করোনাকালের রোজা

প্রতীকী ছবি।
প্রতীকী ছবি।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে এ বছরের পবিত্র রমজান মাস একেবারেই ব্যতিক্রম। করোনা ঠেকাতে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও এরই মধ্যে জীবনাচরণে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। রোজায়ও তা অব্যাহত থাকবে বলে মনে হচ্ছে। এ উপলক্ষে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও সম্প্রতি একটি বিশেষ বুলেটিন বা নির্দেশনা প্রকাশ করেছে। আসুন, জেনে নিই রোজায় জীবনাচরণের বিষয়ে তাদের পরামর্শ কী।

১. করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার কোনো বিকল্প নেই। এ জন্য বেশির ভাগ মুসলিম দেশেই মসজিদে তারাবিহর নামাজ না পড়তে উৎসাহিত করা হচ্ছে। অনেক জায়গায় বিধিনিষেধও আরোপ করা হয়েছে। আমাদের দেশেও মুসল্লিদের প্রতি বাড়িতে তারাবিহ পড়তে অনুরোধ করা হয়েছে। বাড়িতে জামাতে নামাজ পড়ার ক্ষেত্রেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।

. কারও জ্বর-কাশি, ডায়রিয়া বা ফ্লুর উপসর্গ থাকলে এবং ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি যেমন বয়স্ক, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্‌রোগ, ফুসফুসের রোগ আছে এমন ব্যক্তিরা মসজিদে যাবেন না। মসজিদে প্রবেশ ও বের হওয়ার পথে, অজুর জায়গায় যেন ভিড় না হয়, সবাই শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে পারেন, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

. মুসলমানরা যে পদ্ধতিতে দিনে পাঁচবার অজু করেন, তা স্বাস্থ্যসম্মত বলেই আখ্যা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তবে মসজিদে ও বাড়িতে অজুর জায়গায় যথেষ্ট পানির প্রবাহ, সাবান, হ্যান্ডওয়াশ বা স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। এ ছাড়া টিস্যু এবং তা ফেলতে ঢাকনাযুক্ত বিন রাখতে হবে। প্রত্যেকেই ব্যক্তিগত জায়নামাজ ব্যবহার করবেন। হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার মেনে চলবেন। মসজিদ কর্তৃপক্ষ দিনে কয়েকবার মসজিদের মেঝে, অজুর জায়গা, বাথরুম জীবাণুমুক্ত করবেন। দরজার হাতল, সিঁড়ির রেলিং, পানির কল, লাইট ফ্যানের সুইচ বারবার জীবাণুমুক্ত করতে হবে। এগুলো যথাসম্ভব স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। সব ক্ষেত্রেই নাক–মুখ–চোখ স্পর্শ করা এড়াতে হবে।

. সুস্থ থাকলে যে কেউ রোজা করতে পারবেন। তবে যথেষ্ট পুষ্টিকর ও ভিটামিন খনিজযুক্ত খাবার খেতে হবে। প্রচুর পানি পান করতে হবে। বাইরের অস্বাস্থ্যকর খাবার খাবেন না। ধূমপান করবেন না। বাড়িতে সন্ধ্যার পর হালকা হাঁটাহাটিঁ বা ব্যায়াম করবেন।

. জাকাত বা সদকার ব্যাপারে গণজমায়েত করা যাবে না। ইফতার বিতরণ বা ইফতার অনুষ্ঠানের ব্যাপারেও সাবধানতা অবলম্বন করুন। রোজায় সাধারণত বাইরে, মার্কেটে, কাঁচাবাজারে ভিড় হয়। এগুলোও এড়িয়ে চলুন।

ডা. তানজিনা হোসেন, সহযোগী অধ্যাপক, গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ