করোনায় শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম

ফুসফুসের কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে ব্রিদিং বা শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে করোনা মহামারির এই সময় শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়ামের কোনো বিকল্প নেই।
শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম দিনে ৩-৪ বার ৫ থেকে ১০ মিনিট করে করতে পারলে ভালো। তবে শুরুর দিকে ২ থেকে ৩ মিনিট করে করতে পারেন এবং আস্তে আস্তে তা বাড়াবেন। ব্যায়ামের আগে অবশ্যই ঘাড়, কাঁধ ও শ্বসনতন্ত্রের মাংসপেশিকে স্ট্রেচিং এবং সংশ্লিষ্ট অস্থিসন্ধিগুলো নড়াচড়া করে নিতে হবে। বিভিন্ন ধরনের শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম রয়েছে।

বেলিব্রিদিং এক্সারসাইজ
বিছানায় সোজা হয়ে শুয়ে দুই হাঁটু ভাঁজ করে নিন। প্রয়োজনে মাথা ও হাঁটুর নিচে বালিশ রাখবেন। এবার এক হাত পেটের ওপর এবং অপর হাত বুকের ওপর রাখুন। নাক দিয়ে এমনভাবে শ্বাস নিন যেন পেট ফুলে ওঠে, ৫ সেকেন্ড ধরে রাখুন এবং মুখ দিয়ে শিস দেওয়ার মতো করে জোরে বাতাস ছেড়ে দিন।

পার্সড লিপ ব্রিদিং এক্সারসাইজ
যাঁদের শ্বাসকষ্ট বা অ্যাজমা আছে, তাঁদের জন্য এটি বেশ উপকারী ব্যায়াম। এটি অর্ধশায়িত বা উপুড় হয়ে করলে ভালো; কারণ, এর ফলে অধিক পরিমাণে অক্সিজেন ফুসফুসে প্রবেশ করে, শ্বাসকষ্ট কমে এবং ফুসফুসের ভেতর জমে থাকা কফ পাতলা হয়। এটি করার জন্য নাক দিয়ে বাতাস নিন, কিছু সময় (৩-৫ সেকেন্ড) বাতাস ধরে রাখুন এবং মুখ দিয়ে শিস দেওয়ার মতো করে যতক্ষণ বাতাস নিয়েছেন, তার দ্বিগুণ সময় ধরে বাতাস ছাড়ুন। অর্থাৎ ২ সেকেন্ড ধরে শ্বাস নিলে ৪ সেকেন্ড সময় ধরে শ্বাস ছাড়ুন।

ইকোয়াল ব্রিদিং
এটি শুয়ে, বসে যেকোনো অবস্থায় করা যায়। নাক দিয়ে ৫ সেকেন্ড পর্যন্ত বাতাস নিন। কিছু সময় বাতাস ধরে রাখুন এবং নাক দিয়েই ৫ সেকেন্ড পর্যন্ত বাতাস ছাড়ুন।

ডিপ ব্রিদিং এক্সারসাইজ
দুই হাত বুকের ওপর আর কনুই পেছনের দিকে রেখে বুক প্রসারিত করুন। এবার নাক দিয়ে গভীর শ্বাস নিন, কিছুক্ষণ শ্বাস ধরে রাখুন এবং নাক দিয়ে জোরে শ্বাস ছাড়ুন।

অ্যাকটিভ সাইকেল অব ব্রিদিং টেকনিক
এটি আধশোয়া অবস্থায় করলে বেশি ভালো। নাক দিয়ে জোরে শ্বাস নিন, ৩ সেকেন্ড ধরে রাখুন, মুখ দিয়ে জোরে বাতাস ছাড়ুন। এভাবে তিনবার করুন। এবার ১০ সেকেন্ড স্বাভাবিক শ্বাস নিন। আবার ব্যায়ামটি করুন। তারপর জোরে কাশি দিন। কাশি দেওয়ার সময় কাশির শিষ্টাচার মেনে চলুন। এভাবে ২ থেকে ৩টি চক্র পূর্ণ করুন। ফুসফুসে জমে থাকা কফ বের করার জন্য এটি সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি।
মেহেরুন নেসা, ফিজিওথেরাপি ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ