জেনে নিন গ্লুকোমার ঝুঁকি

বয়স ৪০ বছর পার হলেই গ্লুকোমা আছে কি না, পরীক্ষা করানো জরুরি।

অনিরাময়যোগ্য অন্ধত্বের প্রধানতম কারণ গ্লুকোমা। বিশ্বে প্রায় ৪৫ লাখ মানুষ গ্লুকোমার স্থায়ী অন্ধত্বের শিকার ও ৮ কোটি মানুষ গ্লুকোমায় আক্রান্ত। এর বেশির ভাগই এশিয়ার স্বল্পোন্নত দেশগুলোর বাসিন্দা। অথচ অনেক মানুষই এই সমস্যা সম্পর্কে জানে না।

গ্লুকোমা চোখের প্রধান স্নায়ু রজ্জুর (অপটিক নার্ভ) একটি রোগ। এ সমস্যায় স্নায়ু রজ্জু ধীরে ধীরে ক্ষয়প্রাপ্ত হতে থাকে, দৃষ্টির পরিসীমা ক্রমেই কমে আসে। সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা না করালে সমস্যাটির পরিণতি হতে পারে অন্ধত্ব।

গ্লুকোমার জন্য চোখের অন্তর্গত উচ্চ চাপকে অন্যতম দায়ী বলে মনে করা হয়। অন্যান্য ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বংশগত ইতিহাস (যাদের মা-বাবা, ভাইবোনের মধ্যে কেউ এ রোগে আক্রান্ত, তাদের ঝুঁকি অপেক্ষাকৃত বেশি), ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, চোখের মাইনাস বা প্লাস পাওয়ার, মাইগ্রেন, চোখের আঘাত, চোখের অন্যান্য রোগ এবং চিকিৎসকের উপদেশ ছাড়া অনিয়ন্ত্রিতভাবে স্টেরয়েড–জাতীয় চোখের ড্রপ ব্যবহার। 

সচেতনতার বিকল্প নেই

বয়স ৪০ বছর পার হলেই গ্লুকোমা আছে কি না, পরীক্ষা করানো জরুরি। কোনো সমস্যা না থাকলেও বছরে এক বা দুবার নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করাতে হবে। শুধু চোখের পাওয়ার নয়, চিকিৎসককে বলুন চোখের চাপ, স্নায়ু রজ্জুর (অপটিক নার্ভ) অবস্থা এবং দৃষ্টির পরিসীমা পরীক্ষা করতে। যাঁদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ আছে, তাঁদের আরও বেশি সাবধান হতে হবে।

কখনো কখনো জন্মগতভাবে বা বাড়ন্ত বয়সেও এ রোগ হতে পারে। সে ক্ষেত্রে জন্মের পর শিশুর চোখ থেকে পানি পড়া, আলোর প্রতি সংবেদনশীলতা, অস্বচ্ছ মণি এবং অক্ষিগোলক বড় হতে থাকা—এমন লক্ষণ দেখা গেলে শিশুর চোখ গ্লুকোমায় আক্রান্ত কি না, দ্রুত পরীক্ষা করাতে হবে।

চিকিৎসা

সাধারণত তিন উপায়ে গ্লুকোমার চিকিৎসা করা হয়। চোখের বিভিন্ন ড্রপ, লেজার ও গ্লুকোমা সার্জারি। এ সমস্যার সব ধরনের প্রচলিত চিকিৎসা আমাদের দেশেই সম্ভব এবং সুলভ।

মহাসচিব, বাংলাদেশ গ্লুকোমা সোসাইটি