করোনা সংকট: মানসিক উদ্বেগের সেবা দিচ্ছে 'মনের যত্ন মোবাইলে'

কোভিড-১৯ মহামারিতে নাগরিকদের জরুরি মানসিক সেবা দিতে ব্র্যাক, সাইকোলজিক্যাল হেলথ অ্যান্ড ওয়েলনেস ক্লিনিক (পিএইচডব্লিউসি) এবং মানসিক সহায়তা হেল্পলাইন কান পেতে রই একটি টেলিকাউন্সেলিং প্ল্যাটফর্ম চালু করেছে। ‘মনের যত্ন মোবাইলে’ নামের এই মঞ্চ থেকে এখন কোভিড-১৯-এর কারণে মানসিক চাপ, উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা ও হতাশায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা সেবা পাবেন। আজ সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ব্র্যাকের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানান হয়েছে।

আজ এই উদ্যোগের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়। উদ্যোক্তারা জানান, এই সেবা চালু থাকবে দেশজুড়ে। নভেল করোনাভাইরাসজনিত মহামারির কারণে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত যে কেউ এই সেবা নিতে পারবেন। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ০১৭০৯-৮১৭১৭৯ হটলাইন নম্বরে টেলিফোন করলেই সরাসরি বিশেষজ্ঞ পরামর্শ পাবেন ভুক্তভোগী মানুষ। বিশেষজ্ঞরা সরাসরি তাঁদের প্রয়োজনীয় মতামত ও পরামর্শ দেবেন।

ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব এডুকেশনাল ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক ইরাম মারিয়াম বলেন, ‘কোভিড-১৯ সংকটে অনেকেই মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছেন। লকডাউন, অনেক দিন ঘরবন্দী থাকা বা সামাজিক দূরত্বের নিয়মকানুন মানতে গিয়ে অনেকের ওপরই মানসিক চাপ পড়ছে। অনেকে আছেন চাকরি বা উপার্জন হারানোর আশঙ্কায়। ‘মনের যত্ন মোবাইলে’-এর প্ল্যাটফর্ম তাঁদের মানসিকভাবে উজ্জীবিত করে প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলার সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।

উদ্যোক্তারা আরও বলেন, চলমান মহামারিতে হাসপাতাল বা সেবাকেন্দ্রে গিয়ে অনেকেই মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নিতে পারছেন না। সারা বিশ্বেই এখন টেলিফোনে স্বাস্থ্যসেবা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ‘মনের যত্নœমোবাইলে’ পেশাদার ও আস্থাভাজন টেলিকাউন্সেলররা সরাসরি ফোন ধরবেন। তাঁরা (উদ্যোক্তারা) আশা করছেন সহানুভূতিশীল আচরণ, খোলামেলা আলোচনা এবং গোপনীয়তা রক্ষার অঙ্গীকারের দরুন সবাই নিঃসংকোচে কথা বলতে পারবেন। তাঁরা বিদ্যমান অসুবিধা ও চাপ কাটিয়ে ওঠার জন্য দরকারি পরামর্শ, প্রয়োজনীয় ব্যায়াম বা অনুশীলনের দিকনির্দেশনাও দেবেন।

মোবাইল ফোনে এই সহায়তা সেবা দেওয়ার জন্য থাকছেন ২৮ জন মনোবিদ (সাইকোলজিস্ট) ও পরামর্শদাতা (কাউন্সেলর)। এঁদের প্রত্যেকেই সাধারণ মনোবিজ্ঞান, কাউন্সেলিং সাইকোলজি এবং ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত।

উদ্যোক্তারা জানান, নারী বা পুরুষ হোক, তাঁদের আর্থসামাজিক অবস্থান যা-ই হোক না কেন, এই প্ল্যাটফর্মে ফোন দেওয়ার পর তিনি সামান্য হলেও চাপ কাটিয়ে উঠে ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী হতে পারবেন। এখানে ফোনদাতাদের কারওর ইতিমধ্যে কোভিড-১৯-এর লক্ষণ প্রকাশ পেলে কিংবা অধিকতর জটিল মানসিক চাপ থাকলে তাঁকে সরকার অনুমোদিত অন্য সেবাদান প্রক্রিয়ায় রেফার করা হবে।