মেদ ঝরাতে ব্যায়াম

>নিয়মিত যোগব্যায়াম শরীরকে সুঠাম ও সতেজ রাখে। যোগব্যায়ামের কিছু আসনের মাধ্যমে শরীরে বাড়তি মেদ ঝরিয়ে ফেলা যায়। পেটের মেদ কমাতে কার্যকর এমন দুটি আসন করে দেখিয়েছেন যোগব্যায়াম প্রশিক্ষক বাপ্পা শান্তনু
চক্রাসন
চক্রাসন

চক্রাসন

সময়কাল: ১০ সেকেন্ড দিয়ে শুরু করে ধীরে ধীরে প্রয়োজন ও সামর্থ্য অনুযায়ী সময়কাল বাড়াবেন। যখন করবেন তখন ৩–৪ বার করবেন।

উপকারিতা

* এই আসন মেরুদণ্ডের হাড়কে নমনীয় করে তোলে, বার্ধক্য বিলম্বিত করে।

* পাকস্থলী ও অন্ত্রকে সক্রিয় করে।

* কোমড়ের যন্ত্রণা, শ্বাসতন্ত্রের রোগ, সার্ভাইকাল স্পন্ডেলাইটিস রোগে এই আসন ভালো ফল দেয়।

* নারীদের গর্ভাশয়ের সমস্যা সমাধানে কার্যকর।

* হাত ও পায়ের মাংসপেশি সবল হয়।

* বন্ধ্যাত্ব দূর করতে ও হাঁপানি রোগে উপকারী।

* থাইরয়েড ও পিটুইটারি গ্রন্থিকে কার্যকর করে তোলে।

সতর্কতা

* জ্বর বা কোনো রোগে থাকায় অবস্থায় করবেন না।

* হাতের কবজি দুর্বল হলে নিজে অনুশীলন না করে অভিজ্ঞ পরামর্শকের সাহায্য নিন। একা করবেন না।

* গর্ভধারণ ও পিরিয়ডের সময় নারীরা এটা করবেন না।

কীভাবে করবেন

* চিত হয়ে শুয়ে পড়ুন

* হাঁটু দুটোকে এমনভাবে মুড়ে নিন, গোড়ালি যেন নিতম্বের (হিপ) সঙ্গে লেগে যায়।

* হাত দুটিকে উল্টো করে কাঁধের পেছনে কানের পাশে রাখুন। কনুই দুটো ওপরের দিকে থাকবে, পাশে ছড়িয়ে রাখবেন না।

* শ্বাস ভেতরে টেনে নিয়ে প্রথমে কোমর ও বুককে ওপরে ওঠান, এরপর মাথাও আস্তে আস্তে ওঠান।

* এ ক্ষেত্রে চোখ মেঝের দিকে দিয়ে রাখবেন। ভারসাম্য রাখার অভ্যাস হয়ে গেলে পায়ের গোড়ালি উঁচু করে দিয়ে পায়ের আঙুলের ওপর ভর করেও থাকতে পারেন।

* আসন থেকে নামার সময় খুব আস্তে আস্তে নামবেন। শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে প্রথমে পিঠ মেঝেতে স্পর্শ করেন। এরপর যথাক্রমে পিঠের নিচের অংশ কোমর, নিতম্ব নামান। পা সোজা করে দিয়ে হাত সামনে নিয়ে আসুন।

* প্রথম প্রথম অনুশীলনের ক্ষেত্রে পিঠের নিচে একটি–দুটি বালিশ রাখতে পারেন।

ধনুরাসন
ধনুরাসন

ধনুরাসন

সময়কাল: প্রথমে ১০ সেকেন্ড করে অবস্থান করবেন। ধীরে ধীরে সময় বাড়িয়ে ৩০ সেকেন্ড বা সামর্থ্য অনুযায়ী আরও বেশি সময় থাকতে পারেন। যখন করবেন তখন ৩–৬ বার করুন।

সতর্কতা

* মেয়েদের গর্ভাবস্থায় মাসিকের সময় এই ব্যায়াম করা যাবে না।

* হার্টে ব্লক আছে বা উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের এই আসন না করাই উত্তম।

* আসনটি করার সময় যদি শরীর কাঁপতে থাকে, তাহলে সেই মাত্রাটা ধীরে ধীরে অতিক্রম করবেন।

কীভাবে করবেন

এই আসন দেখে দুই ধরনের প্রতিক্রিয়া হতে পারে। অনেকেই ভয় পেয়ে চেষ্টা করবেন না। অথবা প্রথমেই বেশি মাত্রায় করতে চাইবেন। দুটির কোনোটিই ঠিক নয়। সঠিক নির্দেশনা অনুযায়ী করলে সবাই এটা সহজেই করতে পারবেন।

* উপুড় হয়ে নরম কোনো গদি বা ম্যাটের ওপর শুয়ে পড়ুন।

* হাঁটু থেকে পা দুটি ভাঁজ করুন, চেষ্টা করবেন মোটামুটি একসঙ্গে রাখার।

* এবার ডান হাত দিয়ে ডান পায়ের পাতা (ছবিতে যেখানে ধরা হয়েছে) এবং বাঁ হাত দিয়ে বাঁ পায়ের পাতা ধরুন।

* শ্বাস টেনে নিন।

* এবার থুতনি, বুক, ঊরু সব ওপরে তুলে ফেলুন। শুধু পেটের ওপর ভর থাকবে। ঊরু তোলার কৌশল হলো—হাত দিয়ে পায়ের পাতা ঘরের ছাদ বরাবর তোলার চেষ্টা করবেন। অন্যদিকে পায়ের পাতা দিয়ে মাথার বিপরীত দিকে ভূমির সমান্তরালে বল প্রয়োগ করলেই ঊরু ওপরে উঠে আসবে।

* দৃষ্টি ওপরের দিকে দেবেন। মাথাটা ওপরের দিকে এমনভাবে তুলবেন, যেন গলার কাছে শ্বাসনালিতে একটু টান পড়ে।

* আসনে থাকা অবস্থায় শ্বাস–প্রশ্বাস চলতে থাকবে, তবে খুবই ধীরে ধীরে। ব্যথা লাগলেও মুখমণ্ডল বিকৃত করবেন না।