ফলে ফলে আহারে

>এই সময়ের ফল তো বটেই, বাজার এখন ভরা দেশি–বিদেশি নানা ফলে। ফল দিয়েই হতে পারে নানা রকম রান্না। তারই কিছু নমুনা থাকছে এখানে। রেসিপি দিয়েছেন আফরোজা নাজনীন
লিচুর জেলি পুডিং
লিচুর জেলি পুডিং

লিচুর জেলি পুডিং

উপকরণ: লিচু ১৫টি, আগার আগার পাউডার ১ চা-চামচ, চিনি সিকি কাপ, পানি ১ কাপ ও লিচু সাজানোর জন্য পরিমাণমতো।

প্রণালি: প্রথমেই ৩ টেবিল চামচ পানি দিয়ে আগার আগার পাউডার গুলে নিন। বিচি ছাড়িয়ে নিয়ে লিচু ব্লেন্ডারে দিয়ে দিন। চিনি ও পানি দিয়ে লিচু ব্লেন্ড করে নিন।এরপর মিশ্রণটি ছেঁকে নিয়ে চুলায় মাঝারি আঁচে বসিয়ে দিন। গুলে রাখা আগার আগার পাউডার দিয়ে দিন। বলক এলে এই মিশ্রণ নামিয়ে একটি মোল্ডে ঢেলে নিন। কিছু লিচু দিয়ে সাজিয়ে দিন। তারপর ফ্রিজে তিন ঘণ্টার জন্য জমতে দিন। জমে গেলে ঠান্ডা পরিবেশন করুন।

আম-জামের ড্যানিশ
আম-জামের ড্যানিশ

আম-জামের ড্যানিশ

উপকরণ: পাফ তৈরি করার জন্য: ময়দা ৭০০ গ্রাম, মাখন ১০০ গ্রাম, লবণ ২ চা-চামচ, পানি ৫০০ মিলিলিটার, মার্জারিন ৪৫০ গ্রাম।

জামের জ্যাম বানানোর জন্য: জাম ১৫০ গ্রাম, চিনি ১ কাপ, চেরি ও আম এক কাপ, গুঁড়া চিনি সাজানোর জন্য ও ডিম ১টি।

প্রণালি: পাফ তৈরি করার জন্য ময়দায় মাখন, লবণ এবং পানি দিয়ে চার থেকে পাঁচ মিনিট ধরে মেখে নিতে হবে। মেখে রাখা খামিটা ক্লিন রাপ করে ফ্রিজে রেখে দিতে হবে ১৫-২০ মিনিট। ২০ মিনিট পর ডো বের করে নিতে হবে। ডো লম্বা করে চৌকো আকারে বেলতে হবে। এইবার মাঝখানে মার্জারিন দিয়ে দুই পাশ থেকে ফোল্ড করুন। ফোল্ডটা দেখতে অনেকটা বইয়ের মতো হবে। তারপরে আবার বেলে নিতে হবে। এইভাবে পদ্ধতিটি পাঁচ থেকে ছয়বার করতে হবে। তারপরে পরিষ্কার ফিল্ম দিয়ে মুড়ে ফ্রিজারে রেখে দিতে হবে। পাফ পেস্ট্রি শিট তৈরি করে ক্লিন ফিল্ম মুড়িয়ে তিন মাস পর্যন্ত ডিপ ফ্রিজে রেখে দেওয়া যায়।

জামের জ্যাম তৈরি করার জন্য জামগুলো ছোট ছোট করে কেটে নিতে হবে। চুলায় প্যান বসিয়ে তার মধ্যে জাম দিয়ে দিন। এরপর এর মধ্যে চিনি দিতে হবে। যখন চিনি গলে জামের সঙ্গে ভালোভাবে মিশে যাবে, তখন নামিয়ে নিতে হবে।

পাফ পেস্ট্রি শিটগুলো ছোট ছোট চৌকো করে কেটে নিতে হবে। পাফ পেস্ট্রি শিটগুলোর চারপাশ কেটে নিতে হবে। ফোল্ড করে পিনহুইলের আকার দিতে হবে। মধ্যে জামের জ্যাম এবং তার ওপর চেরি বসিয়ে দিতে হবে। তৈরি করে রাখার ড্যানিশগুলোর ওপর ডিম ব্রাশ করে ২০০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় প্রি-হিট ওভেনে ১৫-২০ মিনিট বেক করতে হবে। বেক হলে তাজা আম দিয়ে পছন্দমতো সাজিয়ে পরিবেশন করুন।

কমলা–মুরগির কাবাব
কমলা–মুরগির কাবাব

কমলা–মুরগির কাবাব

উপকরণ: মুরগির বুক ১ টুকরা, টক দই ২ টেবিল চামচ, তেল ১ টেবিল চামচ, লেবুর রস ১ টেবিল চামচ, মাল্টার রস ১ টেবিল চামচ, টমেটো কেচাপ ১ টেবিল চামচ, বাদামি চিনি ১ চা-চামচ, গোলমরিচের গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, দারুচিনিগুঁড়া আধা চা-চামচ, শুকনা মরিচগুঁড়া ১ চা-চামচ, পাপরিকা আধা চা-চামচ, তেল পরিমাণমতো ও লবণ স্বাদমতো।

প্রণালি: প্রথমে একটি পাত্রে মুরগির মাংসের সঙ্গে টক দই, লেবুর রস, গোলমরিচের গুঁড়া, আদাবাটা, রসুনবাটা, লবণ, শুকনা মরিচগুঁড়া, পাপরিকাসহ সব উপকরণ দিয়ে মেরিনেট করে নিন ৩০ মিনিট। এবার মেরিনেট করা মাংস গরম তেলে শ্যালো ফ্রাই করে নিন। ভাজা হয়ে এলে গরম–গরম পরিবেশন করুন মজাদার কাবাব।

ম্যাঙ্গো স্টিকি রাইস
ম্যাঙ্গো স্টিকি রাইস

ম্যাঙ্গো স্টিকি রাইস

উপকরণ: গ্লুটিনাস রাইস বা বিন্নি চাল ১ কাপ, নারকেলের দুধ ১ কাপ, লবণ অল্প, চিনি ১ টেবিল-চামচ, তিল ১ চা-চামচ ও পাকা আমের টুকরা ইচ্ছামতো।

নারকেলের সসের জন্য: নারকেলের দুধ আধা কাপ, লবণ সিকি কাপ চা-চামচ, চিনি ১ চা-চামচ।

পদ্ধতি: চাল ভালোভাবে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। এরপর এক থেকে দুই ঘণ্টা বা সারা রাত পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এরপর চাল একটি ছাঁকনিতে দিয়ে ভালোমতো পানি ঝরিয়ে নিন। স্টিমার দিয়ে চাল ভাপে ২০-৩০ মিনিট সেদ্ধ করে নিন। স্টিমার না থাকলে এক কাপ চালে এক কাপের থেকে একটু বেশি পানি দিয়ে ভাতটা রান্না করে নিতে পারেন। নারকেলের সসের জন্য প্রথমেই একটি সসপ্যানে নারকেলের দুধ, চিনি ও অল্প লবণ দিয়ে জ্বাল দিয়ে অনবরত নেড়ে ঘন হলে নামিয়ে ঠান্ডা করে নিন। এবার একটি বাটিতে গরম ভাত ও গরম নারকেলের দুধের মিশ্রণ নিয়ে ভালোমতো মিশিয়ে নিন। কিছুক্ষণ পর পরিবেশনের পাত্রে ভাতের ওপর তিল ও নারকেলের সস ছড়িয়ে পছন্দমতো আমের টুকরা দিয়ে পরিবেশন করুন।

ফলের সালাদ ১
ফলের সালাদ ১

ফলের সালাদ ১

উপকরণ: আপেল কিউব করে কাটা ১ কাপ, আনারস, তরমুজ ও আম প্রতিটি কিউব করে কাটা ১ কাপ করে, পেঁয়াজকুচি ১ চা-চামচ, লেবুর রস ২ টেবিল চামচ, লবণ পরিমাণমতো, চাট মসলা আধা চা-চামচ, চিনি এক চিমটি, বিট লবণ সামান্য, কাঁচা মরিচকুচি ১ চা-চামচ, পুদিনাপাতাকুচি ১ চা-চামচ।

প্রণালি: ফল কেটে লেবুর রস মিশিয়ে ১০ মিনিট রাখুন। বাকি সব উপকরণ মিশিয়ে নিন ভালো করে। এবার ভালো করে ফলগুলোতে মেখে নিন। এটি ফ্রিজে রাখুন ১০ মিনিট। ঠান্ডা পরিবেশন করুন।

ফলের সালাদ ২
ফলের সালাদ ২

ফলের সালাদ ২

উপকরণ: আপেল, আনারস, পেঁপে কিউব ১ কাপ, শসা, টমেটো কিউব করে কাটা ১ কাপ, তরমুজ কিউব করে কাটা ১ কাপ, সবুজ ও লাল আঙুর, চেরি ১ কাপ, কালো ও সবুজ জলপাই অল্প কিছু, লেবুর রস ১ চা-চামচের তিন ভাগের দুই ভাগ অংশ, লবণ পরিমাণমতো, চাট মসলা আধা চা-চামচ, চিনি এক চিমটি, বিট লবণ সামান্য, মেয়নিজ ১ টেবিল চামচ এবং কাঁচামরিচকুচি ১ চা-চামচ।

প্রণালি: ফল কেটে লেবুর রস মিশিয়ে ১০ মিনিট রাখুন। বাকি সব উপকরণ মিশিয়ে নিন ভালো করে। এবার ভালো করে ফলগুলোতে এটি মেখে নিন। ফ্রিজে রাখুন ১০ মিনিট। তারপর ঠান্ডা পরিবেশন করুন।

আম প্যানা কোটা
আম প্যানা কোটা

আম প্যানা কোটা

উপকরণ: প্রথম স্তরের জন্য জেলোটিন এক চা-চামচ, গরম পানি দুই টেবিল চামচ ও আমের পিউরি দুই কাপ।
দ্বিতীয় স্তরের জন্য জেলোটিন এক চা-চামচ, ক্রিম এক কাপ, ভ্যানিলা অ্যাসেন্স এক চা-চামচ, চিনি আধা কাপ, লবণ এক চিমটি।

প্রণালি: জেলোটিন গরম পানি দিয়ে গুলে নিয়ে এর সঙ্গে আমের পিউরি মিশিয়ে নিন। ভালোভাবে পরিবেশনের গ্লাসে একটু বাঁকাভাবে রেখে তার মধ্যে ভরে জমতে দিতে হবে ফ্রিজে। দুই-চার ঘণ্টা পর প্রথম স্তরের জমে গেলে এর মধ্যে দ্বিতীয় স্তর দিতে হবে।

দ্বিতীয় স্তরের দুধের সঙ্গে জেলোটিন ভালোভাবে মিশিয়ে ক্রিম দিয়ে নেড়ে চুলায় জ্বাল দিতে হবে। এরপর ভ্যানিলা অ্যাসেন্স, চিনি, লবণ দিয়ে নেড়ে চুলা থেকে নামিয়ে নিন। ১০ মিনিট ঠান্ডা করে ওই গ্লাসের জমানো আমের পাশে ঢেলে দিতে হবে। তারপর আবার দুই-চার ঘণ্টার জন্য ফ্রিজে জমতে দিন। পরিবেশনের আগে ওপরে আম ও পুদিনাপাতা দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।

মুচমুচে আপেল ভাজা
মুচমুচে আপেল ভাজা

মুচমুচে আপেল ভাজা

উপকরণ: আপেল গোল করে কাটা ২টি, ময়দা ১ কাপ, ডিম ১টি, দারুচিনিগুঁড়া সিকি চা-চামচ, চিনি ১ টেবিল চামচ, লবণ স্বাদমতো ও তেল পরিমাণমতো।

প্রণালি: ডিম, ময়দা, লবণ, দারুচিনিগুঁড়া, চিনি ও একটু পানি দিয়ে ঘন গোলা বানিয়ে নিন। এর মধ্যে আপেলগুলো ডুবিয়ে গরম তেলে মুচমুচে করে ভেজে নিয়ে পরিবেশন করুন।