বিদ্যুতে চলে কেটলি

ঝটপট গরম পানি পেতে আছে ইলেকট্রিক কেটলি। ছবি: অধুনা
ঝটপট গরম পানি পেতে আছে ইলেকট্রিক কেটলি। ছবি: অধুনা

কনকনে ঠান্ডায় ঘরের ভেতরেও জমে যাচ্ছে হাত-পা। কদিন ধরেই জাঁকিয়ে বসেছে শীত। সবাই খুঁজছে উষ্ণতা। সেটা ঘর বা বাহির। আগাগোড়া ঢেকে তবেই বাইরে বের হচ্ছে। ঘরের মধ্যে যেকোনো কাজে পানি ছুঁতে গেলেই যেন জুজুর ভয়। আবার চুলায় পানি গরম করাও বেশ ঝক্কির। তার চেয়ে সহজ সমাধান বৈদ্যুতিক (ইলেকট্রিক) কেটলি। জগে পানি ভরে সুইচ দিলেই গরম হয়ে যাবে পানি। শীতের এ সময় ইলেকট্রিক কেটলির চাহিদা বেড়ে যায়। সারা বছরই আধুনিক অফিস, হোটেলের ঘরে পানি গরম করার জন্য ব্যবহার করা হয় এই যন্ত্র। তবে বাসায়ও শীতের দিনে বেশ দরকারি এই যন্ত্র। এবার বাজার ঘুরে জানানো হলো ইলেকট্রিক কেটলির খোঁজখবর। 

রকমভেদ
বাজারে রকমভেদে বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রিক কেটলি রয়েছে। চাহিদামতো বেছে নিতে পারেন আপনারটি। বাজার ঘুরে দেখা গেছে চার থেকে ১০ লিটারের পানি ধারণক্ষমতার কেটলির জোগান সবচেয়ে বেশি। দেশের বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির ইলেকট্রিক কেটলি পাওয়া যায়। 

পড়ন্ত বিকেলে ঢাকা নিউমার্কেটের মায়ের দোয়া দোকান থেকে দেশীয় প্রতিষ্ঠান প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের ভিশনের কেটলি কেনার জন্য ভালোমতো দেখে নিচ্ছেন চাকরিজীবী দিলরুবা আক্তার। ‘শীত থেকে বাঁচার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। গরম কাপড়, মাথার টুপি, হাত-পায়ের মোজা সবকিছু ব্যবহার করেই বাইরে বের হয়েছি। এবার শীতের মধ্যে চট করে পানি গরম করার জন্য ইলেকট্রিক কেটলি কিনে ফেললাম।’ শুধু দিলরুবা আক্তার একাই নন, অনেককেই দেখা গেল কেটলির দরদাম করার জন্য। সারা দেশে হঠাৎ জেঁকে বসা শীত থেকে একটু আরাম পেতে অনেকে কিনছেন ইলেকট্রিক কেটলি।

ভিশন ইলেকট্রনিক্সের ব্র্যান্ড ম্যানেজার শেখ মাহবুবুর রহমান জানান, শীতের এই সময় ইলেকট্রিক কেটলির চাহিদা সবচেয়ে বেশি। বর্তমানে ভিশনের ০.৮, ১.৫, ১.৮ ও ২ লিটারের ইলেকট্রিক কেটলি বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। এগুলোর দামের শুরু ৭৫০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা। ভিশন ইলেকট্রিক টেকলি দেশে তৈরি, তাই তুলনামূলক দাম কম। রয়েছে এক বছরে সার্ভিস ওয়ারেন্টি ও সারা বছর সার্ভিস পাওয়ার সুযোগ।

 রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে বিদেশ থেকে আমদানি করা কেটলিই বেশি। সাধারণত চীন, কোরিয়া, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম থেকে কেটলি আমদানি করা হয়। এসব কেটলির মধ্যে মিয়াকো, ফিলিপস, নোভেনা, কমেট, বসিনি, ওশেন, প্রেস্টিজ, নোভা ও প্যানাসনিকসহ আরও কিছু ব্র্যান্ডের ইলেকট্রিক কেটলি বাজারে পাওয়া যায়। দেশীয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের ভিশনের কেটলি ছাড়াও ওয়ালটন, প্যানাসনিক, ফিলিপস, মিয়াকো, রিকো, শোভাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কেটলি বাজারে পাওয়া যায়। এসব কেটলিতে পাঁচ থেকে ছয় মিনিটে পানি ফুটালেই ব্যবহারের উপযোগী হয়।

দরদাম
পানি ধারণের পরিমাণের ওপর কেটলির দাম নির্ভর করে। ইলেকট্রিক কেটলি ব্যবহার করে সহজে ও দ্রুত পানি গরম করা যায়। ইলেকট্রিক কেটলির পানি ধারণক্ষমতা এক থেকে শুরু করে ১০ লিটার পর্যন্তও হয়। বিভিন্ন আকারের প্লাস্টিক ও স্টিল বডির কেটলির দাম ৫০০ থেকে ৪ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত। 

কোথায় পাবেন
জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন বাজারসহ রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেট—বায়তুল মোকাররম মার্কেট, গুলিস্তান বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম মার্কেট, নিউমার্কেট, গুলশান ডিসিসি সুপার মার্কেট ১ ও ২, বসুন্ধরা সিটি শপিং মল, যমুনা ফিউচার পার্ক, মিরপুর, মৌচাক মার্কেট, রামপুরাসহ দেশের বিভিন্ন মার্কেটে ইলেকট্রিক কেটলি পাওয়া যায়। এ ছাড়া বেস্ট ইলেকট্রনিকস শোরুম, ট্রান্সকম ইলেকট্রনিকস শোরুমসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিকসের শোরুমে ইলেকট্রিক কেটলি পাওয়া যায়।

ব্যবহারবিধি ও কার্যপ্রণালি

● খেয়াল রাখুন বৈদ্যুতিক সংযোগ থাকা অবস্থায় কেটলির গায়ে যেন পানি লেগে না থাকে। 

● কেটলির হাতলে ধরতে অতিরিক্ত সাবধানতার জন্য শুকনা কাপড় ব্যবহার করতে পারেন। 

● ইলেকট্রিক কেটলির জন্য আলাদা বৈদ্যুতিক সংযোগ ব্যবহার করুন। 

● সুইচ বন্ধ করে ইলেকট্রিক কেটলির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করুন। 

● ইলেকট্রিক কেটলি পানি ছাড়া অন্য কোনো তরল পদার্থ গরম করার কাজে ব্যবহার করা যাবে না।