নারীর স্তনে ব্যথা

নারীরা বিভিন্ন সময় স্তনে ব্যথা অনুভব করেন। নানা কারণেই এ ব্যথা হতে পারে। তবে স্তনে ব্যথা হলে অনেক নারীই স্তন ক্যানসার নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে স্তনে ব্যথা স্তন ক্যানসারের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়।

শরীরে হরমোন পরিবর্তনের কারণে কিশোরীদের মাসিকের সময় স্বাভাবিকভাবেই স্তনে হালকা ব্যথা হতে পারে। অনেক সময় মাসিকের আগেও ব্যথা হয়। এতে ভয়ের কোনো কারণ নেই।

অন্তঃসত্ত্বা নারীরা গর্ভকালে স্তনে ব্যথা অনুভব করেন। সাধারণত গর্ভাবস্থার তিন মাস চলাকালে এ ব্যথা শুরু হয়। তখন স্তনের আকার বৃদ্ধি পায় এবং অনেক সময় স্তনের ওপর দিয়ে নীল শিরা দেখা যায়। এ সময় শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে রক্ত সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় ও হরমোনের হ্রাস–বৃদ্ধির কারণে এ ব্যথা হয়।

স্তনে ব্যথার একটি অন্যতম কারণ স্তনে প্রদাহ বা মাসটাইটিস। এটি ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া অথবা ছত্রাকের সংক্রমণে হয়ে থাকে। এমনকি স্তনে যক্ষ্মার কারণেও ব্যথা হতে পারে। ব্যথার সঙ্গে জ্বর আসতে পারে। এ রকম হলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

স্তনের ভেতর সিস্ট হতে পারে, যার ভেতর তরলজাতীয় পদার্থ থাকে। স্তনের গ্রন্থি যখন বৃদ্ধি পায়, তখন অনেক সময় সিস্ট হয়। সিস্টের কারণে ব্যথা হয়। বেশির ভাগ সিস্ট নিরীহ হলেও সন্দেহ হলেই দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

মা হওয়ার পর সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময়ও অনেক নারী স্তনে ব্যথা পান। শিশুকে বুকের দুধ দেওয়ার আগে ও পরে স্তন পরিষ্কার করে নেওয়া ভালো। এতে জীবাণু সংক্রমণের ঝুঁকি কমে। অনেক সময় স্তনে ঘা বা ফোড়া হয়। জীবাণুর সংক্রমণে এমনটা হয় এবং স্তনে প্রচণ্ড ব্যথা হতে পারে।

কী করণীয়: 

স্তনের মাপ অনুযায়ী অন্তর্বাস ব্যবহার করতে হবে। খুব ছোট বা আঁটসাঁট অন্তর্বাস এড়িয়ে চলতে হবে।

শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ালে প্রতিবার দুধ দেওয়ার আগে ও পরে স্তন ও নিপল পরিষ্কার করতে হবে। সব সময় পরিষ্কার কাপড় পরতে হবে।

স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে, যাতে চর্বি কম ও পুষ্টি বেশি থাকে।

দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। তাহলে হরমোন সমস্যা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

ভিটামিন বি–৬, ভিটামিন বি–১ (থায়ামিন) এবং ভিটামিন–ই–সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।

যেকোনো ব্যথা, ফোলা, রঙের পরিবর্তন লক্ষ করলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

আগামীকাল পড়ুন: পায়ুপথের যত সমস্যা