সেলাইয়ের জন্য

বাক্সে থাকুক রঙিন সুতা। ছবি: নকশা
বাক্সে থাকুক রঙিন সুতা। ছবি: নকশা

‘আমি নিজ হাতে এই ওয়ালম্যাট বা চেয়ারের কভারটা করেছি’—আজকাল এমন কথা কমই শোনা যায়। একটু অতীতে ফিরে যাই। আমার নানুর দুপুরের পরের সময়কার সঙ্গী ছিল সেলাইয়ের সরঞ্জাম আর গল্পের বই। আজকাল এ দুয়ের মধ্যে আমাদের বিচরণ কম। শখের সেলাই বা অবসরের সেলাই না থাকলেও প্রয়োজনের সেলাই কিন্তু এখনো আছে। তাই সেলাইয়ের সরঞ্জাম যেন প্রয়োজনের সময় সহজেই পাওয়া যায়, সেভাবেই রাখা উচিত।

গুছিয়ে রাখুন বাক্সে

সেলাইয়ের সরঞ্জাম গুছিয়ে রাখতে দরকার সুবিধামতো আকারের একটি বাক্স। প্লাস্টিকের বাক্স হতে পারে, কার্টনও হতে পারে। ঢাকার গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের বস্ত্র পরিচ্ছদ ও বয়নশিল্প বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদা আক্তার জানালেন, এমন জায়গায় এটি রাখতে হবে, যেন সহজেই পাওয়া যায় কাজের সময়। আর্দ্র জায়গায় নয়, কারণ তাতে ছত্রাক সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে। শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন। শিশুরা কৌতূহলবশত বাক্সটি নাড়াচাড়া করতে গিয়ে বাক্সের সরঞ্জামে আঘাত পেতে পারে। কাজ শেষে সব সরঞ্জাম আবার রেখে দিন জায়গামতো। তাহলে পরবর্তী সময়ে আবার সহজে খুঁজে পাবেন। নিয়মিত ব্যবহার করলে সেলাই বাক্সে ধুলা জমে না।

যা থাকবে বাক্সে

ছোট-বড় সুই আর নানা রঙের সুতা তো রাখবেনই। রিপু, তালি—এসব কাজের জন্য ছোট ও চিকন সুই লাগে, আবার কাঁথা সেলাইয়ের জন্য লাগে ভারী সুই। প্লাস্টিক বা বেতের পাটি হয়তো সেলাই করবেন। সেই সময়ও প্রয়োজন হবে বড় ও মোটা সুইয়ের, যাতে মোটা সুতা পরানো যায়। নানা ধরনের কাঁচিও রাখুন। ছোট কাঁচি দিয়ে সুতা কাটতে পারবেন, বড় কাঁচি দিয়ে কাপড়। জিগজ্যাগ কাঁচি, বোতামঘরের জন্য কাঁচি, সেলাই খোলার কাঁচিও রাখুন। সেলাই খোলার সুইও রাখতে পারেন। মাপের জন্য রাখুন গজ ফিতা আর স্কেল। দাগ দেওয়ার জন্য বিভিন্ন রঙের চক ও পেনসিল রাখতে পারেন। পেনসিলের দাগ মুছতে রাবার রাখা যায়। কার্বন কাগজ, ট্রেসিং পেপার রাখতে পারেন নকশা তুলতে। বোতাম, টিপ বোতাম আর হুক রাখুন। আলপিনও রাখুন। কৃত্রিম তন্তুর তৈরি কাপড়ের দুটি পরত সমানভাবে রাখতে আলপিন কাজে লাগবে বলে জানালেন মাহমুদা আক্তার।

ছবি: নকশা
ছবি: নকশা

আঁকার কাঠি রাখতে পারেন, পাঞ্জাবি বা কামিজের আকৃতি ঠিক করতে কাজে লাগবে। শার্টের কলার বা পায়জামার নিচের অংশে ভারী করতে বকরম রাখা যায়। হাতে সেলাই করার জন্য ফ্রেম ও আঙুলের টুপি রাখা ভালো। স্টিলের টুপি কিনতে পারেন, কিংবা কাপড় দিয়ে একটু ভারী করে টুপি তৈরি করে নিতে পারেন।

সেলাইয়ের জন্য আরও কিছু
সেলাই মেশিন আজও আছে অনেকের বাসায়। সেলাই মেশিন হতে পারে হাতে চালানোর বা পায়ে চালানোর। কিংবা বৈদ্যুতিক। পা-মেশিন আর বৈদ্যুতিক মেশিনে দ্রুত ও সহজে সেলাই করা যায়। এ দুটিতে সেলাই করার সময় দুই হাতে সমানতালে কাপড় ভাঁজ করা, সামনে-পেছনে করা ও কুঁচি দেওয়ার কাজ করা যায়। মেশিনের বাক্সে ববিন কেস ও কিছু সুতা রাখা যায়। সেলাই মেশিনের কভারের ওপর বাড়তি একটা কাপড়ের কভার পরিয়ে রাখতে পারেন। নিজেই বানিয়ে নিতে পারেন এই কভার। প্রয়োজনমতো তা ধুয়ে পরিষ্কার করে নেওয়া যায়। কাপড়ে সেলাই বসানোর জন্য, কুঁচি প্রভৃতি বসানোর জন্য ইস্তিরির প্রয়োজন হয়। স্টিকার বা এ জাতীয় কিছু বসাতে চাইলেও ইস্তিরির দরকার। তাই ইস্তিরিটাও গুছিয়ে রাখুন। এটি ব্যবহারের জন্য আলাদা টেবিলও কিনতে পারেন।