দশকের সেরা ১০ অ্যাপ

বছর দশেক আগেও এসবের তেমন কোনো প্রভাব ছিল না, আজ জীবনযাপনের দরকাির অনুষঙ্গেই পরিণত হয়েছে নানারকম অ্যাপ। গ্রাফিকস: মনিরুল ইসলাম
বছর দশেক আগেও এসবের তেমন কোনো প্রভাব ছিল না, আজ জীবনযাপনের দরকাির অনুষঙ্গেই পরিণত হয়েছে নানারকম অ্যাপ। গ্রাফিকস: মনিরুল ইসলাম

গত এক দশকে মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন আমাদের জীবনেরই অংশ হয়ে গেছে। আইফোনের অ্যাপ স্টোর আর অ্যান্ড্রয়েডের গুগল প্লে চালু হয় ২০০৮ সালে। এখন এই দুই ভার্চ্যুয়াল দোকানে লাখ লাখ অ্যাপের সমাহার। কোনোটি দিয়ে আমরা যোগাযোগ রক্ষা করছি, কোনোটি দিয়ে খুঁজে বের করছি নতুন মানুষ, আবার কোনো অ্যাপ দিয়ে চলছে গান শোনা কিংবা বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার মতো কাজ। কেবল কথা বলার জন্য মোবাইল ফোন আমরা ব্যবহার করছি বটে। তবে স্মার্টফোনে আজকাল এমন অনেক অ্যাপই আছে, যেগুলো কোন অ্যাপে কত সময় কাটাচ্ছি, তার হিসাব রাখে। মানে অ্যাপের জন্য অ্যাপ! প্রযুক্তিবিষয়ক প্রভাবশালী মার্কিন ওয়েবসাইট সিনেট ‘ডিকেড ইন রিভিউ’ নামে বেশ কিছু লেখা প্রকাশ করছে। সেটিরই অংশ হিসেবে এক জরিপ চালিয়েছে তারা। সেখানে উঠে এসেছে গত এক দশকের সেরা ২৫ অ্যাপের তালিকা। এখানে ১০টি সম্পর্কে জানুন, সঙ্গে থাকছে পুরো তালিকা। এই অ্যাপগুলো প্রভাব ফেলেছে মানুষের জীবনযাপনে। আর তা পৃথিবীজুড়েই।

১. ইনস্টাগ্রাম

ধরন: ছবি ও ভিডিও শেয়ার

প্রকাশ: ২০১০

কেন এই তালিকায়: ছবি তোলা ও শেয়ার করার চিন্তাধারায় ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে ইনস্টাগ্রাম। বিশেষ করে খাবার খাওয়ার আগে কেউ কেউ তো ছবি না তুলে শুরুই করতে পারে না! ফলে ব্যবসা–বাণিজ্যের প্রসারে অ্যাপটি হয়ে উঠেছে দারুণ এক মাধ্যম।

২. টুইটার

ধরন: খুদে ব্লগভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম

প্রকাশ: ২০১০

কেন এই তালিকায়: প্রথম প্রকাশের ১৩ বছর পর টুইটার নিয়ে একটি বিষয়ে কোনো দ্বিমত নেই—টুইটার দুনিয়ার যোগাযোগের ধারণাই বদলে দিয়েছে। আরব বসন্ত থেকে শুরু করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট—সবার বার্তাই দুনিয়ার আনাচকানাচে পৌঁছে যাচ্ছে কেবল এক টুইটে।

৩. ফেসবুক

ধরন: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম

প্রকাশ: ২০১০

কেন এই তালিকায়: ফেসবুক মানুষকেই বদলে দিয়েছে। মানুষের আচার–আচরণ থেকে শুরু ব্যবসা–বাণিজ্য, ঝগড়া–বিবাদ থেকে সুখ–শান্তি—অনেক কিছুই নির্ভর করছে এই অ্যাপের ওপর। আড়াই বিলিয়ন ব্যবহারকারীর এই অ্যাপ ভালো–মন্দ মিলিয়ে।

৪. টিন্ডার

ধরন জুড়ি খোঁজা

প্রকাশ: ২০১২

কেন এই তালিকায়: চিঠি লিখে প্রেমের দিন শেষ। ফোনে কথা বলে মন দেওয়া–নেওয়ার যুগও সেকেলে হয়ে যাচ্ছে। টিন্ডার নামক অ্যাপে মনের মতো কাউকে দেখলে ডানে সোয়াইপ করলেই হলো—মিলে গেল জুড়ি (তবে জুড়ি মেলা অত সহজও নয়)!

৫. গুগল/অ্যাপল ম্যাপস

ধরন পথনির্দেশক

প্রকাশ: ২০০৭ (গুগল ম্যাপস), ২০১২ (অ্যাপল ম্যাপস)

কেন এই তালিকায়: হাতে স্মার্টফোন থাকলে কেউ আর এখন পথ হারায় না। কেবল পথ খুঁজে দেওয়াই নয়, হাতের নাগালের প্রয়োজনীয় অনেক কিছুই খুঁজে বের করে দেয় এই অ্যাপ দুটি। আর ঢাকার মতো যানজটের শহরে এর বিকল্প নেই।

৬. স্পটিফাই

ধরন: গান শোনা

প্রকাশ: ২০১১

কেন এই তালিকায়: বাংলাদেশে স্পটিফাই অ্যাপটি চালানোর অনুমতি নেই। তবে বিশ্বে এর জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। বিনা মূল্যে গান শোনার অনন্য অ্যাপ। টেইলর সুইফট একবার স্পটিফাই থেকে তাঁর সব গান তুলে নিয়েছিলেন, পরে এর গুরুত্ব বুঝে ফিরেও এসেছেন।

৭. স্ল্যাক

ধরন: বার্তা আদান–প্রদানের অ্যাপ

প্রকাশ: ২০১৩

কেন এই তালিকায়: বাংলাদেশে স্ল্যাকের ব্যবহারকারী অতটা নেই। তবে পুরো একটা অফিসই চালানো যায় এই অ্যাপ দিয়ে। স্ল্যাক আদতে অনেকগুলো অ্যাপের সমাহার। এখানে দাপ্তরিক সভা থেকে শুরু করে কাজের দেখভাল, বেতন–ভাতা পরিশোধের মতো কাজও করা যায়।

৮. উবার/লিফট

ধরন: পরিবহন (রাইড শেয়ার)

প্রকাশ: ২০১১ (উবার), ২০১২ (লিফট)

কেন এই তালিকায়: পৃথিবীর যোগাযোগব্যবস্থা বদলে দিয়েছে উবার। শুরুতে অনেকেই চিন্তা করতে পারেনি, কী করে এই অ্যাপ চলবে। হ্যাঁ, অনেক অভিযোগ আছে ঠিকই, তবে যাতায়াতে উবার ও লিফটের মতো অ্যাপ যুগান্তকারী পরিবর্তনই এনেছে।

৯. ভেনমো

ধরন: আর্থিক লেনদেন

প্রকাশ: ২০১২

কেন এই তালিকায়: আমাদের বিকাশের মতো আর্থিক লেনদেনের অ্যাপ ভেনমো। বাংলাদেশে চলে না। তবে বিশ্বের অনেক দেশেই জনপ্রিয়। কেবল লেনদেন নয়, যোগাযোগমাধ্যম হিসেবেও বেশ কেজো।

১০. অ্যাংরি বার্ডস

ধরন: গেম

প্রকাশ: ২০০৯

কেন এই তালিকায়: বাজারে আসার পর রাতারাতি জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠে গিয়েছিল ‘খ্যাপাটে পাখির দল’। ফলে প্রকাশিত হয়েছে একাধিক গেমস। মুক্তি পেয়েছে দুটি সিনেমা। আর পণ্যের ব্র্যান্ড হিসেবে অ্যাংরি বার্ডস এখনো জনপ্রিয়।

বাকি ১৫ অ্যাপ

l ক্যান্ডি ক্রাশ সাগা (২০১২)

l পোকেমন গো (২০১৬)

l ভাইন (২০১৩)

l ফ্ল্যাপি বার্ড (২০১৩)

l ফেসবুক মেসেঞ্জার/হোয়াটসঅ্যাপ (২০১১/২০০৯)

l নেটফ্লিক্স (২০১০)

l স্ন্যাপচ্যাট (২০১১)

l ইউটিউব (২০০৭)

l গুগল পে/অ্যাপল পে (২০১৫/২০১৪)

l গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট/সিরি/অ্যালেক্সা (২০১০/২০১৬/২০১৪)

l আমাজন (২০১১)

l স্কাইপে/ফেসটাইম (২০০৯/২০১০)

l ফোর্টনাইট (২০১৭)

l উবার ইটস/পোস্টমেটস/গ্রাবহাব/ডোরড্যাশ (২০১৫/২০১১/২০০৯/২০১৩)

l গুগল ফটোজ (২০১৫)