এই সময়ে হাতের যত্ন

কাঁচা হলুদ ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং জীবাণুনাশকেরও কাজ করে। মডেল: অাঁচল, ছবি: নকশা
কাঁচা হলুদ ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং জীবাণুনাশকেরও কাজ করে। মডেল: অাঁচল, ছবি: নকশা

বিশ্বজুড়েই এখন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। এই সময়ে বারবার সাবান দিয়ে হাত ধোয়াই ভালো থাকার একমাত্র উপায়। কিন্তু বেশি সাবান ব্যবহারের ফলে অনেকের হাতের ত্বকে দেখা দিতে পারে কিছু সমস্যা। কারও হয়তো হাতের ত্বকে দেখা দিচ্ছে সাদা সাদা ভাব, কারওবা হাত জ্বলছে, সঙ্গে অ্যালার্জি, নখ ফেটে যাওয়ার সমস্যা তো থাকছেই। এ ছাড়াও যাঁদের হাতে আগে থেকেই ছত্রাকজনিত সংক্রমণ (ফাঙ্গাল ইনফেকশন) আছে, তাঁরা বারবার সাবান দিয়ে হাত ধুলে হাত বেশি চুলকাবে। অনেক ক্ষেত্রে চামড়া ফেটে রক্ত বের হতে পারে। আবার আঙুলের পাশে সংক্রমণ হয়ে পেকেও যেতে পারে। এসব সমস্যা যাঁদের হচ্ছে, তাঁরা এই সময় ঘরে থাকা কিছু উপাদান ব্যবহার করতে পারেন। যেগুলো হাতের ত্বককে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে, এমনটাই জানালেন হার্বস আয়ুর্বেদিক স্কিন কেয়ার ক্লিনিকের আয়ুর্বেদিক রূপবিশেষজ্ঞ আফরিন মৌসুমি

হাতের রুক্ষতা কমাতে
এই সময় হাতের ত্বকের রুক্ষতা কমাতে ১ প্যাকেট হ্যান্ডওয়াশের সঙ্গে ২ টেবিল চামচ গ্লিসারিন মিশিয়ে নিতে পারেন। এতে হাতের ত্বকে রুক্ষতা আসবে না।

চামড়া ওঠা দূর করতে
সমপরিমাণ নারকেল তেল ও জলপাই তেল মিশিয়ে হালকা গরম করে নিতে হবে। এবার ১৫ থেকে ২০ মিনিট এই তেলে হাত ভিজিয়ে এর সঙ্গে কিছু চিনি মিশিয়ে, তা হাতে মালিশ করতে হবে। যখন চিনি কিছুটা গলে যাবে, তখন হালকা গরম পানিতে হাত ধুয়ে ফেলতে হবে। এটি হাতের খসখসে ভাব ও চামড়া ওঠা দূর করে হাত রাখবে নরম।

নখের যত্ন
নখের চারপাশে সাদা ও ফেটে যাওয়া সমস্যা কমাতে হাত ধোয়ার পর জলপাই তেল মালিশ করুন। ভালো ফল পাওয়ার জন্য ১ টেবিল চামচ জলপাই তেলে ৩ কোয়া রসুন ছেঁচে মিশিয়ে গরম করে নখে ব্যবহার করবেন। এতে নখ মসৃণ ও শক্ত থাকবে।

ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে
১ কাপ ক্রিম (আপনি যে ক্রিম ব্যবহার করেন), ২ টেবিল চামচ জলপাই তেল, ২ টেবিল চামচ গ্লিসারিন, ১ টেবিল চামচ গোলাপজল ভালোভাবে মিশিয়ে প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ব্যবহার করতে হবে। এটি হাতের ত্বক নরম রাখতে সাহায্য করবে।

প্রাকৃতিক জীবাণুনাশক
১ কাপ পুদিনাপাতা, ১ কাপ নিমপাতা, ১ কাপ তুলসীপাতার সঙ্গে ৬ কাপ পানি মিশিয়ে ভালোভাবে জ্বাল দিয়ে নির্যাস বের করে নিতে হবে। এবার এতে ১ চা–চামচ বেকিং সোডা, ১ চা–চামচ কর্পূর মিশিয়ে রেখে দিন। এটি খুব ভালো টোনার ও জীবাণুনাশক (অ্যান্টিসেপটিক) প্যাক হিসেবে কাজ করবে। হাত ধোয়ার পর এটি স্প্রে করে লাগিয়ে নিলে হাত বেশ নরম তো হবেই, পাশাপাশি জ্বালা করবে না আর জীবাণুও থাকবে না।

এ ছাড়া হাত ধোয়ার সঙ্গে সঙ্গে কর্পূর মেশানো নারকেল তেল ব্যবহার করতে পারেন। ১০০ মিলিলিটার নারকেল তেলে ১ চা-চামচ কর্পূর মেশাতে হবে। এটি প্রাকৃতিক জীবাণুনাশক হিসেবে দারুণ কাজ করে। নারকেল তেলের জায়গায় চাইলে জলপাই তেলও ব্যবহার করা যাবে। এতে হাত যেমন নরম থাকবে তেমনি জ্বালাপোড়াও কমবে। কাঁচা হলুদ পেস্ট করে তাতে সামান্য গ্লিসারিন, নারকেল তেল ও চালের গুঁড়া দিয়ে চুলায় ফুটিয়ে নিতে পারেন। এই উপকরণ ঠান্ডা করে হাতে ব্যবহার করতে হবে। এটিও বেশ ভালো জীবাণুনাশক এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াবে।