ওজন কমাতে শুধুই লেবু মধু পানি নয়

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে লেবু মধু পানি পান বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সকালে খালি পেটে লেবু মধু পানি খেলে তা বিপাকক্রিয়া বাড়িয়ে ওজন কমাতে সাহায্য করে বলে অনেকেই মনে করেন।

তবে ওজন কমাতে লেবু মধু পানি জাদুকরি কোনো পানীয় নয়। শুধু এর কল্যাণেই ওজন কমে যাবে না। দরকার সঠিক ও স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যাভ্যাস এবং নিয়মিত ব্যায়ামের পাশাপাশি এই পানীয় পান। এতেই আপনার ওজন কমবে। আবার অস্বাস্থ্যকর খাবার, ফাস্টফুড বা অতিরিক্ত ক্যালরিযুক্ত খাবার খেয়ে লেবু মধু পানি খেলে কোনো ফলই আসবে না। তবে বাংলাদেশের মতো উষ্ণ দেশে কোমল পানীয়, শরবত বা ফলের রসের তুলনায় লেবু মধু পানির মিশ্রণ অপেক্ষাকৃত ভালো পানীয়।

লেবুতে প্রচুর ভিটামিন সি, সাইট্রিক অ্যাসিড, ফ্ল্যাভনয়েড, সামান্য পরিমাণে ভিটামিন বি এবং পটাশিয়াম রয়েছে। লেবুতে থাকা অ্যাসিড খাবারের শর্করার খুব সামান্য পরিমাণকে ফ্যাটে বা সঞ্চিত চর্বিতে পরিণত করে। মধুতে রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান। তাই এই দুয়ের পুষ্টিগুণ মন্দ নয়।

গবেষণায় দেখা গেছে, সকালে খালি পেটে ৪০০ মিলিলিটার পানি খেলে তা বিপাকক্রিয়ার হার বাড়িয়ে দেয়, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে ও কমাতে সহায়তা করে। তাই সকালবেলা খাঁটি মধু (আনফিল্টারড বা অশোধিত) ও কুসুম গরম পানিতে লেবু মিশিয়ে খেলে তা সহজে খাবার পরিপাকে সহয়তা করে। সেই সঙ্গে দেহের পানিশূন্যতাও দূর করে। সকালে খালি পেটে লেবু মধু পানি খেলে ক্ষুধাও কম অনুভূত হয়। যার ফলে কম ক্যালরি গ্রহণ করা হয়, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে।

শুধু লেবু মধু পানি পান করলে ফ্যাট ক্ষয় হওয়ার এবং শরীর থেকে টক্সিন বা বিষাক্ত পদার্থ বেরিয়ে যাওয়ার কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি। চর্বি ক্ষয় করার জন্য প্রয়োজন সঠিক খাদ্যাভ্যাস। আর ক্যালরি ক্ষয় বাড়াতে প্রয়োজন নিয়মিত ব্যয়াম।

অতিরিক্ত লেবু খেলে আবার অনেকেরই অ্যাসিডিটি বেড়ে যায়। যাঁদের আ্যসিডিটির সমস্যা রয়েছে, তাঁদের অবশ্যই এই পানীয় এড়িয়ে চলা উচিত, নতুবা পানের আগে পুষ্টি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

কখন খাবেন: সাধারণত সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে বা রাতে ঘুমানোর আগে এই পানীয় পান করা যেতে পারে। এ ছাড়া দিনের অন্য যেকোনো সময়ও পান করা যেতে পারে। এতে ক্যালরি অনেক কম থাকে। সাধারণত ১ গ্লাস কুসুম গরম পানিতে ২ চা চামচ লেবুর রস এবং ১ বা ১/২ চা–চামচ মধু (ক্যালরিভেদে) মিশিয়ে এই পানীয় তৈরি করা হয়।

লেখক: পুষ্টি বিশেষজ্ঞ, মেডিনোভা মেডিকেল, মালিবাগ