প্রস্রাব ঝরে পড়া রোধে ব্যায়াম

অজান্তে প্রস্রাব ঝরে পড়া বা ইউরিনারি ইনকনটিনেন্স বয়স্কদের জন্য বিব্রতকর একটি সমস্যা। পুরুষদের তুলনায় নারীরা এ সমস্যায় বেশি ভোগেন। প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারা কোনো রোগ নয়। এটি আসলে রোগের উপসর্গ। নারীদের ক্ষেত্রে গর্ভধারণ, সন্তান প্রসব, মাসিক, জরায়ু ফেলে দেওয়া ইত্যাদি কারণে পেলভিক ফ্লোরের মাংসপেশি দুর্বল ও নিচের দিকে ঝুলে পড়তে পারে। এর থেকে সমস্যাটি দেখা দিতে পারে। পুরুষদের প্রোস্টেট গ্ল্যান্ড বড় হওয়া, প্রোস্টেট ক্যানসার ইত্যাদি কারণে এ সমস্যা দেখা দেয়। বয়স বাড়ার সঙ্গে মূত্রথলি ও মূত্রনালির পেশির দুর্বলতা দেখা দেয় এবং প্রস্রাব ধরে রাখার ক্ষমতা কমে যায়। অতিরিক্ত ওজন, কিছু স্নায়ুগত রোগ (পারকিনসন, স্ট্রোক, ব্রেইন টিউমার, মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস স্পাইনাল কর্ড ইনজুরি), অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, প্রস্রাবের সংক্রমণের কারণেও প্রস্রাব ঝরতে পারে। 

সমাধান

নির্দিষ্ট কোনো কারণ থাকলে তার সমাধান করতে হবে। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন। ধূমপান ত্যাগ করুন এবং সুস্থ খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন। আঁশযুক্ত খাবার বেশি খান। সমস্যা কমাতে নিয়মিত পেলভিক ফ্লোর এক্সারসাইজ করুন। নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম ও ইলেকট্রিক্যাল স্টিমুলেটরের মাধ্যমে পেলভিক ফ্লোরের মাংসপেশি শক্তিশালী করে ৪ থেকে ৬ সপ্তাহের মধ্যে এ সমস্যা অনেকটাই কমানো সম্ভব।

জেনে নিন কিছু ব্যায়াম

পেলভিক ফ্লোর: প্রথমে একটি চেয়ারে বসুন। মেরুদণ্ড সোজা রেখে একটু সামনের দিকে ঝুঁকুন। এবার প্রস্রাব ধরে রাখার জন্য দরকারি মাংসপেশিগুলো সংকুচিত করুন। এই অবস্থায় ৫ থেকে ১০ সেকেন্ড থাকুন। এবার সংকুচিত মাংসপেশি ছেড়ে দিন। পুরো প্রক্রিয়াটি ১০ থেকে ১৫ বার এবং দিনে ৪ বার করুন।

আরেকটি ব্যায়ামও করতে পারেন। একটি শক্ত বিছানায় চিত হয়ে শুয়ে দুই হাঁটু ভাঁজ করুন। এবার দুই হাঁটুর ফাঁকে একটি ফুটবল রেখে এতে চাপ দিন এবং ৫ সেকেন্ড ধরে রাখুন আর ছাড়ুন। পুরো প্রক্রিয়াটি ১০ থেকে ১৫ বার এবং দিনে ৪ বার করুন। 

ব্রিজিং: সোজা চিত হয়ে শুয়ে দুই হাঁটু ভাঁজ করুন। এবার কোমর ওপরের দিকে ওঠান, ৫ সেকেন্ড ধরে রাখুন এবং ছাড়ুন। এটিও দিনে ৪ বেলা এবং প্রতিবার ১০ থেকে ১৫ বার করুন।

ইলেকট্রিক্যাল স্টিমুলেশন: এই পদ্ধতিতে রেক্টাস অথবা ভেজাইনার ভেতরে ইলেকট্রোড বসিয়ে স্টিমুলেশনের মাধ্যমে পেলভিক ফ্লোরের মাংসপেশি শক্তিশালী করা হয়।

ব্লাডার ট্রেনিং: প্রস্রাবের বেগ শুরু হওয়ার ১০ মিনিট পর প্রস্রাব করার অভ্যাস করা।

ডাবল ভোয়েডিং: প্রস্রাব করার পরও কিছু সময় বসে থেকে অপেক্ষা করে আবার প্রস্রাবের চেষ্টা করা। এ ছাড়া প্রস্রাবের বেগ না এলেও ২ থেকে ৪ ঘণ্টা পরপর প্রস্রাবের চেষ্টা করা।

ফিজিওথেরাপি ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ