টেলিভিশনের 'জাদুর বাক্সের' ম্যাজিক

একটা বাক্সের মধ্যে সচল ছবি, মানুষের নড়াচড়া, কথা বলা, নাচগান—একসময় বিস্ময় জাগাত। এখন তা খুবই স্বাভাবিক। কারণ দর্শক দেখে অভ্যস্ত। অথচ যদি চিন্তা করা যায়, এই এত্তটুকুন বাক্সে এত্ত আয়োজন কীভাবে আসে, কীভাবে সম্ভব—মুহূর্তের হলেও জাদুই মনে হবে। এ জন্য অনেকে এটাকে বলে ‘জাদুর বাক্স’। ১৯৯৬ সালে জাতিসংঘের এক প্রস্তাবের মাধ্যমে ২১ নভেম্বরকে টেলিভিশন দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত হয়।

একটা বাক্সের মধ্যে মানুষের চলমান ছবি দেখা বিনোদনের জগতে নিশ্চিতভাবেই নতুন মাত্রা যোগ করে। কালের বিবর্তনে সেই টেলিভিশন অনেকটা পথ পেরিয়ে এসেছে।

১৯৯৬ সালে জাতিসংঘের এক প্রস্তাবের মাধ্যমে ২১ নভেম্বরকে টেলিভিশন দিবস পালনের সিদ্ধান্ত হয়। মূলত ১৯২৬ সালের এই দিনে টেলিভিশন উদ্ভাবন করেন জন লোগি বেয়ার্ড। তাঁর এই উদ্ভাবনের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই ১৯৯৬ সালে জাতিসংঘ এই দিনটিকে বিশ্ব টেলিভিশন দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়।

বাংলাদেশে টেলিভিশন সম্প্রচার শুরু হয় ১৯৬৪ সালে, তৎকালীন পাকিস্তান আমলে। তখন ছিল সাদাকালো টেলিভিশনের আমল। স্বাভাবিকভাবেই তখন সচ্ছল মানুষের ঘরেই টেলিভিশন ছিল। গরিব বা অসচ্ছল মানুষেরা তখন সেই মানুষদের বাসায় টেলিভিশন দেখার জন্য ভিড় করতেন। খুব বেশি দিন আগের কথা নয়, ১৯৯০-এর দশকের শেষ দিকেও বিশ্বকাপ ফুটবলের সময় গ্রামাঞ্চলের যে বাড়িতে টেলিভিশন ছিল, সেই বাড়িতে মানুষের ভিড় পড়ে যেত। ২০০০-এর পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। এরপর দেশীয় ইলেকট্রনিকস কোম্পানিগুলো টেলিভিশন উৎপাদন শুরু করলে সাধারণ মানুষের নাগালে চলে আসে এই যন্ত্র।

কালের বিবর্তনে সেই টেলিভিশন যন্ত্রেরও বিবর্তন হয়েছে। সিআরটি টিভি থেকে এলসিডি, এলইডি এবং এখন স্মার্ট টেলিভিশনের যুগ শুরু হয়েছে। অ্যানটেনার যুগ শেষ হয়েছে আরও আগেই। তারপর এল স্যাটেলাইট সংযোগের যুগ। আর এখন টিভি শুধু টেলিভিশন কেন্দ্র থেকে সম্প্রচারিত অনুষ্ঠান দেখার যন্ত্র নয়। ইন্টারনেটে যুক্ত হয়ে ইউটিউব, ফেসবুক, নেটফ্লিক্স—ইচ্ছেমতো দেখার সুবিধা দেয় আজকালকার টিভিগুলো। অর্থাৎ, টেলিভিশনের ব্যবহারের ধরনে পরিবর্তন এসেছে। শুধু বিদেশি ব্র্যান্ডের টিভিই নয়, দেশীয় কোম্পানিগুলোও এসব প্রযুক্তি আয়ত্ত করছে। যেমন—ট্রান্সকম ডিজিটালের নিজস্ব ব্র্যান্ড ট্রান্সটেক টিভিতে পাওয়া যায় স্মার্ট যুগের সব সুবিধা। দেশেই এই টিভি সংযোজন করা হয়।

যত পরিবর্তনই আসুক না কেন, ঘরে এখনো টেলিভিশন যন্ত্রের কদর আছে। সিআরটির যুগ পেরিয়ে এখন আমরা স্মার্ট টিভির যুগে প্রবেশ করেছি। ভবিষ্যতে হয়তো আরও পরিবর্তন আসবে।