করোনার সময়ে বাজারসদাই

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের এই সময়ে প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে যাচ্ছেন না। তবে বাজারসদাই করতে কাউকে না কাউকে বের হতে হচ্ছে। এ নিয়েও আছে উদ্বেগ–উৎকণ্ঠা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, খাবারের মাধ্যমে করোনা ছড়ায় না। তবে সংস্থাটি এ–ও বলছে যে খাবার বা খাবারের প্যাকেট যিনি ধরেন বা পরিবেশন করেন, তাঁর পরিচ্ছন্নতা জরুরি। কাঁচাবাজার বা সুপারমার্কেটে জনসমাগম হয় বলে সংক্রমণের ঝুঁকি থেকেই যায়। এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা (এনএইচএস) কর্তৃপক্ষ এবং যুক্তরাষ্ট্রের পাবলিক সেফটি অ্যাওয়ারনেস কিছু সতর্কতা জারি করেছে।

• জনসমাগম এড়াতে ঘন ঘন বাজারে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন। প্রতিদিন বাজার না করে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের একটা তালিকা করুন, সপ্তাহে ১ দিন বা ১৫ দিনে ১ দিন বাজার করুন।

• বাজারে যাওয়ার সময় মাস্ক আর ডিসপোজেবল গ্লাভস পরে নেওয়া ভালো। যতটা সম্ভব জিনিসপত্রে হাত না দিয়ে বাজার সারুন।

• বাজার বা মুদিদোকানে গ্রাহককে লাইনে পরস্পর থেকে সুনির্দিষ্ট দূরত্বে (কমপ‌ক্ষে তিন ফুট বা এক মিটার দূরত্বে) দাঁড়াতে হবে। দোকানদার বা কাউন্টার থেকেও এই দূরত্ব বজায় রাখুন।

• নগদ টাকা দেওয়া বা নেওয়ার সময় হাতের স্পর্শ এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। টাকা বা মানিব্যাগ একটি পলিথিনের ব্যাগে নিন, যাতে পরে পলিথিনটি ফেলে দেওয়া যায়।

• যেসব জিনিস এই মুহূর্তে দরকার নেই, কিন্তু অগ্রিম কিনে রেখেছেন (যেমন চালের বস্তা, ভোজ্যতেল, আলু, পেঁয়াজ ইত্যাদি), সেগুলো প্রথমেই রান্নাঘরে না এনে গ্যারেজ, স্টোররুম বা সিঁড়িঘরে তিন দিন রেখে দিতে পারেন।

• বাকি জিনিসগুলো বাড়িতে ঢোকানোর আগে দরজার বাইরেই একটা ঝুড়িতে ঢেলে প্যাকেটগুলো ডাস্টবিনে ফেলে দিন। অথবা কেবিনেট বা টেবিলের ওপরের অংশকে দুই ভাগে ভাগ করে নিন। একদিকে থাকবে পরিষ্কার (জীবাণুনাশক দিয়ে আগেই পরিষ্কার করা), আরেক দিকে অপরিষ্কার। প্যাকেটজাত বা বোতলজাত পণ্য (যেমন চিনি, দুধের প্যাকেট, তেলের বোতল ইত্যাদি) অপরিষ্কার অংশে রাখুন। প্যাকেট থেকে বের করা বাকি পণ্যগুলো পরিষ্কার অংশে রাখুন। যদি সম্ভব হয়, তবে খাবার জিনিস (যেমন চিনি, লবণ, ডাল, বিস্কুট, পাউরুটি ইত্যাদি) সাবধানে হাতের ছোঁয়া না লাগিয়ে প্যাকেট থেকে ঢেলে সরাসরি কনটেইনার বা বোয়ামে রাখুন। তারপর প্যাকেটটি ফেলে দিন।

• কাঁচা ফলমূল বা সবজি প্যাকেট থেকে একটা পানি ভর্তি গামলায় ঢেলে ফেলুন। এবার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। তারপর শুকিয়ে গেলে ফ্রিজের বক্সে ঢোকান।

• যদি অসুস্থ হন বা বয়স ৬০ বছরের বেশি হয়, যদি ডায়াবেটিস, হৃদরোগ বা কিডনি রোগ থাকে, তবে আপনার বাজারে যাওয়ার দরকার নেই। সে ক্ষেত্রে অন্যের সাহায্য নিন।

 সহযোগী অধ্যাপক, গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ