ছোট নীড়ে উৎসবের আবহ

সৃজনশীলতার ছোঁয়ায় ঘরে আনা যায় উৎসবের আমেজ। কৃতজ্ঞতা: রত্না চৌধুরী, ছবি: নকশা
সৃজনশীলতার ছোঁয়ায় ঘরে আনা যায় উৎসবের আমেজ। কৃতজ্ঞতা: রত্না চৌধুরী, ছবি: নকশা

মণ্ডপ সাজানোর তোড়জোড় জানান দিচ্ছে, চলে এসেছে শারদীয় দুর্গোৎসব। দিন যতই যাচ্ছে, উৎসবের প্রতীক্ষাও ততটা কমছে, কিন্তু কমছে না আয়োজন। এই আয়োজনের শুরু হয় নিজ অন্দর থেকে।

ঘর একটু ছোট হলেও দুর্গাপূজার সময় এ নিয়ে চিন্তার কোনো কারণ নেই। দামি আসবাব ব্যবহার না করেও পূজার দিনগুলোয় নিজের ঘরটি সাজাতে পারেন সৃজনশীলতায়। যেমনটি করেছেন আলোকচিত্রী রত্না চৌধুরী। তাঁর স্বামী রূপম চৌধুরীও একজন শিল্পী।

‘সৃজনশীল পেশার সঙ্গে জড়িয়ে আছি বলেই হয়তো ঘরের প্রতিটি কোণেই শৈল্পিকতার ছোঁয়া রাখার চেষ্টা করি,’ ঢাকার নিজেদের ফ্ল্যাট সাজানোর ব্যাপারে বললেন রত্না চৌধুরী।

অনেকেই মনে করেন, ঘর ছোট হলে বুঝি তার সৌন্দর্য বাড়ানো দায়। কিন্তু রত্না চৌধুরী তাঁর ১ হাজার ১০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাটবাড়ি সাজিয়েছেন নান্দনিকতার ছোঁয়ায়। পূজার ছোঁয়া আনতে ঘরের প্রবেশদ্বারে রেখেছেন দেবীর ছবি। দরজার সঙ্গে ঝুলিয়ে দিয়েছেন সাবেকি আমলের ঘণ্টা।

প্রবেশদ্বারের পরেই বসার ঘর। এটি খাবারঘরের সঙ্গে মেলানো—খানিকটা লম্বা। পূজার জন্য এই ঘর একটু আলাদাভাবেই সাজিয়েছেন রত্না চৌধুরী। শারদীয় দুর্গাপূজা মানেই যেন শুভ্রতা, তাই বসার ঘরে সাদার প্রাধান্য। সাদা দেয়ালে সাদা পর্দা তাঁর প্রথম পছন্দ। তবে অন্যান্য আসবাবে আছে নানা রঙের ছটা। রত্না চৌধুরী বলেন, বসার ঘরে সব সময়ে বড় সোফা থাকতে হবে—এমন নয়; কাঠের খোদাই করা ছোট ছোট টুল আরামদায়ক হতে পারে। পাশাপাশি বেশ সৃজনশীলও। আবার বাঁশের তৈরি চেয়ারের পেছনে শিল্পীর তুলিতে আঁকা লাল বা রঙিন কোনো ছবি রেখে দিলে তা নান্দনিক হয়ে ওঠে। বসার গদিটি হতে পারে লালরঙা।

ঘরের কোণে ছোট টুলে বা পাশের করিডরে পাথর, কাঁসা, পিতল বা মাটির মূর্তি রাখতে পারেন অনায়াসে। এতে পূজার সময়ে ঘরে মন্দিরের একটি আবহও তৈরি হয়।

মূর্তিময় ছোট কোণ
মূর্তিময় ছোট কোণ

পূজায় কাঁসার বাসনপত্রের ব্যবহার হয় অনেক। শুধু খাওয়াদাওয়ার জন্যই নয়, ঘর সাজাতেও ব্যবহার করা যায় এগুলো—এমনটাই মনে করেন রত্না চৌধুরী। তাঁর কাছে থাকা প্রায় ১০০ বছরের পুরোনো কাঁসার তৈজসপত্রও তিনি ব্যবহার করেছেন ঘরসজ্জায়। কাঁসার ছোট বাটিতে সামান্য পানির সঙ্গে কিছু ফুলের পাপড়ি ফেলে এর পাশে প্রদীপদানিতে জ্বালিয়ে দিতে পারেন কিছু প্রদীপ। পূজা বলে কথা, তাই ঘরে কোণে ফুলদানিতে লাল কৃষ্ণচূড়া, সাদা দোলনচাঁপা বেশ মানিয়ে যাবে। আবার চাইলে মাটির বড় ফুলদানির ওপর রেখে দিতে পারেন বিভিন্ন আকারের সাদা শঙ্খ।

এবার আসা যাক খাবারঘরে। খাবারঘর ছোট হলে গোল টেবিল ব্যবহার করা ভালো। টেবিলের ফুলদানিতে পছন্দের একগুচ্ছ ফুল থাকলে সজীবতা আসে। কাঁসা ও পিতলের গ্লাস, জগ ব্যবহারের পাশাপাশি কাঠ কিংবা নারকেলের আইচা, ঝিনুকের চামচ বা সিরামিকের ছোট বাটি ব্যবহার করলে তা অনেকটাই ভিন্নতা নিয়ে আসবে।