শিশুর ত্বকের যত্নে

এ সময়ে শিশুর ত্বকের প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। ছবি: অধুনা
এ সময়ে শিশুর ত্বকের প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। ছবি: অধুনা

সুস্থ ত্বকই সুন্দর ত্বক। সাধারণ খোসপাঁচড়া থেকে আবার হতে পারে কিডনি রোগ, বাতজ্বরের মতো জটিল রোগ। শিশুর ত্বকের যত্নের ব্যাপারে যদি কিছু কিছু বিষয়ে সচেতন হওয়া যায়, তবে অনেক চর্মরোগই প্রতিরোধ করা সম্ভব।

এখন যেহেতু শীত আসছে, আবহাওয়া শুষ্ক হবে, তাই শিশুর ত্বকেও শুষ্কতা দেখা দিতে পারে।

আবার ত্বক শুষ্ক থাকলে চুলকানি হতে পারে, দেখা দিতে পারে জীবাণুর সংক্রমণ। তাই শিশুর ত্বক আর্দ্র রাখতে সতর্কতা জরুরি। আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণে ত্বকের উপযোগী লোশনও লাগানো যেতে পারে।

শিশুর পরনের কাপড়চোপড় অবশ্যই নরম ও মসৃণ হতে হবে, খসখসে বা অমসৃণ নয়। ত্বকের জন্য সুতির কাপড়ই সবচেয়ে নিরাপদ। কাপড় বেশি আঁটসাঁট হওয়া উচিত নয়। কারণ, আলো-বাতাস প্রবেশ করতে না পারলে ঘাম আটকে থাকে এবং বিভিন্ন চর্মরোগ সৃষ্টি হয়। তাই পোশাকপরিচ্ছদ যতটা সম্ভব ঢিলেঢালা হওয়াই ভালো।

পরিষ্কার ও কুসুম কুসুম গরম পানি দিয়ে প্রতিদিনই গোসল করানো ভালো। তবে সাবান ও শ্যাম্পু প্রতিদিন ব্যবহার না করলেও চলে। গোসলের শেষে নরম শুকনো সুতি কাপড় দিয়ে ভালোভাবে পানি মুছে ফেলতে হবে। যাতে কোনো স্থানে, বিশেষ করে শরীরের ভাঁজগুলোতে পানি লেগে না থাকে। কারণ, এ থেকে ছত্রাকজাতীয় জীবাণু সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে।

একবার কোনো সাবানে শিশুর অ্যালার্জি দেখা দিলে আর কখনোই ওই উপাদানে তৈরি সাবান ব্যবহার করা যাবে না। পোশাকের বেলায়ও একই কথা প্রযোজ্য। কোনো কাপড়ে শিশুর অ্যালার্জি হলে পরবর্তী সময়ে ওই উপাদানের পোশাক ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে।

শিশু প্রস্রাব-পায়খানা করার পর যত শিগগিরই সম্ভব ভেজা ন্যাপকিন বদলে ফেলা উচিত। কারণ, দীর্ঘক্ষণ থাকলে র‌্যাশ হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।

শিশুর কাপড়চোপড় সাবান দিয়ে ধোয়ার পর পরিষ্কার পানিতে বারবার চুবিয়ে সম্পূর্ণ সাবানমুক্ত করে শুকানো উচিত। কারণ, সাবানের ক্ষারযুক্ত শুকনো কড়কড়ে কাপড় শিশুর নরম ত্বকের ক্ষতি করতে পারে।

শিশুরা হাত-পা বেশি নাড়াচাড়া করে এবং হাত মুখে দেয়। তাই নখ কেটে ছোট রাখতে হবে, যাতে নিজের নখে নিজে আঘাত না পায় এবং রোগজীবাণু নখের মাধ্যমে মুখে না যায়।

শিশুদের কোমল ত্বকে অ্যান্টিসেপটিক এবং প্রসাধনসামগ্রী কোনো মলম যখন–তখন না লাগানোই ভালো।

ত্বকে আঘাত পেতে পারে—এ রকম খেলনা বা ব্যবহার্য জিনিসপত্র সব সময় শিশুদের নাগালের বাইরে রাখা উচিত।

কাদামাটি, ধুলাবালু ও কড়া রোদ থেকে শিশুদের দূরে রাখতে হবে।

সরিষার তেল কেন নয়?

শিশুর ত্বকের অস্বস্তিকর অনুভূতির কারণ হয়ে দাঁড়ায় সরিষার তেল। তাই এ তেল ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। অনেকে শিশুর ঠান্ডা লাগলে সরিষার তেল ব্যবহার করেন। এমনকি নাকে প্রয়োগ করেন। এমন কাজ কখনোই করবেন না। নাকের মাধ্যমে শ্বাসনালিতে এ তেল ঢুকে গিয়ে শিশুর মারাত্মক ধরনের নিউমোনিয়া হতে পারে।

শিশু বিভাগ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা