সবাই মিলে হাত ধোয়া

করোনাকালে বিশ্ববাসী নতুন করে শিখল হাত ধোয়ার প্রয়োজনীয়তা। এরই মধ্যে ঘরে ঘরে হাত ধোয়ার নিয়মনীতি, শিষ্টাচার চালু হয়েছে। কিন্তু সর্বত্র হয়েছে কি? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যেকোনো মানুষের যেকোনো জায়গায় হাত ধোয়ার সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য আবারও জোর দিয়েছে।

• প্রতিটি পাবলিক বা প্রাইভেট দালানে (অ্যাপার্টমেন্ট, স্কুল, অফিস, মার্কেট) প্রবেশের মুখে এক বা একাধিক হাত ধোয়ার জায়গা থাকবে। সেখানে থাকবে যথেষ্ট পরিচ্ছন্ন সিঙ্ক বা বেসিন, পর্যাপ্ত সাবান–পানি বা জীবাণুনাশক। যে কেউ ভবনে প্রবেশ বা বের হওয়ার সময় ঠিকভাবে হাত পরিষ্কার করবেন।

• জনসমাগম হয় বা পরিবহনব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত সব জায়গায় পর্যাপ্ত হাত ধোয়ার জায়গা নির্দিষ্ট করতে হবে। এর মধ্যে পড়ে বাস বা রেলস্টেশন, বিমানবন্দর, নৌবন্দর, স্থলবন্দর।

• শিশু, বৃদ্ধ বা শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা থাকতে হবে হাত ধোয়ার স্থানগুলোতে। যেমন ছোট শিশুদের নাগাল পাওয়া বা হুইলচেয়ার ব্যবহারকারীরা সহজে ব্যবহার করতে পারেন কি না, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।

• সাবান–পানির পর্যাপ্ততা, হাইজিন বজায় রাখা, বারবার রিফিল করার মতো বিষয়গুলোকে কর্তৃপক্ষ যথাযথভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন আর খেয়াল রাখবেন।

• কেবল নিজের বাড়িতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে হবে না। সময় এসেছে আপনার চারপাশের পরিবেশ স্বাস্থ্যসম্মত কি না, তা নিয়ে কথা বলার। সবাই মিলে কথা না বললে পাবলিক প্লেসগুলোতে, যেমন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, স্টেশন, হাসপাতাল, অফিস–আদালত, বহুতল অ্যাপার্টমেন্ট, শপিং মল ইত্যাদিতে এই সব সুযোগ তৈরি কোনো দিনই হবে না। তাই আপনার চলাচলের ক্ষেত্রগুলোতেও জোর দিন।

• হাত ধোয়ার জন্য বার সাবান সবচেয়ে ভালো ও সস্তা। প্রয়োজনে তরল সাবানও ব্যবহার করা যায়। চাইলে পানিতে ডিটারজেন্ট মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। তবে ক্লোরিনমিশ্রিত পানি এ ক্ষেত্রে না ব্যবহার করাই ভালো। কারণ, এর তৈরি আর ব্যবস্থাপনায় কিছু স্বাস্থ্যঝুঁকি আছে।

• হাসপাতাল, ক্লিনিক, চেম্বার ও স্বাস্থ্যসেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোতে জোর দিতে হবে বেশি। রোগী ও তাঁর দর্শনার্থীরা যেখানে বসেন, প্রবেশ পথ ও বহির্গমন পথ, ওয়েটিং রুম, টয়লেটে যথেষ্ট সাবান–পানির ব্যবস্থা ও ডিসপোজেবল টিস্যু বা টাওয়েল রাখতে হবে। সেবাদানকারীরা রোগীকে স্পর্শ করার আগে ও পরে, পোশাক বা সুরক্ষা সরঞ্জাম পরার আগে ও খোলার পর, গ্লাভস পরিবর্তনের সময়, রোগীর যেকোনো নিঃসৃত তরল হাতে লেগে গেলে বা রোগীসংশ্লিষ্ট যেকোনো ময়লা আবর্জনা ফেলার পর সঠিকভাবে হাত ধোবেন। প্রত্যেক স্বাস্থ্য সেবাদানকারীকে পাঁচ মিনিট ধরে ভালোভাবে হাত ধোয়ার পদ্ধতির প্রশিক্ষণ নিতে হবে।

সহযোগী অধ্যাপক, গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ