রোজায় বাড়িতে ব্যায়াম

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

এবারের পবিত্র রমজান মাস একেবারেই অন্য রকম। করোনাভাইরাস ঠেকাতে সবাইকেই ঘরবন্দী অবস্থায় রোজা পালন করতে হবে, ঘরে পড়তে হবে তারাবিহর নামাজ। কিন্তু ঘরবন্দী এই সময়ে নিষ্ক্রিয় থেকে আবার অসুস্থ বা শারীরিক কোনো জটিলতায় পড়া যাবে না। কাজেই এ সময় দরকার সঠিক খাদ্যাভ্যাস আর ব্যায়াম।

সবার জন্য পরামর্শ

রোজায়ও প্রতিদিন গরম পানির ভাপ নিলে গলায় জীবাণু সংক্রমণের ঝুঁকি কমবে। যাঁদের শরীরে চর্বি বেশি ও স্থূল, তাঁদের পেটের চর্বির জন্য ফুসফুসের নিচের অংশের কার্যক্ষমতা কমে যায়। এতে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। কাজেই পেটের চর্বি কমানোর ব্যায়াম, ব্রিদিং এক্সারসাইজ, ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ, অ্যারোবিক এক্সারসাইজ (হাঁটাহাঁটি, জগিং, সিঁড়িতে ওঠানামা করা), স্ট্রেচিং, রেসিস্ট্যান্স এক্সারসাইজ (ডাম্বেল অথবা থেরাব্যান্ড দিয়ে) করতে পারেন। এর ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণ হবে, ঝুঁকি কমবে। ব্রিদিং এক্সারসাইজ করার জন্য নাক দিয়ে শ্বাস নিয়ে তা ৫ সেকেন্ড ধরে রাখুন এবং তারপর মুখ দিয়ে ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়ুন। এভাবে পাঁচবার করার পর ষষ্ঠবারের সময় কাশি দেবেন। এতে ফুসফুসের দূরবর্তী ক্ষুদ্র রন্ধ্রে থাকা কফ কাশির মাধ্যমে বের হয়ে যাবে।

হোম কোয়ারেন্টিনে ও অসুস্থ বয়স্কদের জন্য পরামর্শ

বয়স্কব্যক্তিরা (৫০-৮০ বছর) শারীরিক কাজকর্ম না করলে রক্তে থাকা খারাপ হরমোনের পরিমাণ বেড়ে যায় এবং রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি বাড়ে। ঘরবন্দী এ সময় তাঁদের দীর্ঘ সময় ধরে নিষ্ক্রিয় থাকার কারণে কোমরব্যথা, ঘাড়ব্যথা, হাঁটুব্যথা, বাত ইত্যাদি বাড়ছে। তাই বয়স্করাও ব্যথা নিরাময়ের জন্য পুশআপ এক্সারসাইজ, উপুড় হয়ে শুয়ে থাকা, অ্যারোবিক এক্সারসাইজ, স্ট্রেচিং, ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করবেন। বয়স্কদের অনেকেই ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্‌রোগ, শ্বাসতন্ত্রের রোগে আক্রান্ত। এসব রোগ নিয়ন্ত্রণে ওষুধের পাশাপাশি থেরাপিউটিক এক্সারসাইজের ভূমিকা অপরিসীম। প্রতিদিন কমপক্ষে ৪০ মিনিট অ্যারোবিক এক্সারসাইজ, স্ট্রেচিং, ব্রিদিং এক্সারসাইজ, রেসিস্ট্যান্স এক্সারসাইজ ইত্যাদির মাধ্যমে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ে। মুখে মাস্ক পরে দালানের সিঁড়ির ১০টি ধাপ ওঠানামা করতে পারেন দিনে দু-তিনবার। এতে ফুসফুস এবং হৃদ্‌যন্ত্রে রক্ত সঞ্চালন ভালো থাকবে। প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে রক্তচাপ, শ্বাসতন্ত্রের গতি ও হৃৎস্পন্দন দেখুন। নাক দিয়ে যে সময় ধরে শ্বাস নেবেন, মুখ দিয়ে তার চেয়ে বেশি সময় ধরে শ্বাস ছাড়বেন (১:২ অনুপাতে)। উপুড় হয়ে ব্রিদিং এক্সারসাইজ করলে শ্বাসনালিতে জমা শ্লেষ্মা ও কফ পাতলা হবে এবং শ্বাসকষ্ট কমবে। এ ছাড়া অন্যান্য ব্যায়ামের মাধ্যমে রোগীদের ফুসফুসের উন্নতি হয়, মানসিক প্রশান্তি ও আরামবোধ হয়।

লেখক: সহকারী অধ্যাপক, বাংলাদেশ হেলথ প্রফেশনস ইনস্টিটিউট সিআরপি, সাভার, ঢাকা