেটে পান করুন।

•  লেবু ও পুদিনা পাতা: ১৫ থেকে ২০টি পুদিনা পাতা, পাতলা করে কাটা লেবুর ৫ বা ৬টি টুকরো বা আধখানা লেবুর রস ৫০০ মিলিলিটার পানিতে ভিজিয়ে ফ্রিজে রেখে দিন। সকালে খালি পেটে বা দিনে দুই থেকে তিনবার পান করতে হবে।

•  লেবু, শসা ও পুদিনা পাতা: ৮ কাপ পানিতে একটি আধখানা লেবুর রস ও ওই পরিমাণ লেবু কুচি করে কেটে মিশিয়ে দিতে হবে। তারপর আধখানা শসা কুচি করে ৭টি পুদিনা পাতাসহ ওই পানিতে দিয়ে ২–৩ ঘণ্টা রেখে পান করুন।

•  আপেল, দারুচিনি: ১ লিটার পানিতে একটি আপেল স্লাইস করে কেটে এক টেবিল চামচ দারুচিনি দিয়ে কয়েক ঘণ্টা রেখে ঘুমানোর আগে পান করলে শরীরের চর্বি কমে ও বিপাকক্রিয়া ভালো হয়।

•  চিয়া সিড ও লেবু: আধ চা–চামচা চিয়া সিড এক কাপ পানিতে এক ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখলে যে জেল তৈরি হবে, তাতে এক চা–চামচ লেবুর রস ও আরও পানি মিশিয়ে নেড়ে পান করুন। এতে তন্তু বা আঁশ থাকায় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।

এ ছাড়া ডিটক্স পানি তৈরিতে স্ট্রবেরি, কমলা, সাইট্রাস ফলের খোসা, জাম্বুরা, বিট ইত্যাদি ব্যবহার করা যায়।

লেখক: পুষ্টিবিশেষজ্ঞ