মাস্ক পরায় সচেতনতা

মাস্ক পরে শরীরচর্চা করা উচিত নয়
মাস্ক পরে শরীরচর্চা করা উচিত নয়

মাস্ক পরে নাক–মুখ ঢেকে বেরোনো এখন দৈনন্দিন জীবনেরই অংশ। মাস্ক না পরে বাইরে বের হলে সংক্রামক ব্যাধি আইনে জেল–জরিমানার বিধানও করা হয়েছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে মাস্ক পরাকে একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে মেনে নিয়েছে সব সংস্থা। কিন্তু সবাই কি সব সময় মাস্ক পরে থাকবেন? কোন সময় আর কোন পরিস্থিতিতে মাস্ক বিপদ ডেকে আনতে পারে বরং সেটাও জেনে নেওয়া দরকার।

মাস্ক পরে শরীরচর্চা

ব্যায়াম, জগিং, দৌড়ানো বা অন্য কোনো শারীরিক কসরত করার সময় মাস্ক না পরাই উচিত। যদি নিজের বাড়িতে বা ঘরে ব্যায়াম করেন, মাস্ক পরার তো প্রয়োজন নেই। যদি ব্যায়াম করতে বাইরে বা পার্কে যান, তা হলে মাস্ক পরবেন না কিন্তু খেয়াল রাখবেন যেন আপনার থেকে অন্যদের দূরত্ব অন্তত ৬ ফুট হয়। খেলাধুলা, প্রশিক্ষণ, অনুশীলনের সময়ও বিষয়টা খেয়াল রাখবেন। ব্যায়ামাগারে ব্যায়াম করার সময় বাড়তি খেয়াল রাখতে হবে যন্ত্রপাতি ব্যবহারের আগে জীবাণুমুক্ত করা হলো কি না।  

মাস্ক
মাস্ক

ব্যায়াম বা যেকোনো শারীরিক কসরত করার সময় ফুসফুসের ওপর চাপ পড়ে, অনেক বেশি পরিশ্রম হয়। এ সময় মানুষের অনেক অক্সিজেন লাগে। মুখে মাস্ক থাকলে ফুসফুসে বাতাস ঢোকার পথে বাধার সৃষ্টি হয়, যার ফলে বাড়তি অক্সিজেন পাওয়া বাধাপ্রাপ্ত হতে পারে। ফলে একটুতেই ক্লান্ত হয়ে পড়া, হাঁপিয়ে ওঠা। ঘামে ভিজে গিয়ে একটা অস্বস্তিকর অবস্থা তৈরি হতে পারে। মাস্ক পরে টানা ব্যায়াম করলে বা দৌড়ালে এমনকি অক্সিজেনের মাত্রা কমে গিয়ে অচেতন হয়ে পড়ার শঙ্কা থাকে। হাঁপানি বা হার্টের সমস্যা থাকলে কিন্তু একেবারেই মাস্ক পরে ব্যায়াম করা চলবে না। সুস্থ ব্যক্তিরাও মাস্ক পরে কোনোরকম ভারী অনুশীলন করা থেকে বিরত থাকুন।

যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি) বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে মাস্ক না পরার জন্যই সতর্ক করে দিচ্ছে। যেমন দুই বছরের কম বয়সী শিশুদের, যাঁদের শ্বাস গ্রহণের সমস্যা আছে; ক্রনিক ব্রংকাইটিসের রোগী, অচেতন বা অজ্ঞান ব্যক্তি; বাড়িতে থাকা বয়স্ক কিন্তু অন্যের সহায়তা ছাড়া মাস্ক সরাতে অক্ষম ব্যক্তিদের মাস্ক পরা বিপজ্জনক। 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, শ্বাস নিতে নিতে মাস্কের ভেতরে যখন খুব বেশি স্যাঁতসেঁতে হয়ে যাবে, তখন মাস্কটি পরিবর্তন করা উচিত। কয়েক ঘণ্টা পর মাস্কের ভেতরে স্যাঁতসেঁতে হয়ে গেলে সেটা খুলে ফেলুন ও একটি কাগজের প্যাকেটে সংরক্ষণ করুন। পুনর্ব্যবহারযোগ্য কাপড়ের মাস্ক হলে দ্রুত সেটা ডিটারজেন্ট দিয়ে পরিষ্কার করে ফেলুন।

কাগজের প্যাকেটে দুই থেকে তিন দিন রেখে বা রোদে শুকিয়েও আপনি সেটা পুনর্ব্যবহার করতে পারবেন। অফিসে টানা মাস্ক পরে দমবন্ধ হাঁসফাঁস অবস্থা হলে কানের পেছনে ফিতায় হাত দিয়ে সাবধানে মাস্ক খুলে একটা কাগজের প্যাকেটে রেখে দিতে পারেন। তারপর বিরতি নিয়ে পরে আবার আরেকটি নতুন মাস্ক পরে নিন। কিন্তু কাজের ফাঁকে শ্বাস নেওয়ার জন্য মাস্ক খুলে গলায় বা নিচে ঝুলিয়ে রেখে আবার পরা যাবে না। এতে মাস্কের বাইরে লেগে থাকা জীবাণু আপনার মুখমণ্ডলে লেগে যাবেই। তাই দরকার হলে বাইরে যাওয়ার সময় একাধিক মাস্ক সঙ্গে নিন।

যখন মাস্ক খুলবেন তখন লক্ষ রাখবেন যেন আপনার আশপাশে নিকট দূরত্বে অন্য কেউ না থাকে।