রঙের ছোঁয়ায় সাজুক ঘর

রঙের ছোঁয়ায় সাধারণ  ঘরও হয়ে উঠে শৈল্পিক। ছবি: খালেদ সরকার। কৃতজ্ঞতা: মোহিন জয়েস, নওরিন জাহান
রঙের ছোঁয়ায় সাধারণ ঘরও হয়ে উঠে শৈল্পিক। ছবি: খালেদ সরকার। কৃতজ্ঞতা: মোহিন জয়েস, নওরিন জাহান

ঘর সাজাতে সব সময় কি দামি জিনিসের প্রয়োজন হয়? না, বরং একটু সৃজনশীলতায় ছোঁয়ায় একটা সাধারণ ঘরও হয়ে যায় নান্দনিক। বিশেষ করে বিয়ের পর যাঁরা নতুন সংসার শুরু করেন, তাঁদের অনেক সময় সাধ আর সাধ্যের মধ্যে সমন্বয় করাটা একটু কঠিন হয়ে ওঠে। তবে একটু সৃজনশীলতার প্রয়োগে যেকোনো ঘরই হয়ে উঠতে পারে অনন্য। 

নওরীন জাহান ও মোহিন জোয়েশ দম্পতি তাঁদের মিরপুরের ৮০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাটকে এভাবেই সাজিয়েছেন। যেখানে আসবাবের প্রাচুর্যের চেয়ে প্রাধান্য পেয়েছে শৈল্পিকতার বিষয়টি। দুজনই চারুকলার শিক্ষার্থী আর আড্ডাপ্রিয়। বাসাজুড়ে সারাক্ষণই বন্ধুদের আনাগোনা। গানবাজনা আর হইচই তো চলতেই থাকে। এ কথা ভেবেই বসার ঘরের একদিকে মেঝেতে এমন বসার আয়োজন করেছেন নওরীন। জানালেন, এ ধরনের আয়োজনে আড্ডাটা জমে ভালো। ভালোবাসেন দেয়ালে আঁকতে। ঘরের দেয়াল রাঙিয়েছেন রঙের ছোঁয়ায়। দেয়ালের সামনে আছে একটি মই। কাঠ দিয়ে তৈরি টেরাকোটার আদলে তৈরি এই মই ঘরকে দিয়েছে আলাদা বৈশিষ্ট্য। 

নওরীন জানালেন, চারুকলায় পড়ার সময় এটি বানিয়েছিলেন। লো হাইটের টেবিলটিও বেশ মজার। কাঠের গুঁড়ির ওপর গ্লাস বসিয়ে বানানো হয়েছে এটি। হালকা তোশকে বসার আয়োজন, পেছনের দেয়ালে রাখা পেইন্টিং, মুখোশ আর তোশকে রাখা বাদ্যযন্ত্রে সাজানো পুরো ঘরই যেন হয়ে উঠেছে একটি শিল্পকর্ম।

এই ঘরের পাশেই আরেকটি বসার আয়োজন। সেখানে হালকা নকশার সোফা, বইয়ের তাক একেবারেই সাধারণ। অসাধারণ হলো সোফার ওপরে ছোট তাকে রাখা চিত্রকর্মগুলো, যা পুরো বাসায় বাসার বাসিন্দাদের শৈল্পিক রুচিকে তোলে ধরেছে। বসার ঘরের মূল দরজার পাশেও আছে অঙ্কনচিত্র। পাশেই খোলা তাকে রাখা আছে দেশীয় শোপিস।

এই বাসায় দেয়ালে জোড়া লাগিয়ে লাগানো হয়েছে টেলিভিশন, নিচে কাঠের তাক। এখানে বৈচিত্র্য এনেছে দেয়ালে লাল রঙের ব্যবহার। প্যাচওয়ার্কের রানারের ব্যবহারে এসেছে ভিন্নমাত্রা। শোবার ঘরগুলোতেই নেই আসবাবের বাহুল্য। শুধু আছে খাটের ব্যবহার। এই দুটি ঘরের দেয়ালে অঙ্কনচিত্র ঘরে এনেছে উজ্জ্বল আবহ।

নওরীন জাহান বলছিলেন, খুব বেশি আসবাব একেবারেই পছন্দ নয় তাঁদের। ছিমছাম উপায়ে ঘরকে কীভাবে আরামদায়ক করে তোলা যায়, এই ভাবনা থেকেই ঘরকে এভাবে সাজিয়েছেন তাঁরা। এই বাসায় নেই কোনো দামি আসবাব, নেই জমকালো ঝাড়বাতির ছোঁয়া। তবে যা আছে তা হলো শৈল্পিকতার আবেশ, যা এই বাড়িতে ঢুকলেই মনে বুলিয়ে দেবে একমুঠো প্রশান্তি।