গর্ভাবস্থায় নিরাপদ ভ্রমণ

>

গর্ভাবস্থায় অনেক সময় ভ্রমণ করা জরুরি হয়ে পড়ে। এ নিয়ে তখন নানা দুশ্চিন্তায় ভোগেন পরিবারের সবাই। অন্তঃসত্ত্বা নারীর জন্য দূরপাল্লার ভ্রমণ কোনো ঝুঁকি ডেকে আনবে কি না, কীভাবে ভ্রমণ করবেন, এ ক্ষেত্রে কিছু বিষয় মনে রাখা ভালো।

১. অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ভ্রমণ কতটা নিরাপদ
গর্ভাবস্থায় ভ্রমণে তেমন কোনো সমস্যা নেই। তবে প্রথম তিন মাস ও শেষের দুই মাস দূরপাল্লার ভ্রমণ এড়িয়ে চলা উচিত। এ ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা হতে পারে-
• প্রথম তিন মাসে অনেকেরই বমিভাব বা বমি হয়, মাথা ঘোরে। ভ্রমণের কারণে এসব উপসর্গ বেড়ে যেতে পারে।
• দীর্ঘ ভ্রমণের কারণে শারীরিক অবসাদ বেড়ে যেতে পারে।
• গর্ভপাত ও সময়ের আগেই প্রসবব্যথা (প্রি-ম্যাচিওর লেবার পেইন) শুরু হতে পারে।

২. যাঁদের জন্য ভ্রমণ ঝুঁকিপূর্ণ
• যাঁদের আগেও এক বা একাধিকবার গর্ভপাত হয়েছে।
• যাঁদের অপরিণত অবস্থায় শিশু জন্মের ইতিহাস আছে।
• গর্ভে একের অধিক সন্তান থাকলে।
এসব পরিস্থিতিতে ভ্রমণ করতে চাইলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তবে গর্ভাবস্থায় মধ্যের তিন মাস ভ্রমণের জন্য নিরাপদ বিবেচনা করা হয়।

৩. কোন পথে ভ্রমণ নিরাপদ
• স্থলপথের মধ্যে ট্রেনে তুলনামূলকভাবে কম ঝাঁকুনি লাগে। তাই রেলপথ সব সময়ই নিরাপদ।
• দূরপাল্লার বাসগুলোও এখন অনেক উন্নত মানের। রাস্তা ভালো থাকলে ঝাঁকুনিও অনেক কম লাগে।
• আকাশপথে গর্ভাবস্থার ৩০ থেকে ৩২ সপ্তাহ পর্যন্ত ভ্রমণ নিরাপদ।
• জলপথে দুলুনির জন্য অনেকের বমিভাব বা বমি হতে পারে।

৪. আকাশপথে ভ্রমণের ক্ষেত্রে করণীয়
• ভ্রমণে অসুবিধা হবে না-চিকিৎসকের কাছ থেকে এমন একটি সনদ নিতে হবে।
• ভ্রমণের সময় আরামদায়ক পোশাক পরতে হবে।
• দীর্ঘ সময় ভ্রমণে একটানা বসে না থেকে মাঝেমধ্যে হাত-পা নাড়াতে হবে ও হাঁটতে হবে। আরামদায়ক স্যান্ডেল বা জুতা পরতে হবে।
• প্রয়োজনে কম্প্রেশন স্টকিং ব্যবহার করতে হবে, যা হৃদ্‌যন্ত্রে রক্ত সরবরাহ অব্যাহত রাখতে সহায়তা করে।
• গর্ভাবস্থায় রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। তাই ঝুঁকিপূর্ণ প্রেগন্যান্সি, ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস বা গর্ভে একের অধিক সন্তান থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ ও ইনজেকশন ব্যবহার করা যেতে পারে।

কনসালট্যান্ট (অবস অ্যান্ড গাইনি), বিআরবি হাসপাতাল লিমিটেড