স্তন ক্যানসার স্ক্রিনিং যেভাবে করবেন

প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত, দক্ষ চিকিৎসক দ্বারা দুই–তিন বছরে একবার স্তন পরীক্ষা করানো স্তন ক্যানসার স্ক্রিনিংয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

স্তন ক্যানসার স্ক্রিনিংয়ের তিনটি উপায়:

নিজের স্তন নিজে পরীক্ষা করা: ২০ বছর বয়স থেকে প্রতি মাসে একবার নিজেকে নিজে পরীক্ষা করা উচিত। নিজের স্তনের কোনো অস্বাভাবিকতা দেখা দিলে যাতে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া যায়।

চিকিৎসক দ্বারা পরীক্ষা করানো: প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসক দ্বারা ২০ বছর থেকে ৩৯ বছর বয়স পর্যন্ত প্রতি তিন বছরে একবার এবং ৪০ বছর পার হলে প্রতিবছর একবার স্তন পরীক্ষা করা উচিত।

ম্যামোগ্রাফি এবং অন্যান্য রেডিওলজি ও ইমেজিং পরীক্ষা যেমন আলট্রাসনোগ্রাফি, এমআরআই।

এসব পরীক্ষায় কোনো অস্বাভাবিকতা দেখা দিলে এফএনএসি (সরু সুই ফুটিয়ে প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা) করে রোগ শনাক্ত করা হয়।

ব্রেস্ট সেলফ এক্সামিনেশন

প্রতি মাসে একবার, একটি নির্দিষ্ট দিন ঠিক করে ঋতুবতী নারীরা মাসিক শেষ হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে পরীক্ষা করলে ভালো হয়। কারণ, সে সময় স্তন কিছুটা হালকা থাকে এবং ব্যথা কম হয়।

প্রথমত, পরিষ্কার আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে পর্যাপ্ত আলোয় নিজেকে লক্ষ করুন। দুই বাহু দেহের দুই পাশে ঝুলিয়ে রাখুন। বাহুদ্বয় মাথার ওপরে বা পেছনে উঁচিয়ে ধরুন। দুই হাত কোমরে চাপ দিয়ে দাঁড়াতে হবে, যাতে বুকের মাংসপেশি টানটান হতে পারে। স্তনবৃন্ত হালকা করে একটু চাপ দিয়ে দেখতে হবে কোনো রস বের হয় কি না।

লক্ষ করুন, স্তনের আকার, আকৃতি ও রঙের কোনো পরিবর্তন, দুই স্তনের কোনো তারতম্য, স্তনের ত্বকের কোনো পরিবর্তন, স্তনবৃন্ত ভেতরে দেবে গেছে কি না, বৃন্তসংলগ্ন এলাকায় ত্বকের অস্বাভাবিকতা আছে কি না। বৃন্ত থেকে নির্গত তরলের রং।

দ্বিতীয়ত, হাত দিয়ে পরীক্ষা করে অনুভব করুন। বিছানায় শুয়ে, ডান হাত দিয়ে বাঁ স্তন এবং বাঁ হাত দিয়ে ডান স্তন। যে পাশের পরীক্ষা করতে হবে, সে পাশের হাত মাথার ওপর রাখতে হবে, কাঁধের নিচে ছোট বালিশ বা তোয়ালে ভাঁজ করে দিতে হবে, যাতে বুক ও স্তন একই সমান্তরালে থাকে। অন্য পাশে অল্প কাত হয়ে শুতে হবে। এবার হাতে মধ্যের তিন আঙুলের প্যাড দিয়ে প্রথমে একটু হালকা চাপ, পরে আরও ভারী চাপ, এরপর আরও চাপ দিয়ে স্তন সীমানার পুরো এলাকা অনুভব করতে হবে। গোসলের সময় দাঁড়িয়ে, শরীরে সাবান মেখে একইভাবে পরীক্ষা করতে হবে।

ক্লিনিক্যাল ব্রেস্ট এক্সামিনেশন

প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত, দক্ষ চিকিৎসক দ্বারা দুই–তিন বছরে একবার স্তন পরীক্ষা করানো স্তন ক্যানসার স্ক্রিনিংয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। চিকিৎসক ঝুঁকিপূর্ণ মনে করলে বিভিন্ন পরীক্ষার জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকেন। যেমন ম্যামোগ্রাফি, আলট্রাসনোগ্রাফি, এমআর ম্যামোগ্রাফি।

পরীক্ষা–নিরীক্ষা

ঠিক কত বছর বয়স থেকে স্তন ক্যানসার স্ক্রিনিং ম্যামোগ্রাফি শুরু করতে হবে এ নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে। ৪০ বছর পার হলেই স্তন ক্যানসার স্ক্রিনিং করা যৌক্তিক বলা যেতে পারে।

 আগামীকাল পড়ুন: উচ্চরক্তচাপের রোগীর জীবনযাপন

 মেডিকেল অনকোলজিস্ট, শান্তি ক্যানসার ফাউন্ডেশন